দীর্ঘ দিনের বিবাদ মিটাতে শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলকে ৫৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে রাজি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেকট্রনিক জায়ান্ট স্যামসাং। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালতে দুই প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা দলিল পত্র থেকে স্যামসাংয়ের রাজি হওয়ার এ খবর উন্মোচিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
স্যামসাং অনুমতি ছাড়াই তাদের পেটেন্ট করা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে- ২০১১ সালে অ্যাপলের এমন অভিযোগের পর থেকেই দুই প্রতিষ্ঠানের এই বিবাদের শুরু। তবে, স্যামসাংয়ের এই অর্থ পরিশোধে রাজি হওয়া মানে এই নয় যে, বিবাদ পুরোপুরি মিটে গেল। এই অর্থ অ্যাপলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে যথেষ্ট কিনা, সে বিষয়ে ২০১৬ সালে রায় দেবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। দুই পক্ষের দেওয়া দলিলাদি থেকে জানা যায়, অ্যাপলের কাছ থেকে চালানপত্র পাওয়ার দশ দিনের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করতে সম্মতি দিয়েছে স্যামসাং। ২০১২ সালে এক রায়ে অ্যাপলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে শত কোটি ডলার মঞ্জুরের অংশ হিসেবে এই অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। স্যামসাংয়ের আবেদনের মোট ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কমিয়ে ৯৩ কোটিতে নিয়ে আসা হয়। এরপর এই অর্থ দুইভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়- প্রযুক্তি পেটেন্ট লঙ্ঘনের দায়ে ৫৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার আর অ্যাপলের প্যাকেজিং নকল করার দায়ে ৩৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। রায়ে দ্বিতীয় ভাগের অর্থ ২০১৬ সালে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ভাগের অর্থ পরিশোধে রাজি হলেও, পরবর্তীতে মামলার রায়ে কোনো পরিবর্তন হলে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের অর্থ ফেরত পাওয়ার অধিকার রাখে বলে জানিয়েছে স্যামসাং। বর্তমানে আদালতে দায়ের করা অ্যাপলের পেটেন্টগুলো যাচাই করছে যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট ও ট্রেডমার্ক অফিস (ইউএসপিটিও)। যদি এই পেটেন্ট অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয় তবেই স্যামসাং এই অর্থ ফেরত পাওয়ার অধিকার রাখবে বলে পাল্টা যুক্তি দেখিয়েছে অ্যাপল। স্মার্টফোনের ‘পিঞ্চ টু জুম’ নামের একটি ফিচারের পেটেন্ট ইতোমধ্যে ইউএসপিটিও-এর কাছে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আবারও আপিল করেছে অ্যাপল। সুযোগ পেয়েই, এক পেটেন্ট অকার্যকর বলায় আবার পুরো মামলা নতুন করে যাচাই করার আবেদন করে স্যামসাং। তবে, স্যামসাং-এর ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দিতে স্যামসাংয়ের রাজি হওয়ার বিষয়টি যুদ্ধে অ্যাপলকে এগিয়ে দিলেও, শেষ পর্যন্ত জয়ী কে হবে তা জানতে আদালতের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।