স্টাফ রিপোর্টঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির বাইরের দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। এই আলোচনার মূল লক্ষ্য দলগুলোকে নির্বাচনের পথে নিয়ে আসা। তবে এই আলোচনা আওয়ামী লীগের কোনো নেতা করছেন না, করছেন সরকারের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রভাবশালী কয়েকজন কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কয়েকটি রাজনৈতিক দলও ব্যক্তির সাথে কথা বলা শুরু করেছেন।
ইতিমধ্যে অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আ.স.ম আবদুর রব এবং কর্নেল (অব:) অলি আহমেদের সঙ্গে কথা বলেছেন সরকারের একাধিক ব্যক্তি। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সাথে সরাসরি কথা বলবেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। যাদের সাথে কথা হয়েছে তারা সবাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে রাজী হয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে সবাই কিছু শর্ত দিয়েছেন।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সাথে ইতিমধ্যে তিন দফা আলাপ হয়েছে। প্রথম বৈঠকটি হয়েছে তার বারিধারার বাড়িতে। সূত্রগুলো বলছে, শর্ত সাপেক্ষে অধ্যাপক চৌধুরী বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজি হয়েছেন।
এক্ষেত্রে তিনি তিনটি শর্ত দিয়েছেন,
– প্রথমত নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ও ক্ষমতা দিতে হবে।
-দ্বিতীয়ত সরকারকে রুটিন কাজের মধ্যে থাকতে হবে।
-তৃতীয়ত নির্বাচন প্রচারণায় সমান সুযোগ দিতে হবে।
সূত্রগুলো বলছে, তৃতীয় বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে অধ্যাপক চৌধুরীর এই দাবীর সাথে একমত পোষণ করা হয়েছে। সদ্য গঠিত যুক্তফ্রন্টের আরেক নেতা আ.স.ম আবদুর রবের সাথেও সরকারের দুদফা বৈঠক হয়েছে।
সরকারী সূত্রগুলো বলছে, আ.স.ম আবদুর রব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীর সাথে একমত নন বলেই জানিয়েছেন। তবে তিনি সরকারের বেশ কিছু বিষয়ে সমালোচনা মুখর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মধ্যস্থতাকারী বলেছেন, তার (আ.স.ম আবদুর রবের) কিছু ক্ষোভ আছে। এগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।
এলডিপি নেতা কর্নেল (অব:) অলি আহমেদের সঙ্গেও সরকারের প্রতিনিধিরা আলোচনা শুরু করেছে। সরকারী সূত্রগুলো বলছে, এই আলোচনাগুলো এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে, সরকার আশা করছে, কর্নেল (অব:) অলি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন।
সরকার যুক্তফ্রন্ট, এলডিপি, জামাত এবং হেফাজতের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায় যেন বিএনপি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য এবং ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম ছাড়া সকল রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়।
সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেছেন, বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও যে অংশগ্রহণমূলক এবং উৎসবমুখর নির্বাচন করা সম্ভব সেটার জন্য আমরা কাজ করছি।
২০১৪র অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এখন থেকেই দলগুলোকে নির্বাচনের দৌড়ে আনতে চায় আওয়ামী লীগ। এর ফলে বিএনপির সহায়ক সরকারের দাবী অকার্যকর হয়ে যাবে।