Menu |||

মিতু আক্তারের কপালে গুলি করেন মুছা

চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ মিতু হত্যার  ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ারের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি নিয়ে পুলিশের ভাষ্য ও মূল জবানবন্দির মধ্যে গরমিল রয়েছে। গরমিল রয়েছে দুই আসামির বক্তব্যের মধ্যেও। পুলিশ ও আদালত সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বলেছে ওয়াসিমের গুলিতে খুন হয়েছেন মিতু। কিন্তু জবানবন্দি থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে ওয়াসিমের দাবি, তিনি নন মিতু আক্তারের কপালে গুলি করেন পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত মুছা।

অন্যদিকে অপর আসামি আনোয়ার বলছেন, ওয়াসিমই মিতুকে গুলি করেন।

সূত্র জানায়, জবানবন্দি কালে এ নিয়ে দুই আসামি ভিন্ন ভিন্ন মত দেন। তবে তারা দুই জনই জানিয়েছেন মুছা তাদের ভাড়া করে এই কিলিং মিশনে আনেন। মুছা ছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিলেন নবী, কালু, শাহজাহান ও রাশেদ নামের আরও চার জন।

তবে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে হত্যার মোটিভ পরিস্কার করেননি ওয়াসিম ওরফে মোতালেব এবং আনোয়ার হোসেন নামে গ্রেফতার হওয়া দুজন।

রোববার (২৬ জুন) আদালতে তারা ওই জবানবন্দি দেন।  চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো.হারুন অর রশিদ ওয়াসিমের ১৪ পৃষ্ঠা এবং আনোয়ারের ১০ পৃষ্ঠার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে জবানবন্দি যখন চলছিলো তখন সিএমপি কমিশনার মো.ইকবাল বাহার রোববার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তারা (ওয়াসিম ও আনোয়ার) সক্রিয়ভাবে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছে বলেই স্বীকার করেছে। মোটরসাইকেল আরোহী তিনজনের মধ্যে একজন ওয়াসিম এবং সে-ই শু্যট (গুলি) করেছে। আনোয়ার ঘটনাস্থলে রেকি করার জন্য যে কয়েকজন দাঁড়িয়েছিল তাদের একজন।’

ওদিকে জবানবন্দির নথিমতে, ওয়াসিম জানান, মিতুকে হত্যার আগে ছেলে মাহির নবীর পা ধরে কান্না করতে থাকে, ‘আম্মুকে তোমরা মেরো না, আম্মুকে মেরো না’। মুছা ধাক্কা দিয়ে মাহিরকে সরিয়ে দেন। এসময় নবী পেছন থেকে মিতুকে প্রথম ছুরিকাঘাত করেন। মিতু ঘুরে একবার পড়ে গিয়ে আবার উঠে দাঁড়ান। এসময় নবী তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এসময় ওয়াসিম ফাঁকা গুলি করলে মুছা তার কাছ থেকে পিস্তল কেড়ে নিয়ে মিতু আক্তারের কপালে গুলি করেন।

ওয়াসিম জবানবন্দিতে আরও জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পর তিনি বাসায় গিয়ে টেলিভিশনের স্ক্রলে এসপি বাবুলের স্ত্রী খুনের বিষয়টি দেখতে পান। তখনই কেবল তিনি জানতে পারেন, তারা যাকে খুন করেছেন তিনিই এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী।
ওয়াসিম জানান, তখনই তিনি মুছাকে টেলিফোন করেন।

‘মুছা আমাকে বলে, খবরদার কাউকে বলবিনা। বললে একেবারে মার্ডার কেইসে ঢুকিয়ে দেব।  আমি ভয় পেয়ে যাই।  কারণ মুছা পুলিশের বড় সোর্স।’ জবানবন্দিতে এভাবেই বলেন ওয়াসিম।

অন্যদিকে জবানবন্দিতে আনোয়ার বলেন, ‘নবী মিতু আক্তারকে ছুরিকাঘাত করে। মুছা ফাঁকা গুলি করে আর ওয়াসিম তাকে গুলি করে।
গুলি চালানোর বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও উভয়েই তাদের জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, মুছাই তাদের মিতু আক্তারকে খুন করার জন্য ‍ভাড়া করে আনেন। মুছা কেন মিতুকে খুন করার নির্দেশ দেন সেটা তারা জানতেনও না।

দু’জনই জানান, ভোলা নামে একজন খুনের জন্য তাদের দুটি পিস্তল দেন।

গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ‍মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে তদন্তে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।  আইজির নির্দেশে ঘটনা তদন্তে পাঁচটি সমন্বিত টিমও গঠন করা হয়।

রোববার ওয়াসিম ও আনোয়ারকে গ্রেফতারের বিষয়টি প্রকাশ করে তাদের আদালতে হাজির করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।  তবে এর আগে শুক্রবার রাতে বাবুল আক্তারকে রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

মামলার বাদিকে আসামির মতো তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে দেশজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই দিনে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা বাবুল আক্তার নিজেই ছিলেন, এমন ইঙ্গিত কিংবা সন্দেহ প্রকাশ করে খবর প্রকাশ করেছে দেশের নানা সংবাদমাধ্যম।

ঘটনার মোটিভ কি তা জানতে, জবানবন্দিতে উল্লেখিত মুছাকে পেতে হবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

মিতু আক্তারের কপালে গুলি করেন মুছা

চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ মিতু হত্যার  ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ারের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি নিয়ে পুলিশের ভাষ্য ও মূল জবানবন্দির মধ্যে গরমিল রয়েছে। গরমিল রয়েছে দুই আসামির বক্তব্যের মধ্যেও। পুলিশ ও আদালত সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বলেছে ওয়াসিমের গুলিতে খুন হয়েছেন মিতু। কিন্তু জবানবন্দি থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে ওয়াসিমের দাবি, তিনি নন মিতু আক্তারের কপালে গুলি করেন পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত মুছা।

অন্যদিকে অপর আসামি আনোয়ার বলছেন, ওয়াসিমই মিতুকে গুলি করেন।

সূত্র জানায়, জবানবন্দি কালে এ নিয়ে দুই আসামি ভিন্ন ভিন্ন মত দেন। তবে তারা দুই জনই জানিয়েছেন মুছা তাদের ভাড়া করে এই কিলিং মিশনে আনেন। মুছা ছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিলেন নবী, কালু, শাহজাহান ও রাশেদ নামের আরও চার জন।

তবে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে হত্যার মোটিভ পরিস্কার করেননি ওয়াসিম ওরফে মোতালেব এবং আনোয়ার হোসেন নামে গ্রেফতার হওয়া দুজন।

রোববার (২৬ জুন) আদালতে তারা ওই জবানবন্দি দেন।  চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো.হারুন অর রশিদ ওয়াসিমের ১৪ পৃষ্ঠা এবং আনোয়ারের ১০ পৃষ্ঠার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে জবানবন্দি যখন চলছিলো তখন সিএমপি কমিশনার মো.ইকবাল বাহার রোববার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তারা (ওয়াসিম ও আনোয়ার) সক্রিয়ভাবে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছে বলেই স্বীকার করেছে। মোটরসাইকেল আরোহী তিনজনের মধ্যে একজন ওয়াসিম এবং সে-ই শু্যট (গুলি) করেছে। আনোয়ার ঘটনাস্থলে রেকি করার জন্য যে কয়েকজন দাঁড়িয়েছিল তাদের একজন।’

ওদিকে জবানবন্দির নথিমতে, ওয়াসিম জানান, মিতুকে হত্যার আগে ছেলে মাহির নবীর পা ধরে কান্না করতে থাকে, ‘আম্মুকে তোমরা মেরো না, আম্মুকে মেরো না’। মুছা ধাক্কা দিয়ে মাহিরকে সরিয়ে দেন। এসময় নবী পেছন থেকে মিতুকে প্রথম ছুরিকাঘাত করেন। মিতু ঘুরে একবার পড়ে গিয়ে আবার উঠে দাঁড়ান। এসময় নবী তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এসময় ওয়াসিম ফাঁকা গুলি করলে মুছা তার কাছ থেকে পিস্তল কেড়ে নিয়ে মিতু আক্তারের কপালে গুলি করেন।

ওয়াসিম জবানবন্দিতে আরও জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পর তিনি বাসায় গিয়ে টেলিভিশনের স্ক্রলে এসপি বাবুলের স্ত্রী খুনের বিষয়টি দেখতে পান। তখনই কেবল তিনি জানতে পারেন, তারা যাকে খুন করেছেন তিনিই এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী।
ওয়াসিম জানান, তখনই তিনি মুছাকে টেলিফোন করেন।

‘মুছা আমাকে বলে, খবরদার কাউকে বলবিনা। বললে একেবারে মার্ডার কেইসে ঢুকিয়ে দেব।  আমি ভয় পেয়ে যাই।  কারণ মুছা পুলিশের বড় সোর্স।’ জবানবন্দিতে এভাবেই বলেন ওয়াসিম।

অন্যদিকে জবানবন্দিতে আনোয়ার বলেন, ‘নবী মিতু আক্তারকে ছুরিকাঘাত করে। মুছা ফাঁকা গুলি করে আর ওয়াসিম তাকে গুলি করে।
গুলি চালানোর বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও উভয়েই তাদের জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, মুছাই তাদের মিতু আক্তারকে খুন করার জন্য ‍ভাড়া করে আনেন। মুছা কেন মিতুকে খুন করার নির্দেশ দেন সেটা তারা জানতেনও না।

দু’জনই জানান, ভোলা নামে একজন খুনের জন্য তাদের দুটি পিস্তল দেন।

গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ‍মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে তদন্তে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।  আইজির নির্দেশে ঘটনা তদন্তে পাঁচটি সমন্বিত টিমও গঠন করা হয়।

রোববার ওয়াসিম ও আনোয়ারকে গ্রেফতারের বিষয়টি প্রকাশ করে তাদের আদালতে হাজির করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।  তবে এর আগে শুক্রবার রাতে বাবুল আক্তারকে রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

মামলার বাদিকে আসামির মতো তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে দেশজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই দিনে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা বাবুল আক্তার নিজেই ছিলেন, এমন ইঙ্গিত কিংবা সন্দেহ প্রকাশ করে খবর প্রকাশ করেছে দেশের নানা সংবাদমাধ্যম।

ঘটনার মোটিভ কি তা জানতে, জবানবন্দিতে উল্লেখিত মুছাকে পেতে হবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।