খাইরুল ইসলাম, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার কাঠিপাড়া গ্রামে এক প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিভিন্ন দপ্তরে নামে বেনামে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। হয়রানির স্বীকার হয়ে এবার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারও এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করার পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে জানান মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
জানাগেছে, উত্তরকাঠিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ এস্কেন্দার আলী ফরাজী একই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুচ আলী ডাকুয়া এর সন্তানরা অজোপাড়া গাঁয়ে থেকে পড়াশোনা করে সরকারী কর্মকর্তা ও কোরিয়া প্রবাসী হওয়ায় তার গাত্রদাহ শুরু হয়। এজন্য তিনি ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি করতে স্থানীয় ভূমিদস্যু ও মাদকসেবীদের নিয়ে একটি চক্র তৈরী করেছেন। তাদের নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি করতে নামে বেনামে একের পর এক অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সরেজমিন তদন্ত করে কোন সত্যতা না পাওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ বলে প্রতিবেদন দেন তদন্তকারী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, আলমগীর হোসেন তালুকদার, ওয়াদুদ তালুকদার, আব্দুল বারেকসহ এলাকাবাসী সাথে কথা বলে জানাগেছে, এস্কেন্দার আলী মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরী নেন। নিজ এলাকার উত্তরকাঠিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তর হয়ে কয়েকবছর চাকুরী করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া রেজিলিউশন তৈরী করে শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দেন। এ জালিয়াতি ধরা না পড়ায় পর্যায়ক্রমে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান। বিদ্যালয়ে ভূয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। অসহায় গরীব শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা পাইয়ে দেবার কথা বলে অভিভাবকদের সাথে অনৈক সম্পর্কের প্রশ্নও তোলেন তারা।
তারা আরো জানান, মসজিদের সম্পত্তি ও অর্থ আত্মসাত, ভূমি দস্যুদের সাথে নিয়ে অন্যের জমি জবর দখল, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের প্রশ্রয় দিয়ে এলাকায় মাদকের বিস্তার ঘটানো, হত্যা-ডাকাতি ও লুটসহ বিভিন্ন ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আসামী হিসেবে এস্কেন্দার আলী বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আদালতে গিয়েও হাজিরা দেন। তার বংশ ফরাজী বা কার্যকলাপে ফরাজী না হলেও তিনি নিজের অপকর্ম ঢাকতে ফরাজী উপাধী ব্যবহার করছেন।
এব্যাপারে এস্কেন্দার আলী অভিযোগ প্রদানের সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইউনুচ আলী ডাকুয়ার বিরুদ্ধে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে কয়েকজনে অভিযোগ দাখিল করেন। এসময় আমার নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দিলে তারা আমার উপরক্ষিপ্ত হয়। এরপর আমি নিজেই একটি অভিযোগ করি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ আদৌ সত্য না।
উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুচ আলী ডাকুয়া সন্তান এস.বি. বাদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ঢাকায় কাস্টমস কর্মকর্তা পদে কর্মরত আছেন। তার আরো দু’ছেলের মধ্যে মাসুম বিল্লাহ বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে কোরিয়া চাকরী করছেন। অপরজন আবুল কালামও কোরিয়া প্রবাসী। কাস্টমস কর্মকর্তা এস.বি. বাদলের কাছে এস্কেন্দার আলীর ছোট মেয়ে বিবাহ দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্দ হন। এস্কেন্দার আলীর বড় ছেলে মিঠু সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় সন্ত্রাসীদের হাতেই নিহত হয়।
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই