চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকেঃ ছাতকের এক ব্যবসায়ি পাথর বোঝাই নোৗকা দিয়ে এলাকাবাসী উপকার করে এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। মালামালসহ প্রায় কোটি টাকার নৌকা ফেরত পেতে তিনি মাসের পর মাস বিভিন্ন মহলে ধর্না দিচ্ছেন। একটি বেরিবাঁধ ভেঙ্গে হাওরের পাকা বোর ধান পানিতে তলিয়ে যাবার সময় এ নৌকা দিয়ে ভাঙ্গন রোধ করা হয়। এতে ধর্মপাশা উপজেলার নূরপুর গ্রামবাসী নির্বিঘেœ বোর ফসল ঘরে তোলেন। কিন্তু গত কয়েকমাস অতিবাহিত হলেও প্রায় ২২শ’ঘনফুট পাথর বোঝাই নৌকাটি পানির নীচ থেকে উত্তোলন করে ফেরত দেবার কোন উদ্যোগ নেয়নি গ্রামবাসী। জানা যায়, ছাতক শহরের বাগবাড়ি মহল্লার পাথর ব্যবসায়ি হাজি আব্দুর রহমান-বকুলের মালিকানাধিন আমিন নৌপরিবহন গত ২৩এপ্রিল সকালে ২২শ’ঘনফুট পাথর নিয়ে ছাতক থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। বিকেল ৪টায় নৌকাটি ধর্মপাশা উপজেলার ভোলাই নদী অতিক্রমকালে মান্নানঘাটের বাবুপুর বাজারের কাছে পৌছলে নূরপুর গ্রামের দিলোয়ার মিয়া, হুমায়ূন কবির, বাচ্চু মিয়া, ইউপি সদস্য আছাব মিয়া, সাবেক মেম্বার আব্দুর রহিম ও আব্দুল হাই, মীর কাশেম, আফজাল মিয়া, মজলু মিয়াসহ গন্যমান্য লোকজন স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের দোহাই দিয়ে নৌকাটি আটক করেন। তাদের ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’হাল জমির পাকা বোর ধান বেরিবাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানিতে হাওর তলিয়ে যাবার কথা বলেন। এসময় গ্রামের ছোট-বড় নারী-পুরুষ মিলে হাতে লাঠি, কুদাল, বেলচা, বাঁশ ও কাঠের টুকরোসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে আগাম বন্যার কবল থেকে বেরিবাঁধ রক্ষার প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু দেখা যায় বরিবাঁধের কয়েকস্থান ভেঙ্গে দ্রুত বেগে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। এতে মানবিক দিক বিবেচনা করেও স্থানীয় এমপি মোয়জ্জেম হোসেন রতনের কথা শুনে ফসল রক্ষার স্বার্থে ভাঙ্গন কবলিত বেরিবাঁধে পাথর বোঝাই আমিন নৌপরিবহনের নৌকাটি আড়াআড়িভাবে দেন। পরে নৌকার নীচ দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশের অজুহাত দেখিয়ে লোহার রড দিয়ে ছিদ্র করে নৌকাটি পানির নীচে তলিয়ে দেয়া হয়। এসময় চালকসহ নৌকার লোকজন বাঁধা দিলে নূরপুর গ্রামবাসী ধান কাটা শেষে ক্ষতিপূরণসহ নৌকাটি তুলে দেয়ার আশ্বাস দেন। ধান কাটার পর নৌকা মালিক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব খান, উপজেলা আলীগের সাবেক সভাপতি মনিন্দ্র বাবু, মাষ্টার আফতাব মিয়াসহ গন্যমান্য ব্যক্তির কাছে ধর্না দিয়েও তলিয়ে যাওয়া নৌকাটি উঠানোর কোন সুরাহা পাননি। এরপরেও উপজেলা চেয়ারম্যান নূরপুর গ্রামবাসীকে নৌকা তুলতে ১৫হাজার টাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে নৌকাটি উঠাতে ৫০হাজার টাকা ব্যয়ের মধ্যে আরো ৩৫হাজার টাকা নূরপুর গ্রামবাসী না দেয়ায় এখনো নৌকাটি উদ্ধার হয়নি। নৌকা মালিক হাজি আব্দুল রহমান বকুল জানান, দীর্ঘদিন থেকে পানির নীচে থাকায় মরিচা পড়ে কোটি টাকার নৌকাটি ক্রমশঃ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। তাদের উপকার করলেও এখন তারা সব কিছু ভূলে গেছে। এলাকাবাসীর মিথ্যে আশ্বাসে এখনো তিনি থানা বা আদালতের দ্বারস্থ হননি বলে জানিয়েছেন। কবে তার নৌকাটি উদ্ধার হবে এ আশায় তিনি এখন প্রহর গুনছেন।