নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গত ১২ই জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় কুয়েত সিটিস্থ রাজধানী হোটেলে যথাযথ মর্যাদার সাথে পালিত হলো ৪৫ তম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কুয়েত শাখার বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নেওয়াজ নজরুলের সঞ্চালনায় ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুয়েত শাখার সভাপতি শেখ আকারামুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল কুয়েত’র সভাপতি লুতফুর রহমান মুখাই আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হুসেন পাটুয়ারী, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক আব্দুর রউফ মাওলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল আলম সফি, আওয়ামীলীগ কুয়েত শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ আলম বাদল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুম আহমেদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বারেক আহমেদ, আওয়ামীলীগ কুয়েত শাখার সাবেক সভাপতি সিকান্দর আলী, আওয়ামীলীগ কুয়েত শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস,এম,আব্দুল আহাদ, জাহিদুল হক, শহিদুল ইসলাম পলাশ, প্রজন্ম লীগ কুয়েত শাখার সভাপতি ময়নুল আল-ইসলাম,জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিশেষ এই দিনের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেতৃবৃন্দরা বলেন, কুয়েতে আসন্ন কাউন্সিলে আওয়ামীলীগের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতৃবৃন্দের মনোনীত সভাপতি প্রার্থী আতাউল গনি মামুন ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ফয়েজ কামালকে জয়যুক্ত করতে আপনাদের সাহায্য- সহযোগিতা আমরা কামনা করছি। মূল আলোচ্য বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে নেতৃবৃন্দরা বলেন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিধ্বস্ত দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রশ্নটি যখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি তখন ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে তিনি সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের দখলদার সামরিক জান্তা তাঁকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে আটক রাখে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের বন্দিশালায় অসহনীয় নির্যাতনের মধ্যে এবং প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুণছিলেন। তাঁর জন্য কবর পর্যন্ত খনন করা হয়েছিল।
নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, অপর দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী অভূতপূর্ব জনমত গড়ে উঠেছিল। সকল মহাদেশের অযুত কোটি মুক্তিকামী মানুষ এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তাঁর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানি বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয়ে তাঁকে মুক্তি দেয়। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি তরান্বিত করে; তিনি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন। স্বয়ং জাতির জনক তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে।আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১০ জানুয়ারি এই ঐতিহাসিক দিবসকে আমাদের পালন করতে হবে নতুন আঙ্গিকে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং সুদীর্ঘ সংগ্রামী জীবন থেকে প্রেরণা নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদেরকে নতুনভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কুয়েতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দরা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠান চলাকালে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে সমাবেশস্থল।
বিশেষ এই দিনটির উপর তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা, বক্তব্য সহ নানান কার্যক্রমের পর নৈশভোজের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।