আ হ জুবেদ: যেকোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সেবা তাদেরই করতে দেয়া উচিত যারা সদাসর্বদা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রার্থনা দোয়া এবং পুণ্যকর্ম করে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সুরক্ষার দায়িত্ব তাদের হাতে দেয়া উচিত যারা প্রকৃত ধর্ম জ্ঞানী।
কেননা প্রকৃত ধর্ম জ্ঞানী ছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কদর এবং মান অক্ষুণ্ণ রাখা অসম্ভব।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কোন ব্যাক্তি বিশেষের নয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মুল মালিক সেই ব্যাক্তি যার উদ্দ্যেশে এবং যার উপদেশিত পুণ্যকর্ম আমরা পালন করি তিনি মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আল-আমিন।
হয়তো হতে পারে কতিপয় ব্যক্তি ধর্মালয় গড়তে গিয়ে আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন; কিন্তু তাই বলে সেই ব্যক্তি কখনই কোনও ধর্মালয়ের মালিকানা দাবি করতে পারবেননা।
সত্য কথা অনেকের কাছে অপ্রিয় হলেও আমাকে তা বলতেই হবে যদি আমি নিজেকে নুন্যতম একজন সত্যবাদী ব্যক্তি হিসেবে দাবি করে থাকি।
যদিও আমি স্বীকার করছি একথা যে’ যতটা শুদ্ধতা একজন মানুষের মধ্যে হলে তাকে শুদ্ধ মানুষ বলা হয়ে থাকে ততটা শুদ্ধ মানুষ হওয়া অনেক দূরের কথা;বাস্তবে তার ধারে কাছেও আমি আজ অবধি যেতে পারিনি; তবে এমন শুদ্ধতার সংস্পর্শে নিজেকে নিয়ে যেতে নিরবধি প্রাণন্তর চেষ্টায় কোন ত্রুটি নেই, এবং মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করি এই বলে যেন সর্বজন প্রিয় একজন সাধারণ মানুষের ন্যায় বাকি জীবন পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হই।
অবশ্য আমাদের সকলের ক্ষেত্রেই আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করা উচিত।
শুরুর দিকে যে প্রসঙ্গে ছিলাম সেদিকে আলোকপাত করছি, আমি আমার ব্যক্তি জীবনে কখনই কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা এবং মান উন্নত করার দায়িত্বে ছিলাম না;এবং সেরকম দায়িত্ব নেয়ার যথাযথ যোগ্যতা বলেন আর বয়েসই বলেন তার কোনোটাই অর্জন করতে পারিনি।
কিন্তু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেটাই বলেন মসজিদ কিংবা মাদ্রাসা এইসব প্রতিষ্ঠানের কমিটি প্রধান ব্যাক্তি সহকারী ব্যাক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ আমাকে বড়ই হতাশ করে।
আমরা আশাপাশে অহরহ এমনসব মানুষদের দেখছি তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সাথে নেই কোনো সম্পর্ক কিন্তু শুক্রবার জুম্মার নামাজে সবার আগের কাতারে গিয়ে নামাজ আদায় করার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়।
ঐসব প্রকৃতির মানুষদের চেহারা আরো দেখা যায় যখন পবিত্র শবে মেরাজ-শবে কদর ইত্যাদি ধর্মীয় পবিত্র দিন গুলো আমাদের মাঝে আসে।
এদিকে শহর বলেন আর গ্রাম বলেন সর্বত্রেই দেখাগেছে যে’উপরোক্ত বেনামাজি এবং অযোগ্য ব্যক্তিরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাদ্রাসা বা মসজিদ কমিটির প্রধান/সহকারী ইত্যাদি হতে রীতিমতো সংশ্লিষ্ট এলাকায় সংগ্রাম শুরু করে দেয়।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে ঐসব অযোগ্য কমিটির প্রধান/ সহকারী দাবীদারদের সাথে আলাপ করে একসময় জানতে চেয়েছিলাম যে’ আপনারা কেন ঐসব মাদ্রাসা বা মসজিদ কমিটির প্রধান কিংবা সহকারী পদে নিয়োগ পেতে চাচ্ছেন।
তাদের সকলের উত্তর ছিল এরকম যে’আমরা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের ঘরের খেদমত করতে চাই এই পদাধিকার লাভের মাধ্যমে।
তখন আমি তাদের বলেছিলাম, দেখুন আপনার যদি সদিচ্ছা এবং অন্তরে মহান আল্লাহর জন্য খাটি প্রেম থাকে তবেই সম্ভব ঐসব পুণ্য কর্ম সম্পাদন করা; সেখানে কোন অবস্থানে থেকে এইসব কাজ গুলো করছেন বা করবেন সেটা অবশ্যই জরুরী নয়।
আপনি ঐসব কমিটির বাইরে বা সাধারণ একজন কর্মী হয়েও প্রাপ্ত উচ্চ পদাধিকারদের চেয়েও ভাল পুণ্য কর্মের নজির রাখতে পারেন। তবে এজন্য নিয়ত আমল এবং ঈমান মজবুত হতে হবে।
অতঃপর, তথাকথিত উচ্চ পদাধিকার দাবীদারদের মুখে আর একটি বাক্যও উচ্চারণ হয়নি।
আমার কিছু কথা বলার দায়িত্ব এবং কর্তব্যও ছিল; যা উপরোক্ত লেখার মাধ্যমে কিছুটা হলেও প্রকাশ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। এখন আপনি/আপনারা ভাবুন কি করবেন?
এদিকে সম্প্রতি খুশহাল পুর মাদ্রাসার জন্য আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করতে গিয়ে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশি-প্রবাসিদের মধ্যে সুসম্পর্ক এবং ঐক্য গড়ে তুলেছি যাহা আমাকে ভীষণ প্রশংসনীয় করেছে ঠিকই; কিন্তু এসবের প্রকৃত প্রশংসার দাবীদার প্রিয় আব্দুল আহাদ চাচা,প্রিয় বাবুল ভাই এবং আমার অত্যান্ত প্রিয় আব্দুল অধুদ চাচা।
কেননা উনাদের অনুপ্রেরনা আদেশ/উপদেশ এবং দিকনির্দেশনা ছাড়া অনেক কিছুই সম্ভব হতনা।
অতএব, শেষান্তে সহীহ বুখারীর একটি হাদিস উল্লেখ করেই বিদেয় নিচ্ছি …
প্রত্যেক ব্যাক্তি তার কাজের সেই ফলই পাবে ,যা সে নিয়ত করেছে।
আ হ জুবেদ
পরিচালক
অগ্রদৃষ্টি মিডিয়া গ্রুপ