বুধবার সচিবালয়ের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী জানান, “প্রাথমিকভাবে তিনটি এলাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৫৪ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হবে।”
শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গ্রামগুলোতে শহরের সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে গড়ে তুলতে চাইছে। তার ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, “এটি অত্যন্ত সুন্দর একটি প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ও বিশ্বাসের একটি প্রকল্প। দেরিতে হলেও শুরু করতে পেরেছি।”
জনবহুল বাংলাদেশে কৃষিজমি রক্ষার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাড়ি-ঘরগুলোকে এক পাশে নিয়ে আসা হবে এই প্রকল্পের অধীনে।
“তারা এখন যে বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে, তা এক স্থানে নিয়ে আসা হবে। আমাদের খরচে বাড়ি ঘর করে দেব। তারা খুবই কম সুদে কিস্তিতে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করে দেবে। এতে পুরো গ্রামের কৃষি জমি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করতে পারব।”
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সরকারের ব্যয়ও কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “তাহলে আমরা গ্রামে যে অবকাঠামো তৈরি করি, তা আর করা লাগবে না। আমরা আমাদের সার্ভিস ডেলেভারি অনেক কম খরচে করতে পারব।”
তিনি জানান, পল্লী জনপদে ভবনগুলো হবে ৪ থেকে ৫ তলা। এতে তিন থেকে চার রকমের কক্ষ থাকবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “এতে কেউ ঠকবে না। গ্রামের প্রতিটা মানুষ উপকৃত হবে। শহরে সে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থাকে, যেমন বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং সুবিধা থেকে শুরু করে শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা, বড়দের গল্প করার ব্যবস্থা, গরু-ছাগল পালনেরও ব্যবস্থাও থাকবে।”
বণ্টন ব্যবস্থার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “সবাই যে যার যতটুকু জমি আছে, সেটুকু জমি তার থাকবে। যে যেভাবে মালিক আছেন, সেভাবেই থাকবেন।”
গ্রামের মানুষ এতে রাজি হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটা ভালো উদ্যোগ। তারা এখানে আসবে বলেই আমরা এটা করছি। এতে তাদের ক্ষতি কোথায়? কোনো ক্ষতি তো নেই, বরং সরকারকে সাহায্য করা হল।”
গ্রামে অনেক ভূসম্পত্তির মালিক বনেদী পরিবারগুলো কি এ প্রকল্পের আওতায় আসবে- জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, “তারা আসবে কি না, এ মুহূর্তে বলতে পারছি না।
“তবে আমার মনে হয়, গ্রামের স্বার্থে তারাও আসবে। একটা ভালো উদ্যোগ তারা আসবে না কেন? বিদেশে আছে, আমরাও চালু করতে যাচ্ছি। সেখানে পারলে আমরা কেন পারব না।”
তিনি জানান, রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকায় ‘পল্লী জনপদ’ নির্মাণের পূর্ত কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম) অনুসরণে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমি তা বাস্তবায়ন করবে।
সাতটি স্থানে করার চিন্তা থাকলেও এরই মধ্যে তিনটি স্থানে কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এগুলো হয়ে যাওয়ার পর ফলাফল দেখে করব।”
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি তিনটি স্থানে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে।
“তিনটি ইউনিটের মধ্যে রংপুরে ৮০ শতাংশ, গোপালগঞ্জে ৮০ শতাংশ এবং বগুড়া ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে,” বলেন মুস্তফা কামাল।
তিনি জানান, এটা পাইলট প্রকল্প হিসাবে করা হচ্ছে। এটা পরিচালনার দায়িত্ব এলজিআরডি মন্ত্রণালয় পরে ঠিক করে দেবে।
সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম