তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাসোগজির মৃতদেহের সন্ধান পাওয়াটা এখন তদন্তের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে।
তুরস্কের সংবাদ মাধ্যম বলছে, সৌদি কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত কনস্যুলেটের ভেতরে একটি কুয়ায় তল্লাশি চালানোর অনুমতি দেননি তদন্তকারীদের ।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জামাল খাসোগজির মৃতদেহের খন্ডিত অংশ পাওয়া গেছে বলে খবর বেরুচ্ছে। তুরস্কের বিরোধীদলের একজন নেতাকে উদ্ধৃত করে কিছু সংবাদপত্র সৌদি কনসাল জেনারেলের বাড়ির বাগানে এবং কুয়াতে মৃতদেহ পাবার কথা বলছে।
কিন্তু তুরস্কের পুলিশ সূত্রগুলো এসব খবর সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানিয়েছেন ইস্তাম্বুল থেকে সাংবাদিক সরওয়ার আলম। পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, তারা এখনো মৃতদেহের সন্ধান করছে। এর আগে পুলিশ মৃতদেহের খোঁজে সৌদি কনস্যুলেটের নিকটবর্তী একটি বনভূমিতে অনুসন্ধান চালায়। সৌদি আরব বলেছে, মি. খাসোগজির মৃতদেহ কোথায় তা তারা জানে না।
ইতিমধ্যে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর প্রধান জিনা হ্যাসপেল তুরস্কে সফরে গিয়েছেন, এবং সেদেশের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ তাকে এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং দেখিয়েছেন বলে তুরস্কের দুটি সংবাদপত্র রিপোর্ট করেছে।
দৈনিক সাবাহ সংবাদপত্র বলছে, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তার সাথে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর থেকে করা রেকর্ডিং শেয়ার করেছেন – যাতে ওই হত্যাকান্ডের বীভৎস খুঁটিনাটি আছে।
একজন সৌদি কর্মকর্তা নাম উল্লেখ না করে বার্তা সংস্থা রয়টারকে বলেছেন, ধস্তাধস্তির সময় মি. খাসোগজির গলা পেঁচিয়ে ধরায় তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান, তারপর তার মৃতদেহ একটি কার্পেটে জড়িয়ে ফেলে দেবার জন্য একজন স্থানীয় সহযোগীর হাতে তুলে দেয়া হয়।
গত ২রা অক্টোবর মি. খাসোগজি তার বিবাহবিচ্ছেদের দলিলপত্র সংগ্রহ করতে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর আর বের হন নি। সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সূত্র উদ্ধৃত করে বলা হয়, সৌদি আরব থেকে আসা ১৫ জনের একটি দল তাকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করে এবং তার লাশ টুকরো টুকরো করে।
সৌদি আরব বলছে, কিছু এজেন্ট তাদের ক্ষমতার সীমার বাইরে গিয়ে এ কাজ করেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আজ পর পর দ্বিতীয় দিনের মত বলেছেন, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকান্ডকে তিনি কোনোভাবেই ধামাচাপা পড়তে দেবেন না।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান অভিযোগ করেন, এটি ছিল একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকান্ড যা ঘটিয়েছে সৌদি গোয়েন্দা এবং অন্য কর্মকর্তারা।
তিনি বলেন, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের মধ্যে এই হত্যাকান্ডে যাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভূমিকা ছিল, যাদের নির্দেশে এই হত্যাকান্ড হয়েছে – তাদের শাস্তি পেতে হবে।
ওদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, মি খাসোগজির হত্যাকান্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য চেষ্টা।
সূত্র, বিবিসি