আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে দোষীদের জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে সিনেটে একটি বিল প্রস্তাব করছে পাকিস্তান। বুধবার দেশটির সিনেটের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রেহমান মালিক বিলটি উপস্থাপন করেছেন।
এদিকে, অপহরণ ও ধর্ষণ সংক্রান্ত দেশটির বিদ্যমান আইনে সংশোধনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সিনেট কমিটি। এতে শিশু অপহরণ সংক্রান্ত পাকিস্তান দণ্ডবিধি ও কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউরে পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে। সিনেটের সচিবের কাছে লেখা এক চিঠিতেও রেহমান মালিক এসব প্রস্তাব করেছেন। ওই চিঠির একটি কপি পাকিস্তানি দৈনিক ডননিউজের হাতে এসেছে।
ফোজদারী অপরাধ আইন সংশোধন- ২০১৮ শিরোনামের ওই বিলটি সিনেটে প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু অপহরণ ও যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত পাকিস্তান দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ৩৬৪-এ ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব করেছে সিনেট। এতে অপরাধ প্রমাণিত হলে জনসম্মুখে দোষীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধানের প্রস্তাব আনা হয়েছে।
বর্তমান চলমান অধিবেশন শেষ হওয়ার আগেই সিনেটে বিলটিতে অনুমোদন দিতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রেহমান মালিক। তিনি বলেছেন, শিশু জয়নবের ধর্ষকের শাস্তি প্রকাশ্যে কার্যকরের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যেতে পারে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুর এলাকার ছয় বছর বয়সী শিশু জয়নবকে অপহরণ ও ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে সন্দেহভাজন মূল হোতা গ্রেফতার হওয়ার একদিন পর বুধবার সিনেটে ওই বিলটি আনা হয়েছে। এর আগে গত ৯ জানুয়ারি শিশু জয়নবের মরদেহ কাসুরের একটি ময়লার ভাগাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
জয়নব অপহরণের সময় তার বাবা-মা সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে গিয়েছিলেন। পরে মেয়ের মৃত্যুর খবরে তারা দেশে ফিরে আসেন। ধর্ষক গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের দাফন সম্পন্ন করবেন না বলে পুলিশকে আল্টিমেটাম বেধে দিলেও দুই সপ্তাহ পর এক সন্দেহভাজনের ডিএনএর সঙ্গে ধর্ষণের আলামতের মিল পাওয়া যায়। পরে মঙ্গলবার পাকপত্তন থেকে ওই ধর্ষককে গ্রেফতার করে পাঞ্জাব পুলিশ।
গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়রা ওই ধর্ষকের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে রাতে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক সম্মেলনে ধর্ষককে গ্রেফতারের ঘোষণা দেন।
একই সঙ্গে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ওই ধর্ষককে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানান তিনি। এসময় শাহবাজ শরীফ বলেন, জয়নবের পরিবার, পুরো দেশ ও তিনি নিজেও ধর্ষকের জনসম্মুখে ফাঁসি চান। এটাই সবার চাওয়া। সূত্র : ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।