বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক সিম/রিম যথাযথভাবে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য সরকারের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি ডাটাবেসের সঙ্গে সিম রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র মিলিয়ে দেখলেই কেবল মাত্র ভুল রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি চিহ্নিত করা যাবে তা অনেকদিন ধরেই দেশের মোবাইল অপারেটররা বলে আসছিলেন।
এটা বিবেচনায় রাখা জরুরি যে এখন পর্যন্ত অপারেটরদের কাছে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাটাবেইজের সাথে যাচাই করার সু্যোগ ছিল না, যার মাধ্যমে তারা রেজিস্ট্রেশন ফর্মে দেওয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করে দেখতে পারেন। এর আগে ২০০৮ সালে সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তথ্য যাচাইয়ের কোন সুযোগ না থাকায় সেই উদ্যোগ গুলো সফল হয়নি।
এবছরের জুলাইয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তারানা হালিম যথাযথভাবে সিম রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে আসছেন। সরকারের স্বতঃস্ফুর্ত উদ্দোগের ফলে প্রকাশ এবং উদ্যোগের ফলে অবশেষে গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে অপারেটরদের সিম রেজিস্ট্রেশন তথ্যের সঙ্গে এনআইডি ডাটাবেসের তথ্য মিলিয়ে দেখে বৈধভাবে নিবন্ধিত সিম কার্ড যাচাইয়ের জন্য অপারেটর সরকার সমন্নিত ভাবে কাজ করছে ।
এই পদক্ষেপগুলো নির্ধারণের সময় মূল লক্ষ্য ছিল এমন একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে এবার সিম রেজিস্ট্রেশন যাচাই করা যাতে গ্রাহক ঘরে বসে তার মোবাইল সেট ব্যবহার করেই জানতে পারেন যে তার নিবন্ধন ঠিক আছে কিনা তা প্রাথমিকভাবে জেনে নেওয়ার সুযোগ থাকবে। জাতীয় স্বার্থে সকল সিম যথাযথভাবে নিবন্ধিত হয়ে মোবাইল ব্যবহারকারীদের একটি পুর্ণাঙ্গ এবং নির্ভরযোগ্য ডাটাবেস গড়ে তোলার জন্য মোবাইল অপারেটররা সমন্নিতভাবে সরকারের সাথে কাজ করে আসছে। তাই গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে সকল সিম যথাযথ নিবন্ধনের আওতায় আনতে শতভাগ নির্ভরযোগ্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে সিম পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ পাবেন গ্রাহকেরা। এই উদ্যোগের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে এমটবের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।
১৬ কোটি মানুষের এই দেশে প্রায় ১৩ কোটি সক্রিয় মোবাইল সংযোগ এবং ৫ কোটি ৭ লাখ ৭ হাজার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর দেশে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪১ হাজার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটররা সকলের কাছে তথ্য প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁরই নেতৃত্বে প্রথম সারিতে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক টেলিকম ইউনিয়ন (আইটিইউ)তথ্য প্রযুক্তির বিস্তারের মাধ্যমে জাতিসংঘের টেঁকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনের জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে তারই স্বীকৃতি দিয়েছে । আর প্রধানমন্ত্রী সেই পুরস্কার তরুণদের উৎসর্গ করে মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের তরুণেরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে কত ধরনের যুগান্তকারী কাজ করছেন এবং এই উদ্যোক্তারা উদাহরণ হয়ে উঠেছেন সারা বিশ্বের জন্যেই । তথ্য প্রযুক্তির এই বিস্তারকে নিরাপদ করা তাই অবশ্য প্রয়োজনীয়।
১৩ কোটি গ্রাহকের এই দেশে মোবাইলের সুষ্ঠ ব্যবহার নিশ্চিত করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সম্পুরক হিসাবে কাজ করে আসছে এই শিল্প। আগামীতেও একই ভাবে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।