আমাদের জীবন আমাদের সবচেয়ে প্রিয় কিছু। জয়ী হবার জন্য জীবন সম্পর্কে কিছু ইতিবাচক ধারনা পোষণ করতে হবে। সামান্য কিছু চিন্তা চেতনা, নিয়মনীতি বদলে দেবে আমাদের জীবনযাত্রা।
ইতিবাচক ধারণাগুলো জীবনকে করবে আরও বেশি আনন্দময় আরও নীরোগ।
জীবন মানেই দুঃখ-কষ্ট, না-পাওয়া আর ব্যর্থতার গল্প নয়। আসুন, সুন্দরভাবে বাঁচি। মেনে চলি জীবনযাপনের সামান্য কিছু নিয়মনীতি। যেমন ঃ
১) খাবার হোক পুষ্টিসমৃদ্ধ
***************************
খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খান। শুধু বিদেশি ফল নয়, দেশি ফলেও রয়েছে অনেক পুষ্টি। ফল বাসায় আনার পরে অন্তত ৩০ মিনিট বিশুদ্ধ পানিতে ভিজিয়ে রাখেন।
এতে ফলের ভেতরের রাসায়নিক দ্রব্য বা ফরমালিনের কার্যকারিতা একটু হলেও কমে যাবে।
ছোটবেলা থেকেই ভাত, রুটি, মিষ্টি, ফাস্ট ফুড, পানীয়, অতিরিক্ত তেল, মসলাজতীয় খাবারের পরিবর্তে শাকসবজি, ফল, সালাদের ওপর অভ্যাস হওয়া উচিত। প্রাণিজ প্রোটিন (গরু, খাসি, মুরগির মাংস) কিনতে সামর্থ্য না হলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন (ডাল, শিমের বিচি, বিভিন্ন রকমের সবজি, ফল) খান।
২) পান করুন প্রচুর পরিমাণে পানি
******************************
প্রতিদিন দুই-আড়াই লিটার পানি পান করুন। পানি দেহের প্রতিটি অংশে পৌঁছে রক্ত চলাচলকে নিশ্চিত করে। ঘাম আর মূত্রের সাহায্যে রোগ-জীবানুকে দেহের বাইরে বের করে দেয়। তবে কিডনির জটিলতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের চিকিৎসকের পরামর্শে পানি পান করা উচিত। কারণ, কিডনির সমস্যা থাকলে ইচ্ছামতো পানি পান করা যায় না। নিয়ন্ত্রণে রাখুন ডায়াবেটিস, ওজন, ব্লাডপ্রেসার।
৩) চেক-আপ করান পুরো দেহের
****************************
বছরে অন্তত একবার পুরো দেহের চেকআপ করান। যেকোনো অসুখকে তুচ্ছ মনে করে অবহেলা করবেন না।
সর্বদা হাসিখুশি থাকুন। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা অকালেই ডেকে আনে ডায়াবেটিস, হাইব্লাডপ্রেসার, মাইগ্রেনসহ নানা রকম মানসিক সমস্যা। সময় পেলেই হাঁটুন। সুযোগ ও সম্ভব হলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করুন। এতে হৃৎপি-ের কর্মক্ষমতা বাড়বে। ফলে পায়ের পাতা থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পুরো দেহে রক্ত সরবরাহ বাড়বে।
৪) পরিহার করুন মাদকদ্রব্যসহ
*************************** যাবতীয় নেশা (পান, বিড়ি, জর্দা, গুল বা তামাক পাতা) থেকে দূরে থাকতে হবে । এই নেশাজাতীয় দ্রব্যগুলো ঘুণে ধরা পোকার মতো দেহকে নিঃশেষ করে দেয়। তখন দেহে বসতি গড়ে আরও অনেক অসুখ।
৫) গাছ লাগান, পরিবেশ বাচান
***************************
বেশি করে গাছ লাগান ও অন্যকেও উৎসাহিত করেন। এতে রোধ হবে পরিবেশদূষণ। সম্ভব হলে বাসার ব্যালকনিতে গড়ে তোলেন আপনার ছোট্ট বাগান।
এতে বাসায় অক্সিজেন সরবরাহ বাড়বে, যা আমাদের দেহের জন্য ভীষণ উপকারী।
৬) গুরুত্ব দেন শখের কাজে
**************************
একেকজনের ভালো লাগার কাজ একেক রকম হয়। ভালো লাগার কাজগুলোকে (লেখালেখি, বাগান করা, গান শোনা, খেলাধুলা ইত্যাদি) ব্যস্ততার মাঝেও বাঁচিয়ে রাখা উচিত । এতে মন ভালো থাকবে।
সামান্য কিছু চর্চা আর অভ্যাসের পরিবর্তনে আপনার জীবন হোক আরও প্রাণবন্ত। আসুন, সুন্দর করে বাঁচি।
ফারহানা মোবিন
লেখক, চিকিৎসক ও উপস্থাপিকা