একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২২টি কমিটি করা হয়েছিল, এবার তা বেড়ে হচ্ছে ৩০০টি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম রোধে প্রতিটি সংসদীয় আসনের জন্য ‘ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি’ গঠন করছে নির্বাচন কমিশন।
এতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে ৩০০টি কমিটি গঠনের বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জানান, নির্বাচনী অপরাধ, আচরণবিধি এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিতে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়াদির অনুসন্ধান করে নির্বাচন কমিশনকে জানাবে এই কমিটি।
গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে তফসিলের পর নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ২৪৪ জন হাকিমকে নিয়ে ১২২টি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়েছিল।
এবার অনিয়ম রোধের কঠোর ব্যবস্থা হিসেবেই ওই কমিটির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান ইসি আহসান হাবিব।
তিনি বলেন, “আশা করি, বিচারিক কাজের ব্যবস্থাপনায় এ পদক্ষেপ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।
আর প্রচার চালানো যাবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
ইসির এবারের অনুসন্ধান কমিটিতে একজন যুগ্ম জেলা জজ বা প্রয়োজনবোধে সিনিয়র সহকারী জজ থাকবেন। অনিয়ম অনুসন্ধান করে তিন দিনের মধ্যে জানাতে হবে ইসিকে। তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের সময় পর্যন্ত এই কমিটি কাজ করবে।
কমিটিতে ভোটের আগে-পরে অন্তত চার দিনের জন্য আরও কয়েকশ বিচারকি হাকিম নিয়োগ করা হতে পারে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা। নির্বাহী হাকিমও থাকবেন সহস্রাধিক।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এবারও ৩০০ সংসদীয় আসনে আচরণবিধি প্রতিপালনে সহস্রাধিক নির্বাহী নিয়োজিত থাকবেন। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সহায়তা নিচ্ছে। ভোটের দিনের আগে-পরে আরও পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী হাকিম নিয়োগ করা হবে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৫০ হাজার জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। নির্বাচনী অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৭ বছর দণ্ডের বিধান রয়েছে।
তফসিল ঘোষণা থেকে ফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী, তার সমর্থক বা অন্য কেউ আইন ও বিধি লঙ্ঘন করলে বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে সংক্ষিপ্ত বিচার করে থাকেন নির্বাহী হাকিম, যা ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ তৈরিতে ভুমিকা রাখে।
আর বিচারিক হাকিমরা নির্বাচনী অপরাধের বিষয়ে পদক্ষেপ নেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে তফসিলের পরই ৭১৬ জন নির্বাহী হাকিম নিয়োগ করা হয়, পরে সব মিলিয়ে ছিল ১ হাজার ৩২৮ জন। বিচারিক হাকিম ছিল ৬৪০ জন।