চট্রগ্রাম প্রতিনিধিঃ পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতু আক্তার হত্যার ‘নির্দেশদাতা’ কামরুল ইসলাম ওরফে মুছাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কালু, রাশেদ, নবীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুছাকে আটকের পর গুম করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশের পর বাংলানিউজের কাছে এসব কথা বলেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (দক্ষিণ) মো.কামরুজ্জামান।
তিনি অগ্রদৃষ্টিকে বলেন, গত (বুধবার) রাতেও আমরা নগরী এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে মুছাসহ কিলারদের খোঁজে অভিযান চালিয়েছি। আমাদের তিনটি টিম তাদের গ্রেফতারে কাজ করছে। খুব শীঘ্রই মুছাসহ কিলারদের গ্রেফতার করতে পারব বলে আশা করছি।
এর আগে গ্রেফতার হওয়া ওয়াসিম ও আনোয়ার আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছে, পুলিশের বড় সোর্স মুছাই মাহমুদা খানম ওরফে মিতু আক্তার হত্যার নির্দেশদাতা। মুছাই মিতুকে খুনের জন্য তাদের ভাড়া করেছিল।
সোর্স মুছা পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে খুনের নির্দেশ কেন দিল, তা জানতে মুছাকে গ্রেফতার করা জরুরি মত এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
মুছাসহ পলাতক পাঁচ ‘খুনিকে’ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিমানবন্দরসহ দেশের সকল সীমান্তপথে নির্দেশনা পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, গ্রেফতার হওয়া আসামিদের গত শুক্রবার বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর কোন আসামিদের বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করা হয়েছিল, এর মধ্যে মুছা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ‘অস্ত্রদাতা’ এহতেশামুল হক ভোলা এবং ওয়াসিম ও আনোয়ারকে এ পর্যন্ত গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে তদন্তে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। আইজির নির্দেশে ঘটনা তদন্তে পাঁচটি সমন্বিত টিমও গঠন করা হয়।
রোববার ওয়াসিম ও আনোয়ারকে গ্রেফতারের বিষয়টি প্রকাশ করে তাদের আদালতে হাজির করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে এর আগে শুক্রবার রাতে বাবুল আক্তারকে রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
মামলার বাদিকে আসামির মতো তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে দেশজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল আক্তারকে ইঙ্গিত করে খবর প্রকাশ হয়েছে।