বিতর্কিত এই ইসলামী বক্তার বক্তব্য প্রচার মুসলিম প্রধান দেশ মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশেই নিষিদ্ধ। জাকির নায়েকের দেশ ভারতও তাকে নিষিদ্ধের কথা ভাবছে।
সাম্প্রতিক গুলশান হামলায় জড়িতদের অন্তত দুজন ‘বিনামূল্যের এই টিভি চ্যানেলটি’ দেখে জাকির নায়েকের বক্তব্যের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে প্ররোচিত হয়েছিল বলে প্রকাশ পেয়েছে।
এনিয়ে আলোচনার মধ্যে বাংলাদেশে কেবল অপারেটরদের সংগঠন বাংলাদেশ কেবল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) সভাপতি মীর হোসেন আখতার শুক্রবার বলেছিলেন, তারা চ্যানেলটি বন্ধ করে দিতে চাচ্ছেন। তবে সরকারের নির্দেশনা না পেলে তা করতে পারছেন না।
তথ্যমন্ত্রী ইনু শনিবার বলেন, “এই টিভিটি সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে।
“মন্ত্রণালয়ের অফিস খুললেই কাজ শুরু হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে সরকারের স্ট্যান্ড আমরা স্পষ্ট করব।”
কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত আসবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আগামীকাল (রোববার) অফিস খুলবে। এরপর আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”
দুপুরে মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর রাতে কোয়াব সভাপতি মীর হোসেন বলেন, তারা তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। মন্ত্রী দুই-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে তাদের জানিয়েছেন।
পিস টিভি জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান। এ টিভিতে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দেন, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।
ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে জাকির নায়েকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষিদ্ধ। এমনকি মুসলিম প্রধান মালয়েশিয়াতেও জাকির নায়েকের বক্তব্য প্রচারের অনুমতি নেই।
জাকির নায়েকের কথায় প্ররোচিত হয়ে ভারতের কয়েক তরুণ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন বলেও খবর এসেছে।
এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জাকির নায়েকের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে ভারত সরকার। জঙ্গিবাদে উৎসাহ জোগানের অভিযোগ নিয়ে এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। মুম্বাইয়ে তার অফিস ঘিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতের সম্প্রচারমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু শুক্রবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “আমরা অভিযোগ তদন্ত করছি। কারণ এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, সেই সঙ্গে সামাজিক সম্প্রীতির জন্যও হুমকি।”
মালয়েশিয়াসহ যে সব দেশ নিষিদ্ধ করেছে, তাদের পদক্ষেপগুলো খতিয়ে দেখা যাচ্ছে বলে জানান ভারতের মন্ত্রী।