আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাখাইন থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি।
মিয়ানমার সফররত বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে আজ (বুধবার) সকালে রাজধানী নেপিডোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সু চি একথা বলেন। এক ঘণ্টার ওই বৈঠকে ১০ সদস্যের বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকের পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ হতে বাংলাদেশ সফর করার আমন্ত্রণ জানান। সু চি জানান, দুই দেশের সুবিধাজনক সময়ে তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন।
বৈঠকে সু চি জানান, কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে তার সরকার কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পাঁচটি প্রস্তাব এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এছাড়া বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সু চিকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত সমূহ অবহিত করেন। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্তের কথাও জানানো হয়েছে তাকে। সু চি এ ব্যাপারে একমত প্রকাশ করেছেন।
অপু জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধ জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণার বিষয়টি সু চিকে অবহিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘আমাদেশ দেশে কোনও সন্ত্রাসী প্রশ্রয় পাবে না। তবে অনুপ্রবেশকারীদের দ্রুত ফিরিয়ে না নিলে এদের অনেকেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যেতে পারে।’
গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন অঞ্চলে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয়। সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ সীমান্তে শুরু হয় রোহিঙ্গাদের ঢল। আট সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রোহিঙ্গাদের আসা এখনও বন্ধ হয়নি। ইতোমধ্যে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা আরও চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে গত কয়েক দশক ধরে।
মিয়ানমারের নেত্রী সু চি সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই’ হিসেবে বর্ণনা করলেও জাতিসংঘ একে চিহ্নিত করেছে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে।
স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, অভিযান শুরুর পর এক মাসেই রাখাইনে ২৮৮টি রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে; সেই বর্বরতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র: পার্সটুডে
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই