অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক স্কুল ছাত্রীকে যৌণ হয়রানির প্রতিবাদ করার কারণে বখাটেদের হামলায় অন্ত:স্বত্তা মহিলাসহ সংখ্যালঘু অধ্যূষিত ওই গ্রামের কমপক্ষে ১২জন গ্রামবাসী আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে না যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে স্কুলের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আহত, স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, উপজেলার সাহেবেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা সংখ্যালঘু মন্টু হালদারের বারপাইকা স্কুলের ১০ম শ্রেণী পড়–য়া মেয়েকে যৌণ হয়রানি করে আসছিল পশ্চিম বারপাইকা গ্রামের আলমগীর শাহ’র ছেলে নিশাত শাহ (২২)। তাকে সহয়তা করে আসছিল একই এলাকার বিএনপি ক্যাডার এবং হরতালে পেট্রল দিয়ে গাড়ি পোড়ানো মামলার আসামী আনোয়ার শাহ’র ভাই রহিম শাহ ও তার বন্ধু একই এলাকার মতি মোল্লার ছেলে মশিউর। গত বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রী স্কুলে আসার পথে তাকে যৌণ নিপীড়ণের সময় বারপাইকা স্কুলের পাশের বাড়ির গোবিন্দ সরকার এর প্রতিবাদ করে। গোবিন্দর প্রতিবাদের জের ধরে গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে উল্লেখিত তিন বখাটের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জনের একটি দল আকস্মিক গোবিন্দর বাড়িতে গিয়ে তার উপর হামলা চালায়। এসময় গোবিন্দকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে একই এলাকার তপন বল্লভ ও তার অন্ত:স্বত্বা স্ত্রী কণিকা বল্লভ। হামলাকারীরা তাদের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এলাকায় হৈচৈ শুনে হামলাকারীদের প্রতিহত করতে এসে তাদের হামলার শিকার হয়ে আহত হন ওই গ্রামের জয়ন্ত বল্লভ (২০), পলাশ বাড়ৈ (১৮), নান্টু কীর্তুনীয়া (২২), কমলেশ বাড়ৈ (২৫), পলাশ মন্ডল (২৩), ইভেন বাড়ৈ (২০), লিটন পান্ডে (২৫), বিপুল বাড়ৈ (২৩), লিটন বাড়ৈ (২০) সহ অন্তত ১২জন গ্রামবাসী। গুরুতর আহতাবস্থায় তপন বল্লভ ও তার স্ত্রী কণিকাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলা চলাকালীন সময়ে ওসিকে বিষয়টি অবহিত করলেও থানা থেকে কোন পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি বলে আহতরা অভিযোগ করেন।
বারপাইকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র নাথ হালদার ও প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার বাড়ৈ জানান, এঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এব্যাপার রতœপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা সরদার বলেন, খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন তিনি। আলৈঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আহতদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।