ডেস্ক নিউজ : চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবং আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানির অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৫০ জন।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি কুলখানি উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার ১৪টি কমিউনিটি সেন্টারে ‘মেজবানের’ আয়োজন করা হয়। কেবল হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য এই আয়োজন ছিল নগরীর আসকার দিঘি এলাকার এস এস খালেদ রোডের রিমা কমিউনিটি সেন্টারে। কমিউনিটি সেন্টারের ঢালু গেট দিয়ে হুড়োহুড়ি করতে ঢুকতে গিয়েই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর রিমা কমিউনিটি সেন্টারের মেজবান বন্ধ করে দেয়া হলেও বাকি ১৩টি কমিউনিটি সেন্টারের মেজবান হয়েছে স্বাভাবিকভাবে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘’কমিউনিটি সেন্টারটি পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত। এতে প্রবেশের গেট আছে দু’টি। এখানে মুসলামান ছাড়া অন্য ধর্মের লোকজনের খাবার আয়োজন করা হয়েছিল। কয়েকদিন ধরেই এই মেজবানের ব্যাপক প্রচার চালান হয়। তাই সকাল ১১টা থেকেই লোকজন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ভিড় করে। আয়োজকরা সকাল ১১টার পর পেছনের গেট থেকে কিছু ভিআইপিকে ঢুকিয়ে খাবার শুরু করে দিলে সামনের রাস্তায় অপেক্ষমান কয়েক হাজার মানুষ অধৈর্য হয়ে ওঠে। রাস্তায়ও যানজট সৃষ্টি হয়। রাস্তাটি ঢালু আর গেট থেকে কমিউনিটি সেন্টারটি আরো কয়েক ফুট ঢালুতে। দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ গেট খুলে দিলে ইটের ঢালু পথে নামতে গিয়ে অনেকে পিছলে পড়ে যান। যাঁরা পড়ে যান তাঁরাই পদদলিত হন।”
গত ১৫ ডিসেম্বর সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী মারা যান। তাঁর কুলখানি উপলক্ষে চট্টগ্রামের ১৪টি কমিউনিটি সেন্টারে সোমবার কমপক্ষে এক লাখ মানুষের জন্য মেজবানের আয়োজন করা হয়। মেজবানের ভেন্যুগুলো হচ্ছে – পাঁচলাইশ এলাকার ‘দ্য কিং অফ চিটাগাং’, জিইসি-র মোড়ের ‘কে স্কয়ার কমিউনিটি সেন্টার’, চকবাজারের ‘কিশলয় কমিউনিটি সেন্টার’, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ‘সুইস পার্ক কমিউনিটি সেন্টার’, লাভ লেনের ‘স্মরণিকা কমিউনিটি সেন্টার’, মুরাদপুর এলাকায় ‘এন মোহাম্মদ কনভেনশন হল’, বাকলিয়ার কে বি কনভেনশন হল’, কাজির দেউড়ির ‘ভিআইপি ব্যানকোয়েট কমিউনিটি সেন্টার’ এবং ‘সাগরিকা স্কয়ার’ আর ডবলমুরিংয়ের ‘গোল্ডেন টাচ কমিউনিটি সেন্টার’। তাছাড়া ‘রিমা কনভেনশন সেন্টার’-এ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মালম্বীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়।
চট্টগ্রামের সাংবাদিক হামিদ উল্লাহ জানান, ‘‘মেজবান চট্টগ্রামের একটি ঐতিহ্য। এতে নিয়ম মেনে অতিথিরা পালা করে খাবার গ্রহণ করেন। তাই মেজবানে সাধারণত কোনো বিশৃঙ্খলা হয় না। এবার আয়োজকদের অব্যবস্থাপনার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”
চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার জানান, ‘‘সেখানে ২০ জন পুলিশ ছিল। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তারা পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি।”
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিহতদের শেষকৃত্য ও আহতদের চিকিৎসা খরচ দেবে বলে জানিয়েছে মেয়র মহিউদ্দিনের পরিবার।