মোঃ আরিফ জাওয়াদ, দিনাজপুর:- একদিন ছেলেরা বড় অফিসার, মেয়ে ডাক্তার হবে ; ঘুচে যাবে সংসারের সকল দুঃখ দুর্দশা। ঠিক এমন স্বপ্নের জাল বুনছেন এক রকমারি খাবার বিক্রেতা পিতা হাবিবুর ইসলাম (৫৬)।
হাবিবুরের বাড়ি দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানা সদরের প্রভেসর পাড়াতে। দেশ বিভক্ত হওয়ার পর পরই ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ আসেন, আর ঠিক তখন থেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন সেখানে।
হবিবুর জানায়- অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে দাওরা পর্যন্ত পড়ালেখা করছি। লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ থাকলেও পরবর্তীতে আর্থিক সংকটের কারণে পড়তে পারেন নি তিনি।
ছোট থেকে সন্তানদের প্রতি লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকায় উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। সন্তানদের পড়াশোনা যেন অর্থের অভাবে পণ্ড হয়ে না যায়, সেজন্য মাথার ঘাম পায়ের ফেলে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলছেন তিনি। হাবিবুরের ভাই-বোনের ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখা না করলেও শিক্ষার প্রতি প্রবল অনুরাগ থাকায় তার সব সন্তানদের শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলার যুদ্ধে নেমেছেন হাবিবুর।
হাবিবুর জানায়, “হামার বড় এক ব্যাটা পড়ছে এমএসসি তে ছোট ব্যাটা বিএসসিতে। বড় বেটি পড়ছে রাজশাহী ভার্সিটিতে আর ছোট বেটি পড়ছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে পড়ছে।”
ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে কখনো গাছ বিক্রি করেছেন ; আবার কখনোই জমি অন্যের কাছে বন্ধকও রাখতে হয়েছে তাকে।
হাবিবুর তার ছেলেমেয়েদের কখনো অন্যের টাকা দিয়ে সন্তানদের পড়াতে চান না। নিজের হালাল পথে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি তার চার সন্তানকে গড়ে তুলবেন, বলে জানান তিনি।
তার ছেলে-মেয়েরা যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন এ সংগ্রামী পিতা।