ডেস্ক নিউজ : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আমার বক্তব্য খণ্ডিত করে জনমনে বিভ্রান্ত ছাড়ানো হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থা ঘুষ আর দুর্নীতিতে ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত। সে পরিস্থিতি তুলে ধরে উদাহরণ হিসেবে আমি তো সেসব পরিস্থিতি তুলে ধরেছিলাম। অথচ কতিপয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় আমরা বক্তব্য খণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত ২৫ ডিসেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে ‘খালি অফিসাররা চোর না’, ‘সহনশীল হয়ে ঘুষ খাবেন’ এবং ‘সহনশীল মাত্রায় ঘুষ খাওয়ার পরামর্শ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত এসব সংবাদ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ঘুষ-দুর্নীতিতে ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত। সেই সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্কুল-কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করার সময় বলতো -এর ভাগ উপরেরও দিতে হয়। শিক্ষক-কর্মচারীরা বাধ্য হয়েই ঘুষ দিতেন। অফিসাররাই খায় না, ঊর্ধ্বতন আমলারাও পায়, এমনকি মন্ত্রী হিসেবে আমিও পাই। স্বাভাবিকভাবেই ঘুষ প্রদানকারীরা মনে করতো শুধু অফিসাররা চোর নয়, মন্ত্রীও চোর। সেটি বোঝাতে আমি এমন কথা বলেছি।
নাহিদ বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর শিক্ষাভবনের একটি অনুষ্ঠানে আমার বক্তব্য বিকৃত করায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কতিপয় বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতামতও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। সেখানে আমি বলেছিলাম- আমাদের সম্পদ কম। যতটুকু সম্পদ আছে তার সবটুকু সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি, অপচয় এবং অপব্যয় বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে আমি শ্রদ্ধাপূর্ণ ব্যবহার করে থাকি। তাই কেউ কেউ আমার অসহায়ত্বের কথা বলে থাকেন। আমি মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত নমনীয় হলেও নীতি আদর্শ ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দৃঢ় ও কঠোর। দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে আমি অবিচল।
‘ঘুষ আদায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহের বক্তব্যে’ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করার বিষয়ে তিনি বলেন, টিআইবি তাদের কাজ করেছে। আমি কারো বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা দোষী করতে রাজি নই।
এরপর সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়ে ‘আমি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না। আমার বক্তব্য আমি তুলে ধরেছি। এর বাইরে আর কিছু নাই’ বলে তিনি সংবাদ সম্মেলন থেকে চলে যান।