
ঢাকা: প্রায় ৪০ দিন ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চলছিল, যার কারণে অনেক কর্মকর্তা অফিসেও আসেননি। অথচ এই দীর্ঘ সময়েও ডিএসসিসির গাড়িতে অস্বাভাবিক হারে তেল খরচ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাভাবিক কার্যদিবসের মতোই মে ও জুন মাসে কোটি কোটি টাকার জ্বালানি খরচ দেখানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কার্যত কোনো কাজ না হলেও এই বিপুল পরিমাণ তেল কোথায় গেল?
স্বাভাবিক সময়ের মতোই তেল খরচ
ডিএসসিসির নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী, সংস্থাটির জ্বালানি বাবদ মাসিক খরচ প্রায় ৫ কোটি টাকা। এপ্রিল, মে ও জুন মাসের খরচের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মে ও জুন মাসে নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও তেলের খরচ স্বাভাবিক সময়ের মতোই ছিল। কর্মকর্তারা অফিস না এলেও তাঁদের জন্য বরাদ্দ করা গাড়ির জন্য প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ লিটার করে তেল খরচ দেখানো হয়েছে।
দুর্নীতি ও অপচয়ের অভিযোগ
দক্ষিণ সিটির অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীই এই অস্বাভাবিক খরচের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, যখন কোনো প্রশাসনিক কাজই হচ্ছিল না, তখন এই বিপুল পরিমাণ তেলের খরচ দেখানো সরাসরি দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাগরিকদের করের টাকায় পরিচালিত একটি সংস্থায় এমন অনিয়ম স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চরম অভাবের দৃষ্টান্ত।
প্রশাসকের আশ্বাস
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তা অফিস না করেও তেলের জন্য অর্থ তুলে থাকেন, তবে তা অন্যায়। তিনি বিষয়টির তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেন। যদিও এই ধরনের অনিয়ম নতুন নয়, তবে নগর ভবনের অচলাবস্থার সময়ে এটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নাগরিক সমাজ এখন এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, যাতে জনগণের অর্থের অপচয় বন্ধ হয় এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।











