জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া সংবাদদাতা : নার্স ও ওয়ার্ড বয়কে মারধরের জেরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অচলাবস্থা হয়ে পড়েছে। জরুরী বিভাগের চিকিৎসা ছাড়া পুরো হাসপাতাল রোগী শূণ্য। পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে কোনো রোগী নেই। নার্স রুম, ষ্টোর রুমসহ বিভিন্ন শাখায় তালা ঝুলছে। শুক্রবার (২২ জুলাই) মধ্য রাত থেকে রোগী ভর্তি বন্ধ থাকায় হাসপাতালে রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। শনিবার সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। নার্স ওয়ার্ড বয়কে মারধরের ঘটনায় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তবে হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে দায়িত্বরত কোনো চিকিৎসক ছিলনা বলে অভিযোগ করেছেন। হামলার ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। অন্যদিকে হাসপাতাল বন্ধ থাকার খবরে জরুরী রোগী বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে। আহত নার্স নুর জাহান আখতার জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৭ টায় পৌরসভার সৈয়দ বাড়ী এলাকার আয়শা আখতার (৫২) স্বামী রমজান আলী নামে এক রোগী পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। যথারীতি চিকিৎসা চলছিল এই রোগীর। রাত ৯ টায় রোগীর এক স্বজন চিকিৎসককে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গাল মন্দ করে রোগীকে রিলিজ নিয়ে চলে যাওয়ার জন্যও চেষ্ঠা করে। পরে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমান রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য লিখে দিলে রোগীর স্বজনরা রোগী নিয়ে চলে যান। হঠাৎ করে রাত আনুমানিক ১০ টায় অতর্কিতভাবে ৮/১০ জন ছেলে মোটর সাইকেল নিয়ে এসে নার্স নুর জাহান আখতার ও ওয়ার্ড বয় আবদুল গনিকে চেয়ার দিয়ে মারধর করতে থাকে। মারাত্বক আহত নার্স নুর জাহান আখতারকে উপজেলা হাসপাতালের একটি কক্ষে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওয়ার্ড বয় আবদুল গনিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ৫৬ জন রোগী চলে যায়। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরী বিভাগের রোগী ছাড়া হাসপাতালের রোগী ভর্তিসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দুপুরে পৌর এলাকার কুলকুরমাই গ্রামের অনিল বড়–য়া (৩৫) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ থাকায় তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন বলে জানান। উপজেলা হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার মিনারা বেগম জানান, দায়িত্বরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়ের উপর হামলার ঘটনায় আমরা কর্মবিরতিতে রয়েছি। দোষীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা না নিলে আমরা কঠোর কর্ম বিরতিতে যাবো। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজমুন আখতার হাসপাতালের অচলাবস্থা স্বীকার করে জানান, হাসপাতালের কর্মচারিদের উপর হামলার পরে চিকিৎসক,কর্মকর্তা কর্মচারীরা আমাকে লিখিত জানিয়েছে। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিধায় ওয়ার্ডে হয়তো চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বত্বন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার জানান, বিষয়টি আমাকে কেউ বলেনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।