ডেস্ক নিউজ : আজ সোমবার ভয়াবহ কোকো ট্রাজেডি দিবস। ৮ বছর আগে ২০০৯ সালের এ দিনে জেলার লালমোহন উপজেলায় কোকো লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৮২ জন যাত্রী প্রাণ হারায়। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় স্বজনহারা মানুষের কান্না আজো থামেনি।সেদিনের কথা মনে করে আজো আতঁকে উঠেন স্বজনহারা মানুষেরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলেও আজো লালমোহন-ঢাকা রুটে চালু হয়নি নিরাপদ লঞ্চ। এখনও ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে চলছে অধিকাংশ লঞ্চ।
এলাকাবাসী জানায়, কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজনহারা লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে নূরে আলম সাগর, তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইয়াসমিন, শ্যালিকা হ্যাপি বেগমকে হারিয়েছেন। নূরে আলম ঈদুল আজহা উপলক্ষে নববধূ ও শ্যালিকাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু সেই দুর্ঘটনায় ৩ জনই মারা যায়।
আব্দুর রশিদের পরিবারের মতো কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজন হারা অন্যান্যরাও তাদের কান্নাকে চেপে রাখছেন অতি কষ্টে। স্বজন হারানোর শোকে কাতর ওই সকল পরিবার এখন বাকরুদ্ধ।
একই এলাকার বাকলাই বাড়ির শামসুন নাহার স্বামী, সন্তান, দেবরসহ একই বাড়ির ১৬ জন নিয়ে কোকো লঞ্চে রওনা হয়েছিল বাড়িতে ঈদ করার জন্য। বাড়ির কাছের ঘাটে এসেই লঞ্চডুবিতে নিহত হয় তার মেয়ে সুরাইয়া (৭), ভাসুরের মেয়ে কবিতা (৩) ও দেবর সোহাগ (১৩)। সেই থেকেই শামসুন নাহার মেয়ের শোকে কাতর। শামসুন নাহারের মত কোকো-৪ লঞ্চ দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন পিতা-মাতা, কেউ হারিয়েছে সন্তান, কেউবা ভাই-বোন আর পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা থেকে ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ভোলার লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। রাতে লালমোহনের নাজিরপুর ঘাটের কাছে এসে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ডুবে যায় লঞ্চটি।
এদিকে কোকো ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে ভোলার লালমোহন, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিন উপজেলায় বিশেষ স্মরণসভা, দোয়া – মোনাজাত, কালো পতাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।