Menu |||

স্কুলশিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে রাজধানীতে সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ,

অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ  কেউ কেউ নিজের প্রিয় স্কুলশিক্ষক কিংবা শিক্ষক মা-বাবার কথা স্মরণ করে ঝরিয়েছেন অশ্রু।

মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সংস্কৃতি কর্মীবৃন্দ’ ওই সমাবেশের আয়োজন করে।

শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত সংসদ সদস্য সেলিম ও তার সহযোগীদের বিচার চেয়ে তাদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘শুধু একজন শিক্ষক নয়, যেন কান ধরে উঠ-বস করছে বাংলাদেশ!”

সমাবেশে মানবাধিকার কর্মী থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় তিনশ মানুষ যোগ দেন।

শুক্রবার ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে’ আঘাত দেওয়ার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য করেন।

সমাবেশের বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, “দেশে অনাচারের রাজত্ব চলছে। যেখানে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আমাদের যে আইন-কানুন, রীতি-নীতি ও নৈতিকতা আছে তার সবগুলোর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কিছু মানুষ তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। তারা এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র লজ্জিত কিংবা বিব্রতবোধ করছে না।”

এ ধরনের নেতা ও আইন প্রণেতাকে প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “একজন আইন প্রণেতা নারায়ণগঞ্জে যেটা করলেন সেটা আমাদের আইন অনুযায়ী অবৈধ কাজ। আমাদের উচ্চ আদালত এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।”

‘জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য’ ওই শিক্ষককে কান ধরানো হয়েছে বলে সাংসদ সেলিম ওসমানের যে বক্তব্য দিয়েছে সে প্রসঙ্গ তুলে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, “যদি নেতার এমনই ব্যক্তিত্ব হয়, জনগণকে কথা বলে অন্যায় থেকে বিরত রাখতে পারেন না, আরেকটি অন্যায় তিনি করেন, তাহলে সেই নেতার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি।

“এবং কথাও বলতেও আমি দ্বিধাবোধ করি না, এরা ওই ধরনের আচরণকে সমর্থন করে। আমি মোটেও আশ্চর্য হব না, যদি দেখা যায় ওই ঘটনার পেছনে এই ভদ্রলোকেরও হাত ও উসকানি ছিল।”

আইনমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বক্তব্য অনুযায়ী ওই ঘটনায় দায়ী সকলের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা যা বলেছেন, সত্য বলেছেন। অন্যান্য অনেক ঘটনার মতো এটাকে পাশ কাটিয়ে দেবেন না। যদি পাশ কাটিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয় আমরা তা হতে দেব না।”

নিজেরা করি’র নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির সমাবেশে বলেন, “এ কোন দেশের নাগরিক আমরা, আমাদের সন্তানদের যারা শিক্ষা দিচ্ছে এবং আমরা যাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি… সে রকম ব্যক্তিকে গুজব শুনে, কোনো ধরনের যাচাই বাছাই না করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “একজন সংসদ সদস্য জনগণের প্রতিনিধি। আমরা এই ধরনের ব্যক্তিকে জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে দেখতে চাই না। মানি না, তাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”

“ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে উসকিয়ে দেওয়ার মতো করে একজন শিক্ষককে এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি করা ব্যক্তিকে আমরা আমাদের প্রতিনিধি হিসাবে চাই না। এদের শাস্তি চাই।”

সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে অশ্রু ঝরে শিক্ষক পিতার সন্তান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার। এ সময় অনেককে চোখ মুছতে দেখা যায়।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “আমার বাবা স্কুল শিক্ষক ছিলেন। যখন শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠ-বস করানো হচ্ছে তখন মনে হয়েছে আমার বাবাকে উঠ-বস করানো হচ্ছে কি-না।”

“১৮ বছর ধরে তিনি ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তার মানে এটা দাঁড়ায় তিনি ১৮ জন শিক্ষার্থীকেও মানুষ করতে পারেননি। যদি ঘটনার দিন তার একজন ছাত্রও যদি উঠে তার জন্য কিছু বলতো তাহলে বুঝতাম তাহলে তিনি মানুষ করতে পেরেছেন। আমার বাবার ক্ষেত্রেও হয়তো তাই। তিনি বোধোহয় ৩৭ বছরে এই রকম একজনকেও মানুষ করতে পারেননি।”

একজন জনপ্রতিনিধি কোন আইনে কীসের শক্তিতে একজন স্কুল শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করাচ্ছেন, এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এই অবৈধ শক্তি তাকে রাষ্ট্র দিয়েছে, সরকার দিয়েছে।”

“প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, এই পরিবারের দায়িত্ব তিনি নিচ্ছেন, তার মানে ১৬ কোটি মানুষের আর কারও দায়িত্ব নিচ্ছেন না। আর সেই পরিবার নারায়ণগঞ্জে যা ইচ্ছা তা করছে।”

সারাদেশে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় বিচার না হওয়ায় রাষ্ট্রীয় অসভ্যতা হিসেবে অভিহিত করেন এই আইনজীবী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, “সমাজে এতো অন্যায়, অবিচার ও বিচারহীনতার মধ্যে শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করানোর মতো ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমসহ সকল জায়গায় প্রতিবাদ হচ্ছে।”

“এর পেছনে একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় আছে। আমরা সবাই ওই শিক্ষককে আমাদের নিজেদের মধ্যে দেখতে পেয়েছি। আমরা কোনো অন্যায়, দোষ না করলেও আমাদের অপমান করা হচ্ছে, দোষ দেওয়া হচ্ছে।”

“কেমন একটা ব্যাপার, একজন শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করানো হচ্ছে, অপমান করা হচ্ছে, সামনে অনেকে হাততালি দিচ্ছে। আমি কিছু বলতে পারছি না। আমরা বুঝতে পেরেছি, স্বাধীন দেশে আমরা কীভাবে অপমানিত হচ্ছি। আমাদের মনে হয়েছে, যেন আমি নিজেই কান ধরে উঠ-বস করছি।”

সমাবেশ থেকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও সহযোগীদের শাস্তি, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধসহ পাঁচটি দাবি জানানো হয়।

একই সঙ্গে আগামী শনিবার বিকেলে শাহবাগে সেলিম ওসমানের কুশপুত্তলিকা দাহ এবং সংহতি সমাবেশের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

এ সময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, উদীচীর সাংগঠনিক সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা ফিরোজ আহমেদ, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম সবুজ, শিল্পী কফিল আহমেদ, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লাকী আক্তার বক্তব্য দেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

স্কুলশিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে রাজধানীতে সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ,

অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ  কেউ কেউ নিজের প্রিয় স্কুলশিক্ষক কিংবা শিক্ষক মা-বাবার কথা স্মরণ করে ঝরিয়েছেন অশ্রু।

মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সংস্কৃতি কর্মীবৃন্দ’ ওই সমাবেশের আয়োজন করে।

শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত সংসদ সদস্য সেলিম ও তার সহযোগীদের বিচার চেয়ে তাদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘শুধু একজন শিক্ষক নয়, যেন কান ধরে উঠ-বস করছে বাংলাদেশ!”

সমাবেশে মানবাধিকার কর্মী থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় তিনশ মানুষ যোগ দেন।

শুক্রবার ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে’ আঘাত দেওয়ার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য করেন।

সমাবেশের বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, “দেশে অনাচারের রাজত্ব চলছে। যেখানে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আমাদের যে আইন-কানুন, রীতি-নীতি ও নৈতিকতা আছে তার সবগুলোর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কিছু মানুষ তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। তারা এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র লজ্জিত কিংবা বিব্রতবোধ করছে না।”

এ ধরনের নেতা ও আইন প্রণেতাকে প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “একজন আইন প্রণেতা নারায়ণগঞ্জে যেটা করলেন সেটা আমাদের আইন অনুযায়ী অবৈধ কাজ। আমাদের উচ্চ আদালত এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।”

‘জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য’ ওই শিক্ষককে কান ধরানো হয়েছে বলে সাংসদ সেলিম ওসমানের যে বক্তব্য দিয়েছে সে প্রসঙ্গ তুলে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, “যদি নেতার এমনই ব্যক্তিত্ব হয়, জনগণকে কথা বলে অন্যায় থেকে বিরত রাখতে পারেন না, আরেকটি অন্যায় তিনি করেন, তাহলে সেই নেতার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি।

“এবং কথাও বলতেও আমি দ্বিধাবোধ করি না, এরা ওই ধরনের আচরণকে সমর্থন করে। আমি মোটেও আশ্চর্য হব না, যদি দেখা যায় ওই ঘটনার পেছনে এই ভদ্রলোকেরও হাত ও উসকানি ছিল।”

আইনমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বক্তব্য অনুযায়ী ওই ঘটনায় দায়ী সকলের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা যা বলেছেন, সত্য বলেছেন। অন্যান্য অনেক ঘটনার মতো এটাকে পাশ কাটিয়ে দেবেন না। যদি পাশ কাটিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয় আমরা তা হতে দেব না।”

নিজেরা করি’র নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির সমাবেশে বলেন, “এ কোন দেশের নাগরিক আমরা, আমাদের সন্তানদের যারা শিক্ষা দিচ্ছে এবং আমরা যাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি… সে রকম ব্যক্তিকে গুজব শুনে, কোনো ধরনের যাচাই বাছাই না করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “একজন সংসদ সদস্য জনগণের প্রতিনিধি। আমরা এই ধরনের ব্যক্তিকে জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে দেখতে চাই না। মানি না, তাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”

“ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে উসকিয়ে দেওয়ার মতো করে একজন শিক্ষককে এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি করা ব্যক্তিকে আমরা আমাদের প্রতিনিধি হিসাবে চাই না। এদের শাস্তি চাই।”

সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে অশ্রু ঝরে শিক্ষক পিতার সন্তান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার। এ সময় অনেককে চোখ মুছতে দেখা যায়।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “আমার বাবা স্কুল শিক্ষক ছিলেন। যখন শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠ-বস করানো হচ্ছে তখন মনে হয়েছে আমার বাবাকে উঠ-বস করানো হচ্ছে কি-না।”

“১৮ বছর ধরে তিনি ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তার মানে এটা দাঁড়ায় তিনি ১৮ জন শিক্ষার্থীকেও মানুষ করতে পারেননি। যদি ঘটনার দিন তার একজন ছাত্রও যদি উঠে তার জন্য কিছু বলতো তাহলে বুঝতাম তাহলে তিনি মানুষ করতে পেরেছেন। আমার বাবার ক্ষেত্রেও হয়তো তাই। তিনি বোধোহয় ৩৭ বছরে এই রকম একজনকেও মানুষ করতে পারেননি।”

একজন জনপ্রতিনিধি কোন আইনে কীসের শক্তিতে একজন স্কুল শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করাচ্ছেন, এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এই অবৈধ শক্তি তাকে রাষ্ট্র দিয়েছে, সরকার দিয়েছে।”

“প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, এই পরিবারের দায়িত্ব তিনি নিচ্ছেন, তার মানে ১৬ কোটি মানুষের আর কারও দায়িত্ব নিচ্ছেন না। আর সেই পরিবার নারায়ণগঞ্জে যা ইচ্ছা তা করছে।”

সারাদেশে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় বিচার না হওয়ায় রাষ্ট্রীয় অসভ্যতা হিসেবে অভিহিত করেন এই আইনজীবী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, “সমাজে এতো অন্যায়, অবিচার ও বিচারহীনতার মধ্যে শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করানোর মতো ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমসহ সকল জায়গায় প্রতিবাদ হচ্ছে।”

“এর পেছনে একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় আছে। আমরা সবাই ওই শিক্ষককে আমাদের নিজেদের মধ্যে দেখতে পেয়েছি। আমরা কোনো অন্যায়, দোষ না করলেও আমাদের অপমান করা হচ্ছে, দোষ দেওয়া হচ্ছে।”

“কেমন একটা ব্যাপার, একজন শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করানো হচ্ছে, অপমান করা হচ্ছে, সামনে অনেকে হাততালি দিচ্ছে। আমি কিছু বলতে পারছি না। আমরা বুঝতে পেরেছি, স্বাধীন দেশে আমরা কীভাবে অপমানিত হচ্ছি। আমাদের মনে হয়েছে, যেন আমি নিজেই কান ধরে উঠ-বস করছি।”

সমাবেশ থেকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও সহযোগীদের শাস্তি, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধসহ পাঁচটি দাবি জানানো হয়।

একই সঙ্গে আগামী শনিবার বিকেলে শাহবাগে সেলিম ওসমানের কুশপুত্তলিকা দাহ এবং সংহতি সমাবেশের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

এ সময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, উদীচীর সাংগঠনিক সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা ফিরোজ আহমেদ, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম সবুজ, শিল্পী কফিল আহমেদ, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লাকী আক্তার বক্তব্য দেন।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।