ধর্ম ও দর্শন ডেস্ক : যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিনে ছয়টি কাজ করবে, সে জুমু‘আর নামাযের যাওয়ার পথে প্রতি কদমে (পা ফেলায়) এক বছরের নফল নামায ও এক বছরের নফল রোযার সওয়াব পাবে।
ছয়টি কাজ এই:
১. জুমু‘আর নামাযের উদ্দেশ্যে ভালভাবে গোসল করা।
২. ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে (আযানের অপেক্ষা না করে) মসজিদে যাওয়া।
৩. পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৪. ইমাম সাহেবের নিকটে বসা। অর্থাৎ, যতদূর সম্ভব সামনের কাতারে বসা।
৫. মনোযোগ সহকারে খুৎবা শুনা।
৬. খুৎবার সময় কোন কথা না বলা ও কোন কাজ না করা। (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ, হাদীস নং- ১৭৫৮/ নাসায়ী, হাদীস নং- ১৩৮৪, তিরমিযী, হাদীস নং- ৪৯৬/ আবু দাউদ, হাদীস নং- ৩৪৫)
বি.দ্র. কোন সহীহ হাদীসে বর্ণিত আমল ছাড়া অন্য কোন নফল আমলের ব্যাপারে এত বেশি ফযীলতের কথা পাওয়া যায় না।
জুম‘আর দিনের অন্যান্য আমল:
১. সূরা কাহাফ পড়া। (কমপক্ষে ১০ আয়াত) (মুসলিম হাদীস নং ৮০৯; তাফসীরে ইবনে কাসীর-৩/৭৯)
ফায়দাঃ দাজ্জালের ফিতনা হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
২. সালাতুত তাসবীহ নামায পড়া। (আবু দাঊদ হাদীস নং ১২৯৭)
রাকা‘আতঃ এক সাথে ৪ রাকা‘আত অথবা, ২, ২ রাকা‘আত করে পড়া।
ফায়দাঃ সকল প্রকার গুনাহ থেকে মাফ পাওয়া যায়।
৩. উত্তম পোশাক ও খুশবু লাগিয়ে নামাযে আসা। (বুখারী হাদীস নং ৮৮৩, ৮৮৬)।
খুশবু ব্যবহারে নিম্নোক্ত নিয়্যত করবে। এটা হুজুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাত। আমাদের শরীরের ঘামের গন্ধ হতে যাতে অন্যদের কষ্ট না হয়। মুসলমান ভাইদের অন্তর খুশি করা। হুজুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন –“যারা গরীব, খুশবু কেনার টাকা নেই, তাদের জন্য গোসল হচ্ছে খুশবু।”]
৪. দুই খুতবার মাঝে যখন ঈমাম সাহেব বসে তখন অন্তরে দু‘আ করা, মুখে নয়। (তিরমিযী হাদীস নং ৫২৮)
ফায়দাঃ এ সময় দু‘আ কবুল হওয়ার ওয়াদা রয়েছে।
৫. আছরের পর ৮০ বার এই দুরুদ শরীফ পড়া- (আদদুররু মানযুদ ফিন সালাতি ওয়াস সালামি আলা সাহিবিল মাকামিল মাহমুদ-পৃষ্ঠা ১৬০)
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدَن النَّبِيِّ الأمِّيِّ وَعَلَى الِه وَسَلِّمْ تَسْلِيْمًا
(আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিনীন নাবিয়্যিলি উম্ম্যিয়্যি ওয়া ‘আলা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা)
ফায়দাঃ আল্লাহপাক ৮০ বৎসরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। যদি গুনাহ না থাকে তবে জান্নাতে তার মর্তবা বৃদ্ধি করবেন এবং তার আমল নামায় ৮০ বৎসরের ইবাদতের সাওয়াব লিখে দিবেন।
৬. বেলা ডোবার আগে (মাগরিবের) ১০/১৫ মিনিট আগে মসজিদে এসে দু‘আয় মশগুল হওয়া। (আবু দাউদ-হাদীস নং ১০৪৮)
ফায়দাঃ এ সময়ও দু‘আ কবুল হওয়ার ওয়াদা রয়েছে।
৭. এ দিনে অন্য দিনের তুলনায় বেশী দুরূদ পড়া। (আবু দাউদ হাদীস নং ১০৪৭)।
আল্লাহ পাক আমাদের বেশি বেশি নেক আমল করে তাঁর পেয়ারা বান্দা হবার তাওফীক নসীব করুন। আমীন !
লেখক : মোস্তফা কবীর সিদ্দিকী
লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক