ন্ত্রী সুষমা স্বরাজ যখন দু’দিনের সফরে ঢাকা আসলেন, তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে এনিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
এ সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক ছাড়াও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি’র একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেছেন।
সে বৈঠক শেষে বিএনপি’র তরফ থেকে জানানো হয়েছিল যে ভারত বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন দেখতে চায়।
কিন্তু বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দল- বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র কাছে ভারত আসলেই কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলছেন, সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অংশ হিসেবে ভারতের সাথেও ভালো সম্পর্ক আছে আওয়ামী লীগের।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদলে ভারতের ভূমিকা নিয়ে যেসব আলোচনা আছে সেগুলোকে কিভাবে দেখে আওয়ামী লীগ?
এমন প্রশ্নে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ” বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনোই এটা মনে করে না। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক। জনগণ যার পক্ষে থাকবে তারাই জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে। জনসমর্থন যাদের নেই তারাই সবসময় বহির্বিশ্বের কাছে ধর্না দেয় এবং পরনির্ভরশীলতা দেখায়। আওয়ামী লীগ কখনো পরনির্ভরশীলতা দেখানোর প্রয়োজনীয়তা মনে করে না।”
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা যে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই সেটি বোঝা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে। মাস ছয়েক আগে তিনি কয়েকবার মন্তব্য করেছিলেন যে, ২০০১ সালে ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির প্রতিজ্ঞা করে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল।
এবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে বৈঠকের সময় বিএনপি নেতারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সে প্রতিনিধি দলে ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বিএনপির কাছে ভারত কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
মি: হোসেন বলেন, ” মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে ভারতের সাথে যে সম্পর্ক সেটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। অতএব আমরা মনে করি, বাংলাদেশের রাজনীতি, উন্নয়ন, সামাজিক বিষয় সবকিছু ভারতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু আমি কোনভাবেই মানতে রাজী নই যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কোন আনুকূল্য পাওয়ার চেষ্টা করে।”
বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের কাছে ভারতের গুরুত্ব কতটা সেটা খোলামেলাভাবে না বললেও বিশ্লেষকরা মনে করেন এটি নিয়ে এখন আর কোন রাখঢাক নেই।
“বিভিন্ন সময় অন্য যে শক্তিগুলোর কথা বললাম, তাদের সাথে ভারতের নামটা অবশ্যই আসে। এটাকে লুকোনোর কোন সুযোগ নেই। এটা একেবারেই প্রকট বা প্রকাশিত।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে বড় রাজনৈতিক দলগুলো ভারতের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবে। কারণ আঞ্চলিক রাজনীতির হিসেব-নিকেশ সেটিই ইঙ্গিত করছে বলে তাদের ধারণা।
সূত্র, বিবিসি