এফ আর টাওয়ারের মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে তার জন্য কী কী ব্যবস্থা তাদের পক্ষ থেকে নেওয়ার আছে সে বিষয়ে ভাবছেন বলে জানান বনানী সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দিন বাহার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অপরাপর স্থানীয় সংগঠনের নেতাদের সাথেও এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা, বৈঠক হয়েছে। আরও হবে আশা করি।”
তিনি বলেন, “অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম আমাদের দিক থেকেও আছে। সেগুলো কীভাবে ওভারকাম করা যায়, সে বিষয়ে সচেতনতার পাশাপাশি আমাদের কী করণীয় তা নিরূপন করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আমরা একটি সমাধান বের করতে পারব।”
এরইমধ্যে ওই এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট ও ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে বলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেসব ভবনের মালিকদের দু-এক দিনের মধ্যেই ডাকব। এছাড়া স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, সবাইকে ডেকে চিঠি দিব যেন গ্যাস, বিদ্যুতের বিষয়ে তারা যতটুকু সম্ভব নিজেদের নিরাপত্তা গ্রহণ করে।”
অগ্নিকাণ্ডের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ -রাজউককে দায়ী করে স্থানীয় এ জনপ্রতিনিধি বলেন, “সর্বনাশের মূল হল রাজউক। কোনো কিছু না দেখে খাতির করে এসব ভবনের অনুমোদন দিয়েছে। কয়টা ভবন নিয়মের মধ্যে হয়েছে সেটাই এখন দেখার বিষয়। এই হল অবস্থা আমাদের।
“এর থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটানো যায় তার জন্য সিরিয়াসলি পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নাই।”
বনানীর এই অগ্নিকাণ্ডের ক্ষত না শুকাতেই শনিবার ভোরে আগুন লাগে গুলশান ১ নম্বরের ডিএনসিসি মার্কেট লাগোয়া কাঁচাবাজারে। এতে কেউ নিহত না হলেও পুড়ে গেছে দেড়শর মতো দোকান।
এই প্রেক্ষাপটে ঢাকার ভবনগুলোতে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা দেখতে ১৫ দিনের বিশেষ অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
রাজউকের এই অভিযানে যে ভবনে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা যথাযথভাবে পাওয়া যাবে না, সেগুলো ‘প্রয়োজনে’ ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
এফআর টাওয়ারের নকশা ও অন্যান্য কাগজপত্র তলব
বনানী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এফআর টাওয়ারের মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের প্রতিনিধিদের ডেকেছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
দুপরে তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ফয়জুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভবন মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে ভবনের নকশার অনুলিপি চেয়েছেন তারা। আগামী রোববারের মধ্যে তাদের সেই কপিসহ ভবনের অন্যান্য কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
এই ভবন নিয়ে রাজউকের কর্মকর্তাদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “পূর্ত মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে, তারা রাজউকের অনুমোদন পত্রটি আমাদের দেখাবে। আমরা দেখব, রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কীভাবে আঠার তলার জায়গায় তেইশতলা হয়েছে ভবন। কোথায় গ্যাপ আছে আমরা খুঁজে দেখব।”
সূত্র, বিবিসি