কুয়েত প্রবাসী সংগঠক এস এম আব্দুল আহাদ হত্যার চার্জশিট ভুক্ত পলাতক আসামী হুসেন মুরাদ চৌধুরী কুয়েত থেকে বাংলাদেশে গেলে হযরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন বিভাগে নিয়োজিত পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারে রাতের আঁধারে খুন করা হয়েছিল কুয়েত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আবদুল আহাদকে।
এর আগের দিন ৩০ আগস্ট সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওরায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশের আশপাশে আহাদকে হত্যার চেষ্টা চালায় ঘাতকচক্র। পরদিন ৩১ আগস্ট পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আহাদকে খুন করে ঘাতকরা।
পরে আহাদ হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাসনা বেগম বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর ৬ জনকে আসামী করে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আহাদ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার এসআই অনুপ কুমার চৌধুরী জানান, কুয়েত প্রবাসী হুসেন মুরাদের পরিকল্পনায় পাঁচজন মিলে আবদুল আহাদকে খুন করা হয়।
তদন্তকারী এ কর্মকর্তা আরো জানান, মোবাইলের কললিস্ট ও আসামি মুরাদ হোসাইন রানার দেয়া জবানবন্দির সূত্র ধরে হত্যা রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
অবশেষে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, আহাদ হত্যাকাণ্ডে পরিকল্পনাকারী একজন এবং অপর পাঁচজনই ছিল সরাসরি কিলিংয়ে জড়িত।
২০১৯ সালের ১৬ই এপ্রিলে দাখিলকৃত চার্জশিটে এমন তথ্য উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর অনুপ কুমার চৌধুরী।
চার্জশিটে অভিযুক্ত ছয় আসামি হচ্ছে- ফখরুল ইসলাম শান্ত (৩৬), মাহমুদুর রহমান লায়েক (২৮), মুরাদ হোসাইন রানা (২৫), সোহেল আহমদ জালাল (২৭), হোসেন মুরাদ চৌধুরী (৪১) ও অভিষেক চক্রবর্তী প্রকাশ মিথুন (২৫)। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩০২/১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ছয় আসামির মধ্যে হত্যা পরিকল্পনাকারী আসামি কুয়েত প্রবাসী হোসেন মুরাদ চৌধুরী ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন। আহাদকে হত্যার সব আয়োজন করে দিয়ে তিনি ২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট আবার বিদেশে পাড়ি জমান। এরপর আসামি মাহমুদুর রহমান লায়েক হত্যাকাণ্ডের পর ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন। আরেক আসামি সোহেল আহমদ জালাল ২৪ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশ ছাড়লেও আর ফেরেননি। গ্রেফতার রয়েছেন আসামি ফখরুল ইসলাম শান্ত ও মুরাদ হোসাইন রানা। চার্জশিটে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে, সিরাজুল ইসলাম সুরুকী ও শহিদুল ইসলাম মামুনকে। ১৬ এপ্রিল আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। চার্জশিট নং-১৩৫/১৯।
এদিকে আহাদ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী চার্জশিট ভুক্ত পলাতক আসামি কুয়েত প্রবাসী হোসেন মুরাদ চৌধুরী ২৩শে নভেম্বর কুয়েত থেকে বাংলাদেশে গেলে হযরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন বিভাগে নিয়োজিত পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
পরে ২৪ নভেম্বর গ্রেফতারকৃত এ ঘাতককে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
সূত্র, ডেইলি স্টার ব্যানার ডট কম