Menu |||

বিপাকে গার্মেন্টস শিল্প

জাকির সিকদার: গুলশানে জঙ্গি হামলায় একসঙ্গে ১৭ জন বিদেশি নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশে বিদেশিদের আতঙ্ক কাটছে না। এর আগে তাভেল্লা ও হোসি কোনিও নিহত হওয়ায় বিদেশিদের মাঝে যে আতঙ্ক ছিল, সেটা কাটিয়ে ওঠা গেলেও গুলশাল হামলার পর বিদেশিদের মধ্য নতুন আতঙ্ক সহজে কাটছে না। গুলশান হামলার পর বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যে সম্পৃক্ত অনেকে বিদেশিই নিজের দেশে চলে গেছেন। ওই হামলায় প্রধান টার্গেট বিদেশি নাগরিক হওয়ার কারণে সবার মধ্যে ভয় ঢুকে গেছে। কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এক বছরে কমেছে ৫০০০ কোটি টাকা। এছাড়া দুটি বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা বিপাকে ফেলেছে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক খাতকে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওই ঘটনার পর ক্রেতারা বাংলাদেশে আসতে চাইছেন না। এ খাতে কমর্রত বেশ কিছু বিদেশি নাগরিক নিজ দেশে ফিরে গেছেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক ক্রেতা সাময়িকভাবে আসতে চাইছেন না। অনেকে তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে বৈঠক করতে বলছেন। আন্তর্জাতিক একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্টাইজার পদে বাংলাদেশে কাজ করেন অ্যান্ডি (ছদ্মনাম)। গুলশান হামলার পর নিজের দেশে চলে গিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে আবার ঢাকায় এসেছেন। তবে এখন ব্যাপক সতর্কতা আর নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাকে। অ্যান্ডি বলছিলেন, ‘ওই হামলার পর আমি এখন বলতে গেলে বাইরেই যাই না। শুধু অফিস আর বাসা। একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে গেছে’। অ্যান্ডি ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় থাকেন। তার কাজের জায়গাটিও নিরাপদ। অ্যন্ডি ঢাকায় ফিরলেও

পোশাক খাতে সম্পৃক্ত অনেক বিদেশি এখনো বাংলাদেশে অনুপস্থিত।
হোলি আর্টিজান বেকারিতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল নীপিন গঙ্গাধরের। বিদেশি একটি বেসরকারি সংস্থার শীর্ষ পদে আছেন এই ভারতীয়। গুলশানে হামলার পর তার বন্ধুমহলের অনেকেই এখন ঢাকায় নেই।
তিনি বলেন, ‘হামলার কথা জেনে প্রথমে স্তম্ভিত হয়েছি। ওটা একটা নিরাপদ জায়গা ছিল। আমরা প্রায়ই সেখানে যেতাম। ওখানকার রুটি আমার বাসার নিয়মিত খাবার ছিল। ওই হামলা বিদেশিদের শঙ্কিত করে তুলেছে। কারণ হলো অনেকে ওই হামলার গোলাগুলোর শব্দ নিজ কানে শুনেছে। কোনো পত্রিকা পড়ে বা টিভিতে দেখে নয়।’
নীপিন জানান সবাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে তার বিদেশি বন্ধুরা আরো কিছুটা সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান। মূলত নিজেদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠাই কাজ করছে বলে জানান নীপিন।
গুলশানে নিহত ১৭ জন বিদেশি নাগরিকের মধ্য নয়জন ইতালীয়। তাদের কয়েকজন গার্মেন্ট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। জানা যায়, পোশাক রফতানির সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে থাকেন। এ ছাড়া নিয়মিত আসা যাওয়ার মধ্যে এ খাতে সম্পৃক্ত প্রায় ১৫ হাজার বিদেশি।
বাংলাদেশে গার্মেন্ট বাইং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম বলছিলেন, ‘তারা যে কথাটা বলেছে, আমরা ওয়াচ করব আগামী এক মাস দুই মাস। আমার মনে হয় এক মাস, দুই মাস আমাদের জন্য অনেক সময়’।
আমিনুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ থেকে কোনো ক্রয়-আদেশ বাতিল হয়নি। কোনো বিদেশি কোম্পানির ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ারও সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। তবে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অর্ডার কমে গিয়ে দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
‘আশঙ্কা করছি যারা বেশি অর্ডার দিত তারা কমিয়ে দিতে পারে। গ্রীষ্মকালীন ক্রয়াদেশের জন্য আমাদের জুলাই থেকে নেগোসিয়েশন শুরু হয়। আল্লাহ না করুক এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে আশঙ্কা তখন অ্যাবসলিউট হয়ে যাবে। প্রথম পর্যায়ে যেটা দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন’।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশিদের আতঙ্ক হবার বিষয়টি পোশাক রফতানিতে কী প্রভাব পড়বে তার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনই দেয়া যাবে না। তবে এ রকম পরিস্থিতি নতুন বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে।
‘ভারতের গত দুই তিন বছর ধরে যেসব পলিসি এবং প্ল্যান আমরা দেখছি তারা কিন্তু রেডিমেড গার্মেন্টসের ওপর একটা নতুনভাবে নজর দেয়া শুরু করেছে। চীন গার্মেন্টস রফতানিতে প্লাস ওয়ানে শক্তিশালীভাবে ঢোকার জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছে। মিয়ানমার এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পর একটা চেষ্টা করছে। আফ্রিকাতে অনেকে চেষ্টা করছেন যেহেতু তারা শূন্য-শুল্ক সুবিধা পায়’।
জনাব রহমান মনে করেন পোশাক খাত ছাড়াও গুলশান হামলা আরো কয়েকটি খাতে প্রভাব ফেলবে, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে দেখছি, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্নভাবে ফাইনান্সিয়াল আউটফো হচ্ছে। যারা উপার্জন করছেন তারা বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন ইলিগ্যালি আর যারা বাইরে উপার্জন করছেন ভেতরে আনছেন না। এ রকম অনিশ্চয়তা হলে এ ধরনের প্রবণতাগুলো শক্তিশালী হয়।’ তিনি বলছেন, এটা ছাড়াও যারা বিনিয়োগ করতে আসবেন তারাও কিন্তু চিন্তা করবেন যে, দীর্ঘমেয়াদে তারা যে বিনিয়োগ করছেন, বাংলাদেশে কি সে ধরনের পরিবেশ থাকবে যেখানে তারা বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভ করে সেই লাভ নিয়ে যেতে পারবেন!
দেশের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স আসে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশ থেকে। গত অর্থবছরে আটটি দেশের মধ্যে ছয়টি থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া তথ্য মতে, সৌদি আরব থেকে ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা এবং আরব আমিরাত থেকে ৮৭২ কোটি টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা কমে গেছে। সব মিলিয়ে ছয় দেশ থেকে এক বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা।
এ দিকে শুধু মধ্যপ্রাচ্য থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে না, কমে গেছে দেশের ২৮ সরকারি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের রেমিট্যান্স আহরণ। ব্যাংকগুলোর সমাপ্ত অর্থবছরের রেমিট্যান্স আহরণ আগের অর্থবছর (২০১৪-১৫) থেকে কমে গেছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও কৃষি ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যেÑ ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, স্টান্ডার্ড ব্যাংক, ইউসিবিএল, উত্তরা, এবি, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা, আএফআইসি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে তার দু-তৃতীয়াংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশ থেকে। আবার মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে বেশিরভাগ আসে সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও কুয়েত থেকে। কিন্তু সমাপ্ত অর্থবছরে দেশভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, রেমিট্যান্সের প্রধান বাজার এ তিন দেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে কম এসেছে অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে সমাপ্ত অর্থবছরে এ দেশ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ কমেছে রেমিট্যান্স। আরব আমিরাত থেকে ৮৭২ কোটি টাকা এবং কুয়েত থেকে ৩২০ কোটি টাকা সমমূল্যের রেমিট্যান্স কম এসেছে আগের বছরের চেয়ে। এর বাইরে বাহরাইন থেকে ৫৯২ কোটি টাকা, লিবিয়া থেকে ২৬৪ কোটি টাকা এবং ওমান থেকে ৩২ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা কম এসেছে।
আট দেশের মধ্যে প্রধান ছয়টি দেশ থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় সামগ্রিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯০৭ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার, যা সমাপ্ত অর্থবছরে কমে নেমেছে ৮৫৫ কোটি ডলারে।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, মূলত দুটি কারণে মাধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে।
এদিকে সারা বছরে গার্মেন্টস খাতের ৬০ শতাংশ পোশাকই গ্রীষ্মকালীন ক্রয়াদেশ থেকে পাওয়া যায়। আগামী মাস থেকেই স্প্রিং ও সামার মৌসুমের পোশাকের ক্রয়াদেশ আসবে। এ বিষয়ে বিজিবিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগস্টের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে আস্থার জায়গা তৈরি না হলে ক্রয়াদেশ কমার আশঙ্কা আছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ক্রয়াদেশও কম আসে, তাহলে লোকসান হবে প্রায় ২৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশে এক সপ্তাহের জন্য আসার কথা ছিল জাপানি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সাতজনের একটি প্রতিনিধিদল। তবে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দলটিকে বাংলাদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়নি। দেশের কয়েকটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে ক্রয়াদেশ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
একইভাবে তুরস্ক ও ফ্রান্সের তিনটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ভ্রমণ স্থগিত করেছেন। এর আগে জাপানি ফ্যাশন ব্রান্ড ইউনিকলো তাদের কর্মীদের বাংলাদেশ সফর বাতিল করে। সুইডেনভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম এ দেশ থেকে তাদের ব্যবসা সংকোচনের চিন্তাভাবনা করছে। অনেক বিদেশি ক্রেতাও নতুন করে ব্যবসা সম্প্রসারণের বিষয়ে নেতিবাচক মতামত দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে। এই সব কারণে বিদেশি পোশাক বাজার হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা করেছে ব্যবসায়ীরা।
এদিকে অনেক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের বিদেশি বায়াররা বাংলাদেশের বদলে দিল্লি, ব্যাংকক ও হংকংয়ে সভা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। তবে এর মধ্যে মার্কিন ২৮ প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা জোট ‘আল্যায়েন্স’ বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ক্রেতা জোট ‘অ্যাকর্ড’ বাংলাদেশে কর্মরত ইউরোপীয় কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টির কথা জানিয়েছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ষষ্ঠ বৃহত্তম বাজার ইতালি। সদ্য সমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের। একই সঙ্গে পোশাকশিল্পে বিনিয়োগও রয়েছে দেশটির উদ্যোক্তাদের। কিন্তু সম্প্রতি গুলশানের রেস্টুরেন্টে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ৯ ইতালীয় নাগরিক হত্যার ঘটনায় হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে দেশটির বাজার। কেননা ওই ৯ জনের মধ্যে ছয়জনই হচ্ছেন গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এ ঘটনায় ইতালীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকের মধ্যে বাংলাদেশি পণ্যের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট রফতানি আয়ের মধ্যে দুই হাজার ৮০৯ কোটি ৪১ লাখ (২৮.০৯ বিলিয়ন) ডলার এসেছে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে। এ হিসাবে ৮২ দশমিক ০৪ শতাংশই এসেছে এই খাত থেকে। এর মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে ১২৩ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়। আর সদ্য সমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস-এই ১১ মাসেই রফতানি হয়েছে ১২৩ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। দেশটিতে প্রতিবছরই রফতানি বাড়ছে এবং মোট রফতানির প্রায় পাঁচ শতাংশ যাচ্ছে ইতালিতে। এছাড়া ইতালির অনেক উদ্যোক্তা কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাতে। সব মিলে ইতালীয়দের কাছে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ স্থানই ছিল। কিন্তু গুলশান হামলায় ৯ নাগরিক হত্যায় শঙ্কিত ইতালীয় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গুলশান হামলার কারণে ইতালির বাজারে পোশাক রফতানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা, বসলেন ইউনূসের পাশের চেয়ারে

» আজকের দিনটি গোটা জাতির জন্য আনন্দের: ফখরুল

» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

বিপাকে গার্মেন্টস শিল্প

জাকির সিকদার: গুলশানে জঙ্গি হামলায় একসঙ্গে ১৭ জন বিদেশি নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশে বিদেশিদের আতঙ্ক কাটছে না। এর আগে তাভেল্লা ও হোসি কোনিও নিহত হওয়ায় বিদেশিদের মাঝে যে আতঙ্ক ছিল, সেটা কাটিয়ে ওঠা গেলেও গুলশাল হামলার পর বিদেশিদের মধ্য নতুন আতঙ্ক সহজে কাটছে না। গুলশান হামলার পর বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যে সম্পৃক্ত অনেকে বিদেশিই নিজের দেশে চলে গেছেন। ওই হামলায় প্রধান টার্গেট বিদেশি নাগরিক হওয়ার কারণে সবার মধ্যে ভয় ঢুকে গেছে। কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এক বছরে কমেছে ৫০০০ কোটি টাকা। এছাড়া দুটি বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা বিপাকে ফেলেছে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক খাতকে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওই ঘটনার পর ক্রেতারা বাংলাদেশে আসতে চাইছেন না। এ খাতে কমর্রত বেশ কিছু বিদেশি নাগরিক নিজ দেশে ফিরে গেছেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক ক্রেতা সাময়িকভাবে আসতে চাইছেন না। অনেকে তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে বৈঠক করতে বলছেন। আন্তর্জাতিক একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্টাইজার পদে বাংলাদেশে কাজ করেন অ্যান্ডি (ছদ্মনাম)। গুলশান হামলার পর নিজের দেশে চলে গিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে আবার ঢাকায় এসেছেন। তবে এখন ব্যাপক সতর্কতা আর নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাকে। অ্যান্ডি বলছিলেন, ‘ওই হামলার পর আমি এখন বলতে গেলে বাইরেই যাই না। শুধু অফিস আর বাসা। একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে গেছে’। অ্যান্ডি ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় থাকেন। তার কাজের জায়গাটিও নিরাপদ। অ্যন্ডি ঢাকায় ফিরলেও

পোশাক খাতে সম্পৃক্ত অনেক বিদেশি এখনো বাংলাদেশে অনুপস্থিত।
হোলি আর্টিজান বেকারিতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল নীপিন গঙ্গাধরের। বিদেশি একটি বেসরকারি সংস্থার শীর্ষ পদে আছেন এই ভারতীয়। গুলশানে হামলার পর তার বন্ধুমহলের অনেকেই এখন ঢাকায় নেই।
তিনি বলেন, ‘হামলার কথা জেনে প্রথমে স্তম্ভিত হয়েছি। ওটা একটা নিরাপদ জায়গা ছিল। আমরা প্রায়ই সেখানে যেতাম। ওখানকার রুটি আমার বাসার নিয়মিত খাবার ছিল। ওই হামলা বিদেশিদের শঙ্কিত করে তুলেছে। কারণ হলো অনেকে ওই হামলার গোলাগুলোর শব্দ নিজ কানে শুনেছে। কোনো পত্রিকা পড়ে বা টিভিতে দেখে নয়।’
নীপিন জানান সবাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে তার বিদেশি বন্ধুরা আরো কিছুটা সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান। মূলত নিজেদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠাই কাজ করছে বলে জানান নীপিন।
গুলশানে নিহত ১৭ জন বিদেশি নাগরিকের মধ্য নয়জন ইতালীয়। তাদের কয়েকজন গার্মেন্ট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। জানা যায়, পোশাক রফতানির সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে থাকেন। এ ছাড়া নিয়মিত আসা যাওয়ার মধ্যে এ খাতে সম্পৃক্ত প্রায় ১৫ হাজার বিদেশি।
বাংলাদেশে গার্মেন্ট বাইং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম বলছিলেন, ‘তারা যে কথাটা বলেছে, আমরা ওয়াচ করব আগামী এক মাস দুই মাস। আমার মনে হয় এক মাস, দুই মাস আমাদের জন্য অনেক সময়’।
আমিনুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ থেকে কোনো ক্রয়-আদেশ বাতিল হয়নি। কোনো বিদেশি কোম্পানির ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ারও সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। তবে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অর্ডার কমে গিয়ে দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
‘আশঙ্কা করছি যারা বেশি অর্ডার দিত তারা কমিয়ে দিতে পারে। গ্রীষ্মকালীন ক্রয়াদেশের জন্য আমাদের জুলাই থেকে নেগোসিয়েশন শুরু হয়। আল্লাহ না করুক এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে আশঙ্কা তখন অ্যাবসলিউট হয়ে যাবে। প্রথম পর্যায়ে যেটা দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন’।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশিদের আতঙ্ক হবার বিষয়টি পোশাক রফতানিতে কী প্রভাব পড়বে তার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনই দেয়া যাবে না। তবে এ রকম পরিস্থিতি নতুন বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে।
‘ভারতের গত দুই তিন বছর ধরে যেসব পলিসি এবং প্ল্যান আমরা দেখছি তারা কিন্তু রেডিমেড গার্মেন্টসের ওপর একটা নতুনভাবে নজর দেয়া শুরু করেছে। চীন গার্মেন্টস রফতানিতে প্লাস ওয়ানে শক্তিশালীভাবে ঢোকার জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছে। মিয়ানমার এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পর একটা চেষ্টা করছে। আফ্রিকাতে অনেকে চেষ্টা করছেন যেহেতু তারা শূন্য-শুল্ক সুবিধা পায়’।
জনাব রহমান মনে করেন পোশাক খাত ছাড়াও গুলশান হামলা আরো কয়েকটি খাতে প্রভাব ফেলবে, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে দেখছি, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্নভাবে ফাইনান্সিয়াল আউটফো হচ্ছে। যারা উপার্জন করছেন তারা বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন ইলিগ্যালি আর যারা বাইরে উপার্জন করছেন ভেতরে আনছেন না। এ রকম অনিশ্চয়তা হলে এ ধরনের প্রবণতাগুলো শক্তিশালী হয়।’ তিনি বলছেন, এটা ছাড়াও যারা বিনিয়োগ করতে আসবেন তারাও কিন্তু চিন্তা করবেন যে, দীর্ঘমেয়াদে তারা যে বিনিয়োগ করছেন, বাংলাদেশে কি সে ধরনের পরিবেশ থাকবে যেখানে তারা বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভ করে সেই লাভ নিয়ে যেতে পারবেন!
দেশের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স আসে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশ থেকে। গত অর্থবছরে আটটি দেশের মধ্যে ছয়টি থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া তথ্য মতে, সৌদি আরব থেকে ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা এবং আরব আমিরাত থেকে ৮৭২ কোটি টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা কমে গেছে। সব মিলিয়ে ছয় দেশ থেকে এক বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা।
এ দিকে শুধু মধ্যপ্রাচ্য থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে না, কমে গেছে দেশের ২৮ সরকারি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের রেমিট্যান্স আহরণ। ব্যাংকগুলোর সমাপ্ত অর্থবছরের রেমিট্যান্স আহরণ আগের অর্থবছর (২০১৪-১৫) থেকে কমে গেছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও কৃষি ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যেÑ ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, স্টান্ডার্ড ব্যাংক, ইউসিবিএল, উত্তরা, এবি, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা, আএফআইসি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে তার দু-তৃতীয়াংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশ থেকে। আবার মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে বেশিরভাগ আসে সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও কুয়েত থেকে। কিন্তু সমাপ্ত অর্থবছরে দেশভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, রেমিট্যান্সের প্রধান বাজার এ তিন দেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে কম এসেছে অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে সমাপ্ত অর্থবছরে এ দেশ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ কমেছে রেমিট্যান্স। আরব আমিরাত থেকে ৮৭২ কোটি টাকা এবং কুয়েত থেকে ৩২০ কোটি টাকা সমমূল্যের রেমিট্যান্স কম এসেছে আগের বছরের চেয়ে। এর বাইরে বাহরাইন থেকে ৫৯২ কোটি টাকা, লিবিয়া থেকে ২৬৪ কোটি টাকা এবং ওমান থেকে ৩২ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা কম এসেছে।
আট দেশের মধ্যে প্রধান ছয়টি দেশ থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় সামগ্রিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯০৭ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার, যা সমাপ্ত অর্থবছরে কমে নেমেছে ৮৫৫ কোটি ডলারে।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, মূলত দুটি কারণে মাধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে।
এদিকে সারা বছরে গার্মেন্টস খাতের ৬০ শতাংশ পোশাকই গ্রীষ্মকালীন ক্রয়াদেশ থেকে পাওয়া যায়। আগামী মাস থেকেই স্প্রিং ও সামার মৌসুমের পোশাকের ক্রয়াদেশ আসবে। এ বিষয়ে বিজিবিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগস্টের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে আস্থার জায়গা তৈরি না হলে ক্রয়াদেশ কমার আশঙ্কা আছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ক্রয়াদেশও কম আসে, তাহলে লোকসান হবে প্রায় ২৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশে এক সপ্তাহের জন্য আসার কথা ছিল জাপানি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সাতজনের একটি প্রতিনিধিদল। তবে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দলটিকে বাংলাদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়নি। দেশের কয়েকটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে ক্রয়াদেশ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
একইভাবে তুরস্ক ও ফ্রান্সের তিনটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ভ্রমণ স্থগিত করেছেন। এর আগে জাপানি ফ্যাশন ব্রান্ড ইউনিকলো তাদের কর্মীদের বাংলাদেশ সফর বাতিল করে। সুইডেনভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম এ দেশ থেকে তাদের ব্যবসা সংকোচনের চিন্তাভাবনা করছে। অনেক বিদেশি ক্রেতাও নতুন করে ব্যবসা সম্প্রসারণের বিষয়ে নেতিবাচক মতামত দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে। এই সব কারণে বিদেশি পোশাক বাজার হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা করেছে ব্যবসায়ীরা।
এদিকে অনেক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের বিদেশি বায়াররা বাংলাদেশের বদলে দিল্লি, ব্যাংকক ও হংকংয়ে সভা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। তবে এর মধ্যে মার্কিন ২৮ প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা জোট ‘আল্যায়েন্স’ বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ক্রেতা জোট ‘অ্যাকর্ড’ বাংলাদেশে কর্মরত ইউরোপীয় কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টির কথা জানিয়েছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ষষ্ঠ বৃহত্তম বাজার ইতালি। সদ্য সমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের। একই সঙ্গে পোশাকশিল্পে বিনিয়োগও রয়েছে দেশটির উদ্যোক্তাদের। কিন্তু সম্প্রতি গুলশানের রেস্টুরেন্টে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ৯ ইতালীয় নাগরিক হত্যার ঘটনায় হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে দেশটির বাজার। কেননা ওই ৯ জনের মধ্যে ছয়জনই হচ্ছেন গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এ ঘটনায় ইতালীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকের মধ্যে বাংলাদেশি পণ্যের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট রফতানি আয়ের মধ্যে দুই হাজার ৮০৯ কোটি ৪১ লাখ (২৮.০৯ বিলিয়ন) ডলার এসেছে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে। এ হিসাবে ৮২ দশমিক ০৪ শতাংশই এসেছে এই খাত থেকে। এর মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে ১২৩ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়। আর সদ্য সমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস-এই ১১ মাসেই রফতানি হয়েছে ১২৩ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। দেশটিতে প্রতিবছরই রফতানি বাড়ছে এবং মোট রফতানির প্রায় পাঁচ শতাংশ যাচ্ছে ইতালিতে। এছাড়া ইতালির অনেক উদ্যোক্তা কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাতে। সব মিলে ইতালীয়দের কাছে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ স্থানই ছিল। কিন্তু গুলশান হামলায় ৯ নাগরিক হত্যায় শঙ্কিত ইতালীয় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গুলশান হামলার কারণে ইতালির বাজারে পোশাক রফতানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।