নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বাংলাদেশী একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছে।
বাংলাদেশের ঢাকা থেকে ৭১ জন আরোহী নিয়ে বিমানটি রানওয়েতে অবতরণ করার পরপরই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তখন বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। তাদের মধ্যে যাত্রী ৬৭ জন এবং চারজন ছিলেন ক্র সদস্য।
বলা হচ্ছে, আরোহীদের মধ্যে ৩৩ জন নেপালি এবং ৩২ জন বাংলাদেশী। একজন চীনের এবং আরেকজন মালদ্বীপের নাগরিক।
নেপালের পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, ৩১ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। আরো ৯ জন পরে হাসাপাতালে মারা গেছেন। তবে নিহতদের কতোজন কোন দেশের সেটা এখনও জানা যায়নি।
এখনও আটজন নিখোঁজ রয়েছে। বাকিদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর।
বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের একজন নেপালের একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, বিধ্বস্ত বিমানটির জানালা দিয়ে তিনি বের হয়ে আসেন। এবং তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন।
তিনি বলেছেন, বিমানের ভেতরে তিনি প্রথমে প্রচণ্ড জোরে একটা ধাক্কা অনুভব করেন এবং পরে খুব জোরে বিস্ফোরণের একটি শব্দ শুনতে পান।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায় নি।
দুর্ঘটনার সাথে সাথে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবংউদ্ধারকর্মীরা সেখান থেকে মৃতদেহ বের করে আনেন।
নেপালি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্ম অলি এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে এর তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের এই বিমানটির বয়স ১৭ বছর।
কিভাবে ঘটে এই দুর্ঘটনা:
বিমান চলাচলের একটি ওয়েবসাইট থেকে দেখা যায় বিমানটি স্থানীয় সময় ১৪:২০ এ অবতরণ করে।
নেপালে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক সঞ্জীব গৌতম বলেছেন, বিমানটিকে দক্ষিণ দিক থেকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু এটি নামে বিমানবন্দরের উত্তর দিক থেকে।
তবে তিনি বলেন, “বিমানটির অস্বাভাবিক এই অবতরণের কারণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলতে পারছি না।”
বেঁচে যাওয়া একজন যাত্রী হাসপাতালে শুয়ে বলেছেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলো বিমানটি। কিন্তু কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় এটি অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে।
কাঠমান্ডু পোস্টকে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ বিমানটি প্রচণ্ড জোরে কাঁপতে থাকে এবং তারপর বিকট জোরে শব্দ হয়। আমি জানালার পাশেই বসেছিলাম। এবং জানালা ভেঙে বাইরে বের হয়ে আসতে সক্ষম হই।”
বাংলাদেশের কোনো উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৪ সালে। ওই বছর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ বিমানের একটি ফকার এফ-২৭ বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হলে ৪৯ জন নিহত হন।
সূত্র, বিবিসি