অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলায় দলীয় নেতা নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের নেতৃত্ব সঙ্কটের অবসান ঘটিয়ে নেতাকর্মীদের চমক দেখাতে সহসাই নতুন নেতার নাম ঘোষণা করতে পারে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমনই আভাস পাওয়া গেছে দক্ষিণ বাংলার একমাত্র কান্ডারী বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো থেকে।
দলীয় সূত্র মতে, ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ইউসুফ মোল্লার অকাল মৃত্যুর পর থেকেই মূলত: স্থানীয় নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পরে দলটি। এর আগে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দলের সাধারণ সম্পাদক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রীকে ২০১৪ সালের ৮ মার্চ দল থেকে বহিস্কার করা হয়। ইউসুফ-যতীনের অনুপস্থিতিতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে আসন্ন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগেই দলের নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে ওই সূত্রগুলো জানিয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা দলে তাদের নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণায় এখন এমপি হাসানাতের মুখের দিকে রায়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন কোন নেতাদের প্রচারণাও চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে অনেক ভুঁইফোর, অতিথি ও রবাহুত নেতারাও রয়েছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে হাসানাতের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, পদ-পদবী দিতে মাঠে ঘাটে আলোচিত অনেক নেতাকে দীর্ঘদিন যাবৎ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ স্বয়ং নিজেই। এলাকার উন্নয়ন ও দলকে সুসংগঠিত করার নামে ওই নেতাদের মধ্যে এমপি হাসানাতের নাম ভাঙিয়ে অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থ কায়েমে তৎপর ছিলেন দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে। হাসিল করেছেন বিভিন্ন সরকারী দপ্তর থেকে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ। এলাকার অনেক নেতাই নিজেকে ত্যাগী দাবি করে সময় অসময় এমপি হাসানাতের চারপাশে ঘুর ঘুর করে নিজেদের ও অপর নেতার হয়ে কাজ করলেও দলীয় রাজনীতির গণতান্ত্রিক ধারা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে চাটুকার নেতাদের বাদ দিয়ে সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে সর্বজন গ্রহণযোগ্য এক নেতার হাতেই নেতৃত্ব তুলে দিতে চান বলে ওই সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, এমপি’র অনুপস্থিতিতে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দলের ও সরকারী অর্থের বাস্তবমুখী উন্নয়ন কাজ করতে নির্লোভ নেতাই নির্বাচন করবেন তিনি। নেতাকর্মীদের দাবি- অনেকেই নিজেদের ত্যাগী নেতা জাহির করলেও তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টার পথ ছিল একই।
দলীয়সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০০১ সালে ইউসুফ মোল্লাকে প্রধান করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করার দীর্ঘ ১৩ বছর পর গত ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কাউন্সিল শেষে ইউসুফ মোল্লাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়। তবে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হন। এরপর সম্পাদকের বহিস্কার এবং সভাপতির মৃত্যুতে নেতৃত্ব সঙ্কটের মধ্যে পরে দলটি।