অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি বলেছি মাত্র রেমিট্যান্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করছেন কিছু সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
দল-রাষ্ট্র দুটি ভিন্ন বিষয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকবেই। গণতান্ত্রিক দেশে থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু রাষ্ট্রের নুন্যতম ক্ষতি হোক সেটি চাইবেন কেন?
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়েছে। পক্ষে-বিপক্ষে অনেকই ছিলেন। থাকাটাই স্বাভাবিক,যেহেতু বাংলাদেশের অতীত গণতান্ত্রিক ইতিহাস এমন অনেক প্রমাণ ধারণ করে।
যে কোনো ক্ষমতাসীন সরকার ভালো কিছু করলেও এর বিরোধিতা করতেই হবে, এই নীতিতে বিশ্বাসী বিরোধী দলের অবস্থানে থাকা চরিত্রের মানুষ গুলো।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছে আমাদেরই সন্তানেরা, আমরা পিতা হয়ে এর বিপক্ষে অবস্থান নিই কীভাবে?
আবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে আমার সন্তানেরা যদি সীমা লঙ্ঘন করে; তাহলে সেটি আমি মেনে নেব কেন?
আমি বাংলাদেশের নাগরিক, আমাকে যদি সরকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কিংবা আমার ন্যায্য দাবি পূরণ না করে, তাহলে অবশ্যই আমি প্রচলিত নিয়মে আমার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করবো।
কিন্ত কোটা সংস্কার এর নামে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের বাইরেও বড় একটি অংশের সন্ত্রাসীরা যেভাবে বাংলাদেশের বিরাট ক্ষতি করেছে এর দায় নেবে কে? প্রাণহানি ঘটেছে ছাত্রদের ও পুলিশের, এর দায়ভার নেবে কে? এর জবাব কী আছে?
এদিকে বাংলাদেশে যখন এমন একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা হয়ে গেলো, বিদেশে এর নেতিবাচক চিত্র সবার সামনে চলে আসলো।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা গুটি কয়েক প্রবাসী বাংলাদেশীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের উস্কিয়ে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান ধরণের মিথ্যাচার শুরু করেন।বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের তারা নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি ভুয়া ও অসত্য ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারেও লিপ্ত থাকেন ওইসব প্রবাসীরা।
প্রবাসীরা জীবন আর জীবীকার তাগিদে বিদেশে আসেন, স্বভাবতই প্রবাসীরা যে দেশে আছেন, সেদেশটির আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন; কিন্তু গুটি কয়েক প্রবাসীরা এর তোয়াক্কা না করে রীতিমতো অনেক দেশে আইন বিরোধী মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
শুধুমাত্র ওইসব প্রবাসীরা এটুকু করেই ক্ষান্ত থাকেনি, তারা বিশ্বের সব দেশের প্রবাসীদের বাংলাদেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে যাচ্ছে। এবং হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এসব অপপ্রচার কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারিনা। দেশে একেবারেই টাকা না পাঠালে কার ক্ষতি? আমার? অবশ্যই না। হুন্ডিতে টাকা পাঠালে কার ক্ষতি? আমার? অবশ্যই না। বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে কার ক্ষতি? আমার? অবশ্যই না। দেশ এগিয়ে গেলে কী আমি একাই সুবিধাভোগী হবো? অবশ্যই না।
আমি কী কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলেছি? অবশ্যই না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিভিন্ন লেখাকে কেন্দ্র করে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
আমি কথা বলেছি দেশের পক্ষে, অবশ্যই সুনির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়। দেশে ছাত্র-ছাত্রী,পুলিশ ও সাধারণ মানুষেরও প্রাণহানি হয়েছে সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনের ঘটনায়।
সবার মতো আমিও ব্যথিত, কষ্ট পাচ্ছি। এর সুবিচার হোক, কারো প্রতি অবিচার হোক সেটি কখনো চাইনি, চাইবোও না। অন্যদিকে, দুর্বৃত্তরা দেশের সীমাহীন ক্ষতি করেছে এটি কেন মেনে নেবো?
এসব কথা বলার কারণে হয়ে গেলাম দালাল। আমার প্রশ্ন দেশের পক্ষে কথা বলায় সে কেন দালাল?