ডেস্ক নিউজ : ছবি তুলে এরই মধ্যে দেশে বিদেশে অনেক খ্যাতি লাভ করেছেন ফটোগ্রাফার জিএমবি আকাশ। বিশ্বের অনেক গণমাধ্যমের শিরোনাম হওয়ার পাশাপাশি জিতে নিয়েছেন অনেক পুরস্কার। তার ছবিতে বেশিরভাগ সময়েই উঠে আসে সমাজের নানা অসঙ্গতির চিত্র।
সম্প্রতি তিনি নিজের ফেসবুক পেজে মায়া নামের এক যৌনকর্মীর ছবি শেয়ার করেছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন মায়ার জীবন ধারণ ও অনুভূতির কথা।
চলুন জেনে নেয়া যাক কীভাবে কাটে যৌনকর্মী মায়ার প্রাত্যহিক জীবন।
মায়া বলেন, প্রত্যেকেই বলেন, আমরা খারাপ নারী, কারণ আমরা এই কাজ করি; আমরা যৌনকর্মী। হ্যাঁ, আপনি ঠিক। আমি কখনোই দেখিনি আমাদের এখানে কোনো নারী শখের বসে দেহ ব্যবসা করেন। আসলে কেউই শখের বসে যৌনকর্ম করেন না। তবে আমি এমন অনেক পুরুষকে দেখেছি যাদের পরিবার ও স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও খায়েস পূরণের জন্য আমার কাছে আসেন। আমি এখানেই জন্ম নিয়েছি এবং আট বছর বয়স থেকে আমি এই কাজই করছি। নিরাপদ কোনো স্থানে পাঠাতে আমার মা অনেক চেষ্টা করেছেন। যৌনপল্লী থেকে দূরে পাঠাতে তিনি দিন-রাত কান্না করেছেন। আমার বয়স এবং তারুণ্যের কারণে আমার চাহিদা বেশি থাকায় আমাদের ম্যাডাম আমাকে এখানে থেকে যাওয়ার অনুমতি দেননি। নিজের মায়ের সামনে এমন কাজ করাটা অনেক কষ্টের হলেও এখানকার প্রত্যেক নারীই নিজেকে হত্যা করে মরদেহ হিসেবে টিকে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, আমাকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা খদ্দেরদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। খদ্দের পেতে আমি দাঁড়িয়ে নিজের দেহ নাড়াচাড়া করি এবং নানা অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করি। আমাকে অনেক শুকনা লাগায় আমার ম্যাডাম গেল মাসে আমাকে কয়েকটি ট্যাবলেট দিয়েছেন যাতে আমাকে আরও বেশি মোটা ও আকর্ষনীয় লাগে। পুরুষরা স্বাস্থ্যবান ও তরুণীদের বেশি পছন্দ করেন। একজন খদ্দের পাওয়া অনেক সময় যুদ্ধ জয়ের মতো, কারণ আমাকে অন্যান্য যৌনকর্মীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়; প্রতি রাতে আটজন খদ্দের। কিন্তু যখন আমি একজন খদ্দের পাই তখন আমার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। আমি হয়তো প্রতিযোগিতায় জিতে যাই, কিন্তু একই সময় হেরেও যাই। আমি নিজের বেঁচে থাকা ও খাবারের জন্য আমার দেহ ও সম্মানকে বিক্রি করি।
মায়া বলেন, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকায় ঘুমাতে গেলে আমার পা ব্যথা করে। খাওয়া, গোসল কিংবা টয়লেটে যাওয়ার জন্য আমরা বাড়তি কোনো সময় পাই না। দেরি করলে বোনাস হিসেবে চড় খেতে হয়। মেকআপ করার সময় আমরা কিছু বাড়তি সময় পাই। প্রতি রাতে টার্গেট পূরণের পর খুবই ক্লান্ত লাগে। এত কম পরিমাণেই আমি খাবার পাই যে পুরোটা খাওয়ার পরও নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে হয়। আমি কোনো পরিবার দেখিনি। আমি আশা করি কেউ আমাকে বিয়ে করবে এবং একদিন হয়তো আমার পরিবার হবে।
সুত্র : সময়নিউজ.টিভি