আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সেনাবাহিনী জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর চারদিক থেকে অব্যাহত চাপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা না দিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে।
রোববার ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি মুগাবেকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে বহিষ্কার করার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া টেলিভিশন ভাষণে বললেন, আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় দলীয় কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন তিনি। ভাষণ দেওয়ার সময় তার পাশে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার সেনাবাহিনী দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর জিম্বাবুয়েজুড়ে মুগাবের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়। দেশটির জনগণ প্রতীক্ষায় ছিল, পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে মুগাবে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন। কিন্তু গৃহবন্দি মুগাবে তার লিখিত ভাষণে পদত্যাগের বিষয়টি উল্লেখ না করে দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেননি মুগাবে। তিনি তাদের ক্ষমা করে সমস্যা সমাধানের কথা বলেছেন।
তবে এর আগে মুগাবের জানু-পিএফ পার্টি তাকে ও ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবেকে দল থেকে বহিষ্কার করে এবং প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে তাকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু টেলিভিশন ভাষণে এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।
সম্প্রতি ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বহিষ্কারের পর মুগাবে সরকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার তারা হারারে দখল করে। বুধবার সপরিবারে মুগাবেকে গৃহবন্দি করে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর সেনা-জনতা মিলে মুগাবের পদত্যাগের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু তিনি তার অবস্থানে অনড় রয়েছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরের মধ্যে পদত্যাগ না করলে প্রেসিডেন্ট মুগাবের বিরুদ্ধে অভিশংসন করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে জানু-পিএফ পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু মুগাবে তার মতোই এগোচ্ছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সময় পার করতে চাইছেন তিনি। আগামী মাসে দলীয় কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করার ঘোষণা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি আপাতত পদত্যাগের সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেন। এর ফলে সরকারের ভেতরে ও বাইরে কী ঘটে চলেছে, তা নিয়ে জনগণের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্যসূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি অনলাইন