অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে বৈঠকের জন্য প্রতিনিধিদলে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বঙ্গভবনে বিএনপির প্রতিনিধিদের নামের তালিকা পাঠানোর সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লেখা একটি চিঠিও রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছানো হয়।
ওই চিঠিতে বিএনপির প্রতিনিধি দলের আরো অন্তত তিনজন সদস্য বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিতে অসংখ্য বর্ষীয়ান নেতা রয়েছেন। ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় এসব নেতাদের উপস্থিত থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছে বিএনপি।
এ জন্য আরো অন্তত তিনজন সদস্যকে বঙ্গভবনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যায় কি-না? সে বিষয়টি সদয় বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানানো হলো।
মহাসচিবের লেখা এ চিঠি পৌঁছে দেন বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, মুনির হোসেন ও তাইফুল ইসলাম টিপু।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার জন্য বিএনপিসহ পাঁচটি দলকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ১০ জনের নামের তালিকা জমা দিতে বলে বঙ্গভবন।
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ অনুযায়ী রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিএনপির প্রতিনিধি দল যাবে বঙ্গভবনে। এছাড়া ২০ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টি, ২১ ডিসেম্বর এলডিপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও ২২ ডিসেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে ডাকা হয়েছে বঙ্গভবনে। বাকি নিবন্ধিত দলগুলোকেও পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে।
দলীয় সূত্রে আগেই জানা গেছে, বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, ড. মঈন খান, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী থাকবেন।
প্রতিনিধি দলে ১০ জনের বাধ্যবাধকতার কারণে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরো অন্তত চারজন সদস্য।
এরা হলেন এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সূত্র মতে, এমকে আনোয়ার অসুস্থ থাকায় বঙ্গভবনে যাওয়ার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ নেই। কিন্তু বাকি তিনজন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নিয়েই বঙ্গভবনে যেতে চান খালেদা জিয়া। সেই জন্যই প্রতিনিধি দলে আরও তিন সদস্য বাড়ানোর ব্যাপারে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিএনপির এ চিঠির কোনো জবাব আসেনি বঙ্গভবন থেকে। বিএনপি নেতাদের প্রত্যাশা বৈঠকের আগেই বিএনপির প্রতিনিধি দলে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে ইতিবাচক জবাব আসবে রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষে ১৩ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
প্রস্তাবে তিনি সব দলের সঙ্গে আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে সর্বজনশ্রদ্ধেয় বিতর্কমুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে শীতল প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন গঠন করার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে পারেন।
বর্তমান কমিশন গঠনের আগে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশন গঠন করেছিলেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।