Menu |||

বৃটেনে এক স্কুল ছাত্রী বোরকা পরার অধিকার বঞ্চিত

একজন মুসলিম মেয়ে বোরকা পরিধান অবস্থায় স্কুলে যাতায়াত করতে  না পেরে অবশেষে স্কুল ত্যাগ।
খৃস্টান প্রধান একটি দেশ ব্রিটেন,সেই দেশে মুসলিম ঘরের মেয়ে সাবিনা,জন্ম সূত্রে সাবিনা ব্রিটেনের নাগরিক হলেও মা-বাবা কিন্তু জন্ম সূত্রে ছিলেন বাংলাদেশী (সিলেটি) যদিও তারাও এখন ব্রিটেনের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন,সম্প্রতি সেই সাবিনা নামের মেয়েটির ধর্মীয় নিয়ম-কানুনের প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর অজস্র শ্রদ্ধাবোধের কথা শুনে আমি ভীষণভাবে আনন্দিত হয়েছি,আসলে সত্যি কথা বলতেকি তখন আমি অবাক হয়ে ভাবলাম যে;একটি খৃস্টান প্রধান দেশের সংখ্যালঘু জাতি হয়েও সেই মেয়েটি তার ইসলাম ধর্মের সঠিক চর্চা থেকে বিরত থাকেনি বরং ইসলাম প্রধান দেশের মুসলিম নারীদের চেয়েও সহস্র গুন বেশি ধর্মপরায়ণ ছিল। সত্যি ইসলামের ইতিহাসে এই ঘটনা এক অসাধারণ তথা বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ।
মেয়েটির নাম সাবিনা।এই মেয়েটির ধর্ম শিক্ষা কতটুকু ছিল তা আমার জানা ছিলনা। কিন্তু ধর্মপ্রাণ নারী যে; তার ব্যক্তি ধর্মাধিকার আদায় তারপর নিজকে পর্দাশীল জীবনে দেখতে এতটা সোচ্চার ছিল বিশাল সংগ্রামী এই মুসলিম নারী সাবিনাকে দেখে পুরোপুরি অবগত হলাম,
এমন ধর্মীয় অধিকার আদায়ের সংগ্রামী নারী ইসলাম ধর্মের জন্য বড়ই গর্বের এবং কৃতিত্বেরও বটে। আমরা জানি যে; পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গুলোতে নারীদের পর্দার ব্যাপারে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে; তারা যেন পর্দাছাড়া ঘর থেকে বের না হয়।কিন্তু দুঃখজনক হলেও চরম বাস্তব সত্য যে; আজকের এই খোলামেলা আধুনিক বিশ্বে আমরা কিন্তু মুসলিম পর্দা হীন নারীদের সংখ্যা দেখছি বেশি। আজকের এই শত বাধাবিঘ্নতার যুগে ধর্মীয় অনেক কর্ম সম্পাদন করা প্রচণ্ড কষ্টকর। তা সত্ত্বেও কেও যদি এই পরিস্থিতিতে ধর্ম চেতনা বুকে লালন করে সঠিক জীবনযাপন করে তবে তাকেই কেবল নিঃসন্দেহে প্রকৃত মুসলিম বলা যেতে পারে।আর সেই কাজটি ব্রিটেনের সেই মুসলিম সাবিনাই করে দেখালো,
সাবিনা সঠিক ধর্মানুরাগী এবং প্রকৃত পর্দাশীল একজন মেয়ের নাম,
মেয়েটি তখন সবেমাত্র হাইস্কুলের একজন ছাত্রী, প্রত্যহ স্কুলে যাতায়াত শুরু;কিন্তু পোশাক হিসেবে বোরকা পরিধান ছিল যেন তার জন্যে এক ধরনের দায়িত্ব আর কর্তব্য,
বিধায় প্রতিনিয়ত স্কুলের ইউনিফর্ম এর পরিবর্তে সে বোরকা পরে স্কুলে যেতো,
ইতিমধ্যে সাবিনার বোরকা পরিধান স্কুলের সকলের চোখে পরলো; এবং তাহা নিয়ে সবাই রীতিমতো বিভিন্ন কথা বলা শুরু করে দিলে। সংশ্লিষ্ট স্কুলের একজন ক্লাস টিচার পর্যন্ত সাবিনাকে একদিন ডেকে নিয়ে এসে বললেন ঠিক এরকম করে যে’সাবিনা তুমি তোমার ঐ-বোরকা পরে স্কুলে আসবেনা, সাবিনা জাস্ট টিচারের কথাই শুনেছিল কিন্তু নিশ্চুপ থেকে,কিন্তু সাবিনা ঐসব বাধা উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত বোরকা পরিধান করেই স্কুলে যাচ্ছিল,
পরে দ্বিতীয় দিন আবার সাবিনাকে সেই একই টিচার ডেকে নিয়ে এসে বললেন সাবিনা তোমার যথেষ্ট বুঝার শক্তি হয়েছে তাহলে আমার বাধা-নিষেধ তোমার কর্ণপাত হলেও তুমি বুঝার চেষ্টা করছ না কেন? শুনো মেয়ে এই বোরকা আমরা দেখতে চাইনা সুতরাং এরপর আর বোরকা পরিধান অবস্থায় তোমাকে স্কুলে যেন দেখতে না হয়,
সাবিনা এই দ্বিতীয় দিনও সেই আগের মতই নিশ্চুপ ছিল,
এই দুই দিনের শাসন-বারণ উপেক্ষা করে সাবিনা এবার তৃতীয় দিনও স্কুলে সেই বোরকা পরিধান অবস্থায় গিয়েছে,
এবার সেই টিচার সাবিনাকে দেখে প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে ডেকে নিয়ে এসে বললেন এই মেয়ে তোমাকে এই পোশাক সম্পর্কে কত শত বার নিষেধ করেছি তবে তুমি কেন আমার কথা উপেক্ষা করে চলেছ,এক্ষুনি  আমার সাথে আসো আমি  তোমাকে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে নিয়ে যাবো,
সাবিনা প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যাওয়ার জন্যে বিশেষ কোনো পূর্ব প্রস্তুতি  নেয়নি; বরং সাবিনা এহেন পরিস্থিতি দেখে মোটেও মনোবল হারায়নি মূলত সাবিনা সেই শুরু থেকে আজ অবধি সীমাহীন নির্মম-নিষ্ঠুর আচরণ সত্ত্বেও নিজেকে সংযত রেখেছে,
কথিত টিচার সাবিনাকে নিয়ে গেলেন প্রিন্সিপাল স্যারের সামনে,
এদিকে আজ এই মুহুর্তে সাবিনা দাড়িয়ে আছে স্কুলের প্রিন্সিপাল স্যার এর রুমের মধ্যে;সামনে প্রিন্সিপাল স্যার বসে আছেন কিন্তু সাবিনা একটুও ভয় পাচ্ছেনা মনও খারাপ করছেনা কিংবা কোনো ভাষাও নেই তার মুখে, যদিও আজ তাকে দেখতে লাগছিল পৃথিবীর বড়ই অসহায় একজন নারীর মত,
কেউ কখনো কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ালে তখন কেবল বুঝতে পারে যে.বাস্তব কত কঠিন,আজ সেই পরিস্থিতি অনেকটা সাবিনার জীবনে এসে হাজির,
অথচ ধর্মনিষ্ঠ এই অসীম সাহসী নারীটি তার নীরব ভাষা দিয়ে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছে যে. তোমরা যে যাই বলো কিংবা কর না কেনো তথাপি আমি সেই আমার মতো করেই চলব, সে জন্যে হয় যদি স্কুল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ তবুও আমি মেনে নেব,
কিন্তু আমি আমার বোরকা পরিধান থেকে বিরত থাকতে পারব না,
এদিকে প্রিন্সিপাল স্যার অনেক সময় সাবিনার দিকে তাকিয়ে থেকে একসময় বললেন যে.সাবিনা আমি তোমার সম্পর্কে বিস্তারিত তোমার ক্লাস টিচারের কাছ থেকে জেনেছি,
অতএব আমি আর পুনরায় তোমাকে সেই বিষয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিনা,
এখন জাস্ট আমি তোমাকে কিছু নিয়ম-কানুনের কথা বলছি, তুমি এই গুলো মনোযোগ সহকারে শুনে নিও,
সাবিনা তোমার পোশাক পরিধান অবশ্যই অনেক সম্মানের এতে কোনো সন্দেহ নেই,
কিন্তু এই পোশাক স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কেবল ব্যবহার করা যাবেনা, এখানে অনেক বাধা নিষেধ আছে সঠিক নিয়ম এর কথা ভেবে, আর নিয়ম সবার জন্যে সমান,

আমি অত্যান্ত দুঃখিত এই নিয়মের ক্ষেত্রে তোমাকে সহযোগিতা বা সাহায্য তার কোনটাই করতে পারবনা,
কারণ নিয়ম তৈরি হয়েছে সবার জন্যে সমান ভাবে সকল প্রকার বিচার সম্পাদন করার জন্য,
সুতরাং আমাকে সঠিক কথাই বলতে হবে যদিও তোমার কাছে তাহা অপ্রিয় মনে হতে পারে,
তুমি তো দেখেছো তোমার অন্যান্য ক্লাসমেটরা প্রতিদিনই স্কুলের ইউনিফর্ম পরে স্কুলে আসা-যাওয়া করে থাকে,
সাবিনা আমি তোমাকে অবশেষে যে কথাটি বলতে চাই তাহলো যে.তুমি যদি পারো স্কুলের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে তাহলে স্কুলে আসা কন্টিনিউ করিও, তানাহলে স্কুলে আসা থেকে বিরত থেকো,
আজ সাবিনা স্পষ্টভাবে জেনেনিলো যে. তাহলে তার আর স্কুলে আসা-যাওয়া হবেনা, এই হয়তো আজ শেষদিন,
এদিকে কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হলো এইযে. এত কিছুর পরও সাবিনাকে একটুও মনমরা বা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বলে মনে হয়নি,
সাবিনা প্রিন্সিপাল স্যারের সকল কথা খুব মন দিয়ে শুনলেও একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি, বরং প্র্যন্সিপাল স্যারকে থ্যাংকস বলে এইদিনই স্কুল থেকে চলে গেলো বাসাতে,
এদিকে সাবিনার সাথে স্কুল টিচার-প্রিন্সিপাল এর তথা কথিত আচরণ সম্পর্কে সাবিনা একদিনও মা-বাবার কাছে মুখ খুলেনি,
আজ যখন স্কুলে লেখাপড়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পরেছে ঠিক তখনই সাবিনা তার মা-বাবাকে প্রথম থেকে এপর্যন্ত যত কিছু হয়েছে তাহা সবকিছু খুলে বলল,
সাবিনার মা-বাবা দুজনই এইসব ঘটনা শুনে খুবই মর্মাহত হলেন,
পাশাপাশি সাবিনাকেও তারা সান্ত্বনা দিয়ে বললেন সাবিনা তুমি নিজের মনকে দুর্বল করনা ধৈর্যশীল হওয়ার চেষ্টা করো,ইনশাল্লাহ আমরা তোমাকে কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছানোর জন্য সকল চেষ্টা করে যাবো,এবং প্রয়োজন হলে আমরা আদালতের সাহায্য চাইবো,
এদিকে প্রিসিপাল স্যারের সেদিনের কথার পর থেকে সাবিনা আর স্কুল মুখি হয়নি,
সাবিনা এবার মা-বাবাকে সকল বিষয় খুলে বলে নিশ্চিন্ত প্রায়, কারণ তার বিশ্বাস মা-বাবা নিশ্চয়ই তার জন্য একটা ইতিবাচক কিছু করবেন,
এদিকে কিছুদিন পর সাবিনার মা-বাবা লন্ডনের একজন সুনাম ধন্য আইনজীবীর কাছে গিয়ে সাবিনার বোরকার প্রতি স্কুল এর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে খুলে বলে এর সালিশি পরামর্শ চাইলেন,
কথিত আইনজীবী সাবিনার মা-বাবার কাছ থেকে সকল ঘটনা শুনে বললেন,দেখুন এই ব্যাপারটা আসলে খুব কঠিন কিছু নয়;তবে এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়,এখানে এ বিষয়ের সঙ্গে একটা পবিত্র ধর্মের অনুভূতি জড়িত,আর অন্যদিকে একটা স্কুলের নিয়ম মেনে চলার প্রশ্ন,
কথিত আইনজীবী আরও বললেন যে, আমি আপনাদের অনুরোধে এই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালত পর্যন্ত যেতে পারব কিন্তু অবশেষে আপনাদের প্রাপ্য রায়ের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করছি,কারণ আদালত কখনো ধর্মীয় আবেগকে স্থান দেবেনা,
বিচারক সঠিক নিয়মের কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট স্কুলের পক্ষেই কথা বলবে বলে আমার ধারণা,
সাবিনার মা-বাবা আইনজীবীর উপরোক্ত কথা শুনে তবুও বললেন আমরা আমাদের মেয়েকে কথা দিয়েছি তার জন্য সকল প্রকার চেষ্টা করবো,
অতএব, আমরা আদালতকে এই ব্যাপারে অবগত করে একটা ন্যায় বিচার অর্জন করতে চাই,
তারপর একদিন সাবিনার মা-বাবার পক্ষের আইনজীবী সাবিনার বোরকা প্রসঙ্গ বিষয়টি আদালত বরাবর নিয়ে আসেন,
এবং একদা সাবিনার পক্ষের আইনজীবী কর্তৃক আদালতের কাছে জানতে চাওয়া হল এইবলে যে সাবিনাকে স্কুলের ইউনিফর্ম এর পরিবর্তে কেন বোরকা অবৈধ বলা হবে বা সাবিনা কেন উক্ত স্কুলে বোরকা পরিধানবস্থায় প্রবেশ করতে পারবেনা মাননীয় বিচারক সমীপে অনুরোধ আপনি একজন যুবতী মেয়ের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে এর সঠিক বিচার পরিচালনা করবেন,
বহু কাঙ্ক্ষিত বিচারের দিন,আজ সাবিনাও মা-বাবার সাথে আদালতে এসে হাজির,
বিচারক বাদি পক্ষের সম্পূর্ণ বক্তব্য শুনলেন খুবই গুরুত্ব সহকারে,
মহামান্য বিচারক এবার রায় ঘোষণা করছেন,শুরুতেই বাদি পক্ষকে উদ্দেশ্য করে বললেন যে,দেখুন আমি একজন খৃস্টান ধর্মীয় ব্যেক্তি কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষ আচরণে বিশ্বাসী,
আপনাদের বিষয়টি খুবই মর্ম স্পর্শকাতর তথা ব্যাপক ধর্মীয় আবেগ জড়িত কাজেই আমি নিজেকে আগে ধর্ম নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে বলে নিলাম,
সাবিনা একজন প্রকৃত মুসলিম ধর্মানুরাগী মেয়ে, তার ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর অফুরন্ত ভালোবাসা এবং অধিক শ্রদ্ধাবোধ তাকে অনেক কিছু জানতে শিখিয়েছে বলে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি ঠিকই এবং সাবিনার সকল কর্মকাণ্ডেও তাহা প্রতীয়মান হয়েছে, কিন্তু আমি অত্যান্ত দুঃখ প্রকাশ করছি এই অবস্থায় আমি তাকে কোনো ধরনের সাহায্য কিংবা সহযোগিতা করতে পারছিনা আজকের এই বিচারকের আসনে বসে। সাবিনার ধর্মীয় আবেগের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে, এবং তার পর্দাশীল জীবনযাপন বোরকা পরিধান খুবই সম্মানের তাও স্বীকার করছি, সকল ধর্মেই নারীকে পর্দাশীল হতে বলা হয়েছে, যদিও মুসলিম নারীদের দেখাগেছে পর্দার ক্ষেত্রে একটু বেশি তত্পর এবং সচেতন,
অতএব, সাবিনার ধর্মীয় বিশ্বাস এবং দৃষ্টিকোণ থেকে সে সঠিক হলেও একটা স্কুলের নিয়মের ক্ষেত্রে তাহা সম্পূর্ণ গ্রহণ যোগ্য নয়,
প্রায় সব প্রাইমারি বা হাইস্কুলের নিয়ম হচ্ছে সকল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে একই রঙের ইউনিফর্ম পরতে হবে, সেখানে যেহেতু একটা নিয়ম আছে সুতরাং সেই নিয়মের আওতায় সবাই থাকবে; এটাই সঠিক, কেউ সেই নিয়মের বাইরে গেলে অবশ্যই সেই নিয়ম ভাঙ্গার অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়ে থাকে,
অতএব, সাবিনাকে সংশ্লিষ্ট স্কুলে অধ্যয়ন করতে হলে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে স্কুলের নিয়ম মেনে চলতে হবে,
অর্থাৎ স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই স্কুলে যেতে হবে, অন্যথায় তাকে স্কুলে যাওয়া-আসা থেকে বিরত থাকতে হবে,
আমি একজন বিচারক হিসেবে এর বাইরে আর কিছু বলতে পারবোনা,
উপরোক্ত কথা বলে কথিত বিচারক শেষ করলেন তার দীর্ঘ রায়,
এদিকে সাবিনা এবং তার মা-বাবা তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে বিচারকের সেই রায়ের বাণী শুনছিলেন,
সাবিনার জীবনের লেখাপড়ার সমাপ্তি হয়ত এখানেই এই রায়ের মধ্যে দিয়ে হলো,
এদিকে অসহায়ের মত কান্না ভরা দৃষ্টিতে সাবিনা থাকিয়ে আছে মা-বাবার দিকে অন্যদিকে মা-বাবাও নিজেদের অপারগতার কথা ভেবে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন,
কষ্ট জীবনে একবার এসে চলে গেলেই বেশ ভালো, কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ কষ্টের মাঝেই বসবাস এযে কতো বিশাল কষ্টের তা কেবল সেই বলতে পারে যে ব্যক্তি এমন বাস্তবতার মুখোমুখি,
পৃথিবীর অনেক মানুষের তৈরী নিয়মের কাছে মানুষ বড়ই জিম্মি হয়ে আছে, এটাই তার একটা উজ্জল দৃষ্টান্ত,
আর এমনি করেই অবশেষে একজন মুসলিম মেয়ে বোরকা পরিধান অবস্থায় স্কুলে যাতায়াত করতে  না পেরে অবশেষে স্কুল ত্যাগ,
তবুও সেই সংগ্রামী সাবিনার জীবন থেমে থাকার কথা নয়,
সেই সাবিনার জীবন কথা ইসলামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।


আ হ জুবেদ

সাংবাদিক ও উপস্থাপক

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

বৃটেনে এক স্কুল ছাত্রী বোরকা পরার অধিকার বঞ্চিত

একজন মুসলিম মেয়ে বোরকা পরিধান অবস্থায় স্কুলে যাতায়াত করতে  না পেরে অবশেষে স্কুল ত্যাগ।
খৃস্টান প্রধান একটি দেশ ব্রিটেন,সেই দেশে মুসলিম ঘরের মেয়ে সাবিনা,জন্ম সূত্রে সাবিনা ব্রিটেনের নাগরিক হলেও মা-বাবা কিন্তু জন্ম সূত্রে ছিলেন বাংলাদেশী (সিলেটি) যদিও তারাও এখন ব্রিটেনের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন,সম্প্রতি সেই সাবিনা নামের মেয়েটির ধর্মীয় নিয়ম-কানুনের প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর অজস্র শ্রদ্ধাবোধের কথা শুনে আমি ভীষণভাবে আনন্দিত হয়েছি,আসলে সত্যি কথা বলতেকি তখন আমি অবাক হয়ে ভাবলাম যে;একটি খৃস্টান প্রধান দেশের সংখ্যালঘু জাতি হয়েও সেই মেয়েটি তার ইসলাম ধর্মের সঠিক চর্চা থেকে বিরত থাকেনি বরং ইসলাম প্রধান দেশের মুসলিম নারীদের চেয়েও সহস্র গুন বেশি ধর্মপরায়ণ ছিল। সত্যি ইসলামের ইতিহাসে এই ঘটনা এক অসাধারণ তথা বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ।
মেয়েটির নাম সাবিনা।এই মেয়েটির ধর্ম শিক্ষা কতটুকু ছিল তা আমার জানা ছিলনা। কিন্তু ধর্মপ্রাণ নারী যে; তার ব্যক্তি ধর্মাধিকার আদায় তারপর নিজকে পর্দাশীল জীবনে দেখতে এতটা সোচ্চার ছিল বিশাল সংগ্রামী এই মুসলিম নারী সাবিনাকে দেখে পুরোপুরি অবগত হলাম,
এমন ধর্মীয় অধিকার আদায়ের সংগ্রামী নারী ইসলাম ধর্মের জন্য বড়ই গর্বের এবং কৃতিত্বেরও বটে। আমরা জানি যে; পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গুলোতে নারীদের পর্দার ব্যাপারে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে; তারা যেন পর্দাছাড়া ঘর থেকে বের না হয়।কিন্তু দুঃখজনক হলেও চরম বাস্তব সত্য যে; আজকের এই খোলামেলা আধুনিক বিশ্বে আমরা কিন্তু মুসলিম পর্দা হীন নারীদের সংখ্যা দেখছি বেশি। আজকের এই শত বাধাবিঘ্নতার যুগে ধর্মীয় অনেক কর্ম সম্পাদন করা প্রচণ্ড কষ্টকর। তা সত্ত্বেও কেও যদি এই পরিস্থিতিতে ধর্ম চেতনা বুকে লালন করে সঠিক জীবনযাপন করে তবে তাকেই কেবল নিঃসন্দেহে প্রকৃত মুসলিম বলা যেতে পারে।আর সেই কাজটি ব্রিটেনের সেই মুসলিম সাবিনাই করে দেখালো,
সাবিনা সঠিক ধর্মানুরাগী এবং প্রকৃত পর্দাশীল একজন মেয়ের নাম,
মেয়েটি তখন সবেমাত্র হাইস্কুলের একজন ছাত্রী, প্রত্যহ স্কুলে যাতায়াত শুরু;কিন্তু পোশাক হিসেবে বোরকা পরিধান ছিল যেন তার জন্যে এক ধরনের দায়িত্ব আর কর্তব্য,
বিধায় প্রতিনিয়ত স্কুলের ইউনিফর্ম এর পরিবর্তে সে বোরকা পরে স্কুলে যেতো,
ইতিমধ্যে সাবিনার বোরকা পরিধান স্কুলের সকলের চোখে পরলো; এবং তাহা নিয়ে সবাই রীতিমতো বিভিন্ন কথা বলা শুরু করে দিলে। সংশ্লিষ্ট স্কুলের একজন ক্লাস টিচার পর্যন্ত সাবিনাকে একদিন ডেকে নিয়ে এসে বললেন ঠিক এরকম করে যে’সাবিনা তুমি তোমার ঐ-বোরকা পরে স্কুলে আসবেনা, সাবিনা জাস্ট টিচারের কথাই শুনেছিল কিন্তু নিশ্চুপ থেকে,কিন্তু সাবিনা ঐসব বাধা উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত বোরকা পরিধান করেই স্কুলে যাচ্ছিল,
পরে দ্বিতীয় দিন আবার সাবিনাকে সেই একই টিচার ডেকে নিয়ে এসে বললেন সাবিনা তোমার যথেষ্ট বুঝার শক্তি হয়েছে তাহলে আমার বাধা-নিষেধ তোমার কর্ণপাত হলেও তুমি বুঝার চেষ্টা করছ না কেন? শুনো মেয়ে এই বোরকা আমরা দেখতে চাইনা সুতরাং এরপর আর বোরকা পরিধান অবস্থায় তোমাকে স্কুলে যেন দেখতে না হয়,
সাবিনা এই দ্বিতীয় দিনও সেই আগের মতই নিশ্চুপ ছিল,
এই দুই দিনের শাসন-বারণ উপেক্ষা করে সাবিনা এবার তৃতীয় দিনও স্কুলে সেই বোরকা পরিধান অবস্থায় গিয়েছে,
এবার সেই টিচার সাবিনাকে দেখে প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে ডেকে নিয়ে এসে বললেন এই মেয়ে তোমাকে এই পোশাক সম্পর্কে কত শত বার নিষেধ করেছি তবে তুমি কেন আমার কথা উপেক্ষা করে চলেছ,এক্ষুনি  আমার সাথে আসো আমি  তোমাকে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে নিয়ে যাবো,
সাবিনা প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যাওয়ার জন্যে বিশেষ কোনো পূর্ব প্রস্তুতি  নেয়নি; বরং সাবিনা এহেন পরিস্থিতি দেখে মোটেও মনোবল হারায়নি মূলত সাবিনা সেই শুরু থেকে আজ অবধি সীমাহীন নির্মম-নিষ্ঠুর আচরণ সত্ত্বেও নিজেকে সংযত রেখেছে,
কথিত টিচার সাবিনাকে নিয়ে গেলেন প্রিন্সিপাল স্যারের সামনে,
এদিকে আজ এই মুহুর্তে সাবিনা দাড়িয়ে আছে স্কুলের প্রিন্সিপাল স্যার এর রুমের মধ্যে;সামনে প্রিন্সিপাল স্যার বসে আছেন কিন্তু সাবিনা একটুও ভয় পাচ্ছেনা মনও খারাপ করছেনা কিংবা কোনো ভাষাও নেই তার মুখে, যদিও আজ তাকে দেখতে লাগছিল পৃথিবীর বড়ই অসহায় একজন নারীর মত,
কেউ কখনো কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ালে তখন কেবল বুঝতে পারে যে.বাস্তব কত কঠিন,আজ সেই পরিস্থিতি অনেকটা সাবিনার জীবনে এসে হাজির,
অথচ ধর্মনিষ্ঠ এই অসীম সাহসী নারীটি তার নীরব ভাষা দিয়ে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছে যে. তোমরা যে যাই বলো কিংবা কর না কেনো তথাপি আমি সেই আমার মতো করেই চলব, সে জন্যে হয় যদি স্কুল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ তবুও আমি মেনে নেব,
কিন্তু আমি আমার বোরকা পরিধান থেকে বিরত থাকতে পারব না,
এদিকে প্রিন্সিপাল স্যার অনেক সময় সাবিনার দিকে তাকিয়ে থেকে একসময় বললেন যে.সাবিনা আমি তোমার সম্পর্কে বিস্তারিত তোমার ক্লাস টিচারের কাছ থেকে জেনেছি,
অতএব আমি আর পুনরায় তোমাকে সেই বিষয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিনা,
এখন জাস্ট আমি তোমাকে কিছু নিয়ম-কানুনের কথা বলছি, তুমি এই গুলো মনোযোগ সহকারে শুনে নিও,
সাবিনা তোমার পোশাক পরিধান অবশ্যই অনেক সম্মানের এতে কোনো সন্দেহ নেই,
কিন্তু এই পোশাক স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কেবল ব্যবহার করা যাবেনা, এখানে অনেক বাধা নিষেধ আছে সঠিক নিয়ম এর কথা ভেবে, আর নিয়ম সবার জন্যে সমান,

আমি অত্যান্ত দুঃখিত এই নিয়মের ক্ষেত্রে তোমাকে সহযোগিতা বা সাহায্য তার কোনটাই করতে পারবনা,
কারণ নিয়ম তৈরি হয়েছে সবার জন্যে সমান ভাবে সকল প্রকার বিচার সম্পাদন করার জন্য,
সুতরাং আমাকে সঠিক কথাই বলতে হবে যদিও তোমার কাছে তাহা অপ্রিয় মনে হতে পারে,
তুমি তো দেখেছো তোমার অন্যান্য ক্লাসমেটরা প্রতিদিনই স্কুলের ইউনিফর্ম পরে স্কুলে আসা-যাওয়া করে থাকে,
সাবিনা আমি তোমাকে অবশেষে যে কথাটি বলতে চাই তাহলো যে.তুমি যদি পারো স্কুলের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে তাহলে স্কুলে আসা কন্টিনিউ করিও, তানাহলে স্কুলে আসা থেকে বিরত থেকো,
আজ সাবিনা স্পষ্টভাবে জেনেনিলো যে. তাহলে তার আর স্কুলে আসা-যাওয়া হবেনা, এই হয়তো আজ শেষদিন,
এদিকে কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হলো এইযে. এত কিছুর পরও সাবিনাকে একটুও মনমরা বা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বলে মনে হয়নি,
সাবিনা প্রিন্সিপাল স্যারের সকল কথা খুব মন দিয়ে শুনলেও একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি, বরং প্র্যন্সিপাল স্যারকে থ্যাংকস বলে এইদিনই স্কুল থেকে চলে গেলো বাসাতে,
এদিকে সাবিনার সাথে স্কুল টিচার-প্রিন্সিপাল এর তথা কথিত আচরণ সম্পর্কে সাবিনা একদিনও মা-বাবার কাছে মুখ খুলেনি,
আজ যখন স্কুলে লেখাপড়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পরেছে ঠিক তখনই সাবিনা তার মা-বাবাকে প্রথম থেকে এপর্যন্ত যত কিছু হয়েছে তাহা সবকিছু খুলে বলল,
সাবিনার মা-বাবা দুজনই এইসব ঘটনা শুনে খুবই মর্মাহত হলেন,
পাশাপাশি সাবিনাকেও তারা সান্ত্বনা দিয়ে বললেন সাবিনা তুমি নিজের মনকে দুর্বল করনা ধৈর্যশীল হওয়ার চেষ্টা করো,ইনশাল্লাহ আমরা তোমাকে কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছানোর জন্য সকল চেষ্টা করে যাবো,এবং প্রয়োজন হলে আমরা আদালতের সাহায্য চাইবো,
এদিকে প্রিসিপাল স্যারের সেদিনের কথার পর থেকে সাবিনা আর স্কুল মুখি হয়নি,
সাবিনা এবার মা-বাবাকে সকল বিষয় খুলে বলে নিশ্চিন্ত প্রায়, কারণ তার বিশ্বাস মা-বাবা নিশ্চয়ই তার জন্য একটা ইতিবাচক কিছু করবেন,
এদিকে কিছুদিন পর সাবিনার মা-বাবা লন্ডনের একজন সুনাম ধন্য আইনজীবীর কাছে গিয়ে সাবিনার বোরকার প্রতি স্কুল এর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে খুলে বলে এর সালিশি পরামর্শ চাইলেন,
কথিত আইনজীবী সাবিনার মা-বাবার কাছ থেকে সকল ঘটনা শুনে বললেন,দেখুন এই ব্যাপারটা আসলে খুব কঠিন কিছু নয়;তবে এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়,এখানে এ বিষয়ের সঙ্গে একটা পবিত্র ধর্মের অনুভূতি জড়িত,আর অন্যদিকে একটা স্কুলের নিয়ম মেনে চলার প্রশ্ন,
কথিত আইনজীবী আরও বললেন যে, আমি আপনাদের অনুরোধে এই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালত পর্যন্ত যেতে পারব কিন্তু অবশেষে আপনাদের প্রাপ্য রায়ের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করছি,কারণ আদালত কখনো ধর্মীয় আবেগকে স্থান দেবেনা,
বিচারক সঠিক নিয়মের কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট স্কুলের পক্ষেই কথা বলবে বলে আমার ধারণা,
সাবিনার মা-বাবা আইনজীবীর উপরোক্ত কথা শুনে তবুও বললেন আমরা আমাদের মেয়েকে কথা দিয়েছি তার জন্য সকল প্রকার চেষ্টা করবো,
অতএব, আমরা আদালতকে এই ব্যাপারে অবগত করে একটা ন্যায় বিচার অর্জন করতে চাই,
তারপর একদিন সাবিনার মা-বাবার পক্ষের আইনজীবী সাবিনার বোরকা প্রসঙ্গ বিষয়টি আদালত বরাবর নিয়ে আসেন,
এবং একদা সাবিনার পক্ষের আইনজীবী কর্তৃক আদালতের কাছে জানতে চাওয়া হল এইবলে যে সাবিনাকে স্কুলের ইউনিফর্ম এর পরিবর্তে কেন বোরকা অবৈধ বলা হবে বা সাবিনা কেন উক্ত স্কুলে বোরকা পরিধানবস্থায় প্রবেশ করতে পারবেনা মাননীয় বিচারক সমীপে অনুরোধ আপনি একজন যুবতী মেয়ের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে এর সঠিক বিচার পরিচালনা করবেন,
বহু কাঙ্ক্ষিত বিচারের দিন,আজ সাবিনাও মা-বাবার সাথে আদালতে এসে হাজির,
বিচারক বাদি পক্ষের সম্পূর্ণ বক্তব্য শুনলেন খুবই গুরুত্ব সহকারে,
মহামান্য বিচারক এবার রায় ঘোষণা করছেন,শুরুতেই বাদি পক্ষকে উদ্দেশ্য করে বললেন যে,দেখুন আমি একজন খৃস্টান ধর্মীয় ব্যেক্তি কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষ আচরণে বিশ্বাসী,
আপনাদের বিষয়টি খুবই মর্ম স্পর্শকাতর তথা ব্যাপক ধর্মীয় আবেগ জড়িত কাজেই আমি নিজেকে আগে ধর্ম নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে বলে নিলাম,
সাবিনা একজন প্রকৃত মুসলিম ধর্মানুরাগী মেয়ে, তার ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর অফুরন্ত ভালোবাসা এবং অধিক শ্রদ্ধাবোধ তাকে অনেক কিছু জানতে শিখিয়েছে বলে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি ঠিকই এবং সাবিনার সকল কর্মকাণ্ডেও তাহা প্রতীয়মান হয়েছে, কিন্তু আমি অত্যান্ত দুঃখ প্রকাশ করছি এই অবস্থায় আমি তাকে কোনো ধরনের সাহায্য কিংবা সহযোগিতা করতে পারছিনা আজকের এই বিচারকের আসনে বসে। সাবিনার ধর্মীয় আবেগের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে, এবং তার পর্দাশীল জীবনযাপন বোরকা পরিধান খুবই সম্মানের তাও স্বীকার করছি, সকল ধর্মেই নারীকে পর্দাশীল হতে বলা হয়েছে, যদিও মুসলিম নারীদের দেখাগেছে পর্দার ক্ষেত্রে একটু বেশি তত্পর এবং সচেতন,
অতএব, সাবিনার ধর্মীয় বিশ্বাস এবং দৃষ্টিকোণ থেকে সে সঠিক হলেও একটা স্কুলের নিয়মের ক্ষেত্রে তাহা সম্পূর্ণ গ্রহণ যোগ্য নয়,
প্রায় সব প্রাইমারি বা হাইস্কুলের নিয়ম হচ্ছে সকল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে একই রঙের ইউনিফর্ম পরতে হবে, সেখানে যেহেতু একটা নিয়ম আছে সুতরাং সেই নিয়মের আওতায় সবাই থাকবে; এটাই সঠিক, কেউ সেই নিয়মের বাইরে গেলে অবশ্যই সেই নিয়ম ভাঙ্গার অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়ে থাকে,
অতএব, সাবিনাকে সংশ্লিষ্ট স্কুলে অধ্যয়ন করতে হলে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে স্কুলের নিয়ম মেনে চলতে হবে,
অর্থাৎ স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই স্কুলে যেতে হবে, অন্যথায় তাকে স্কুলে যাওয়া-আসা থেকে বিরত থাকতে হবে,
আমি একজন বিচারক হিসেবে এর বাইরে আর কিছু বলতে পারবোনা,
উপরোক্ত কথা বলে কথিত বিচারক শেষ করলেন তার দীর্ঘ রায়,
এদিকে সাবিনা এবং তার মা-বাবা তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে বিচারকের সেই রায়ের বাণী শুনছিলেন,
সাবিনার জীবনের লেখাপড়ার সমাপ্তি হয়ত এখানেই এই রায়ের মধ্যে দিয়ে হলো,
এদিকে অসহায়ের মত কান্না ভরা দৃষ্টিতে সাবিনা থাকিয়ে আছে মা-বাবার দিকে অন্যদিকে মা-বাবাও নিজেদের অপারগতার কথা ভেবে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন,
কষ্ট জীবনে একবার এসে চলে গেলেই বেশ ভালো, কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ কষ্টের মাঝেই বসবাস এযে কতো বিশাল কষ্টের তা কেবল সেই বলতে পারে যে ব্যক্তি এমন বাস্তবতার মুখোমুখি,
পৃথিবীর অনেক মানুষের তৈরী নিয়মের কাছে মানুষ বড়ই জিম্মি হয়ে আছে, এটাই তার একটা উজ্জল দৃষ্টান্ত,
আর এমনি করেই অবশেষে একজন মুসলিম মেয়ে বোরকা পরিধান অবস্থায় স্কুলে যাতায়াত করতে  না পেরে অবশেষে স্কুল ত্যাগ,
তবুও সেই সংগ্রামী সাবিনার জীবন থেমে থাকার কথা নয়,
সেই সাবিনার জীবন কথা ইসলামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।


আ হ জুবেদ

সাংবাদিক ও উপস্থাপক

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।