ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল শিফায় তিন দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি অভিযানের মধ্যে অন্তত ২৪ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা নজিরবিহীন আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে ১২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েল জানিয়েছে। হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রেখেছে।
এর প্রতিক্রিয়া হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানিয়ে ওই দিন থেকেই ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের পাঁচ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় ১১৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। গাজার যেখানেই হামাসের উপস্থিতি আছে সেখানেই হামলা চালানো হবে বলে জানিয়েছে তারা।
তাদের অভিযান এখন প্রধানত গাজা সিটির আল শিফা হাসপাতাল কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। হাসপাতালটিতে ও এর নিচে ভূগর্ভে হামাসের কমান্ড সেন্টার আছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিজেদের অভিযোগের পক্ষে জোরালো কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি তারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আল শিফা হাসপাতালে কোনো অক্সিজেন ও জ্বালানি নেই, এখানে অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহও বন্ধ আছে; এ পরিস্থিতির কারণে তিন নবজাতক ও ২৪ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা বলেছেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না, এতে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে গত ৪৮ ঘণ্টায় ২৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।”
আল শিফায় অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি সেনারা এ পর্যন্ত কিছু একে-৪৭ রাইফেল, একটি টানেলের প্রবেশ পথ, কিছু সামরিক উর্দি ও বুবি ট্রাম্প যান খুঁজে পেয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে একে-৪৭ রাইফেল একটি সাধারণ জিনিস আর গাজায় বহু টানেল আছে; এগুলো সেখানে হামাসের কমান্ড সেন্টার আছে, ইসরায়েলের এই অভিযোগ বিশ্বাস করার মতো প্রত্যয়জনক কোনো প্রমাণ না।
১৯৭০ এর দশকে এই অঞ্চলটি পুরোপুরি ইসরায়েলের দখলে ছিল। তখন তারাই এই আল শিফা হাসপাতাল নির্মাণ করেছিল। যে ইসরায়েলি স্থপতি এর নকশা করেছিলেন তিনি হাসপাতালটির সঙ্গে বিস্তৃত বেইসমেন্ট জুড়ে দিয়েছিলেন। বিশাল এ হাসপাতালটিতে তল্লাশি সম্পন্ন করতে আরও সময় লাগবে বলে ধারণা বিবিসির।