তারুণ্য ডেস্কঃ কমিউনিটি উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে চলা একজন যুব নেতা মোঃ শফিকুল ইসলাম খান। আজ আমরা জানব যুব নেতৃত্ব বিকাশ সম্পর্কে তিনি কি ভাবছেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণেঃ এম এস ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি, অগ্রদৃষ্টি.কম, ঢাকা।
অগ্রদৃষ্টিঃ আমরা জানি সমাজ উন্নয়নে যুব নেতা হিসেবে আপনি ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। আপনার নিজের সম্পর্কে এবং আপনার কাজ সম্পর্কে কিছু বলুল।
শফিকুলঃ আমি মোঃ শফিকুল ইসলাম খান পূর্বধলা উপজেলার রাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আমি একজন যুব নেতা হিসেবে এলাকার এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য স্বেচ্ছায় বিভিন্ন কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং সেগুলো বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। ইতোমধ্যে আমি সামাজিক উন্নয়নের অংশ হিসাবে রাজপাড়া মেইন রোড থেকে পূর্বধলা বাজার রৌশন আরা রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং তা এখন বাস্তবায়ন হয়েছে।
অগ্রদৃষ্টিঃ আপনার কাজগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন করছেন? এতে আর কারা সম্পৃক্ত আছে?
শফিকুলঃ উক্ত সংযোগ সংযোগ সড়কটি বাস্তবায়নে প্রথমে আমি এলাকার কমিউনিটি এবং যুবদের নিয়ে বেশ কয়েক বার মিটিং করি, মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে যোগাযোগ করি। এবং উক্ত সংযোগ সড়কটি নির্মান বাস্তবায়নে আবেদন করি এবং জোড় প্রচেষ্টা অব্যহত রাখি। অতঃপর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক রাস্তা নির্মান কাজটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সড়কটি নির্মানের ফলে পূর্বে যারা ক্ষেতের আইল রাস্তা ব্যবহার করত এখন বিশেষ করে মিডিয়া আইডিয়েল স্কুল, আরবান একাডেমী স্কুল, পূর্বধলা জে.এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা পূর্বধলা থেকে স্বল্প সময়ে পায়ে হেঁটে বা রিক্সায় দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে। উক্ত সংযোগ সড়কটি নির্মানে ইয়োথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, কমিউনিটি ফোরাম, স্থানীয় গণ্যমান্য হাজী জালাল উদ্দিন এবং রাজপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি মাহবুব আলম আমাকে বিশেষ ভাবে সহযোগীতা করেন।
অগ্রদৃষ্টিঃ কাজ করতে গিয়ে কোন বাঁধার সম্মুখীন হয়েছিলেন কী? হলে তা কিভাবে মোকাবিলা করেছেন?
শফিকুলঃ হ্যাঁ কিছু বাঁধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। বাঁধা মোকাবেলার ক্ষেত্রে ইয়ুথ ফোরাম, স্থানীয় গণ্যমান্য, এলাকাবাসী ও বাঁধা প্রদান কারীদের একত্রিত করে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে।
অগ্রদৃষ্টিঃ সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হতে কিভাবে উদ্বুদ্ধ হলেন?
শফিকুলঃ বেসরকারি সংস্থা ডেমক্রেসিওয়াচের লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের তথ্য সচেতন যুব সমাজ, যুব পদক্ষেপ ও এডভোকেসি এবং উৎসাহ ব্যঞ্জক সামাজিক মবিলাইজেশন এবং যোগাযোগ ও নেতৃত্ব ইত্যাদি বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর থেকে আমি সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হই।
অগ্রদৃষ্টিঃ আপনি নেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচীর তিনটি প্রশিক্ষণ পর্বে অংশগ্রহণ করেছেন। নেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচী প্রশিক্ষণের কোন কোন শিখনগুলো আপনার কাছে অধিকতর কার্যকর মনে হয়েছে? এগুলো কিভাবে কাজে লাগাচ্ছেন?
শফিকুলঃ নেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচী প্রশিক্ষণের উৎসাহ ব্যঞ্জক সামাজিক মবিলাইজেশন, তথ্য সচেতন যুব সমাজ এবং যোগাযোগ ও নেতৃত্ব বিষয়ক শিখনগুলি আমার কাছে কার্যকর মনে হয়েছে। সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ এবং নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে উক্ত প্রশিক্ষণের জ্ঞান আমার খুবই কাজে লেগেছে।
অগ্রদৃষ্টিঃ আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নেতৃত্ব উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা আছে কি? এবং তা কেন প্রয়োজন বলে মনে করছেন?
শফিকুলঃ হ্যাঁ আমি মনে করি খুবই প্রয়োজন আছে। আমরা অধিকাংশ যুবরাই পড়ালেখা ও পুস্তক জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা ও যুব নেতৃত্ব প্রদান বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত করা সম্ভব।
অগ্রদৃষ্টিঃ যুব নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে আর কি কি করণীয় আছে বলে মনে করেন? এক্ষেত্রে কার এবং কিভাবে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
শফিকুলঃ আমি মনে করি যুব নেতৃত্ব বিকাশে হাতে কলমে কর্মমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বেকার যুবদের প্রশিক্ষণ পরবর্তী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করা। আমি মনে করি এ ক্ষেত্রে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং এনজিওরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।
অগ্রদৃষ্টিঃ একজন যুব নেতা হিসেবে সমাজের/ কমিউনিটির উন্নয়নে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
শফিকুলঃ একজন যুব নেতা হিসেবে বলতে পারি, সমাজ তথা কমিউনিটির উন্নয়নে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। যে কোন উন্নয়নের ক্ষেত্রে জ্ঞান আহরণ ও জ্ঞান চর্চার প্রয়োজন রয়েছে। এই জ্ঞান চর্চার পথ সুগম করতে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রাজপাড়া এলাকায় একটি পাঠাগার স্থাপন করা। যেখানে সর্বস্থরের জনগণ বিভিন্ন বই ও পত্র-পত্রিকা পাঠের মাধ্যমে জ্ঞানের চর্চা করবে।
অগ্রদৃষ্টিঃ দেশ ও সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে অন্য যুবদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?
শফিকুলঃ দেশ ও সমাজের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্য যুবদের পরামর্শ- বেশি বেশি ভাল বই পড়া, পত্র-পত্রিকা পড়া, বিভিন্ন কর্মমূখী পশিক্ষণ গ্রহণ করা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা। অবসর সময়ে ইন্টারনেটের খারাপ অংশের ব্যবহার ও ফেসবুকের অপব্যবহার না করে জ্ঞান বৃদ্ধি মুলক বই পড়া এ ছাড়া তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে যুবরা সামাজিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে। শুধুমাত্র অর্থ নয় উদ্যম ও আন্তরিকতা দিয়ে সমাজের অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়।
অগ্রদৃষ্টিঃ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শফিকুলঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই