Menu |||

মিতু হত্যায় জড়িত রাশেদ ও নবী বন্দুক যুদ্ধে নিহত রাঙ্গুনিয়ায়

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যায় জড়িত রাশেদ ও নবী পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাত ৩ টায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি এলাকায় গুয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাথে বন্দুক যুদ্ধে তারা নিহত হয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে সুত্রে জানা গেছে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানায়, গোপনের সংবাদের ভিত্তিতে রাশেদ ও নবী রাঙ্গুনিয়ার ঠান্ডাছড়ি এলাকায় আছেন এমন সংবাদে ঐ এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশের একাটি দল। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আতœরক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে তারা দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গুনিয়া থানায় আনা হলে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়। রাশেদ ও নবী দুজনের বাড়িই রাঙ্গুনিয়ায়। আদালতের ২ আসামির দেয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, মিতু হত্যাকান্ডে রাশেদ ও নবী জড়িত থাকার কথা উঠে আসে। নবী সরাসরি ও রাশেদ ঘটনাস্থল থেকে খুনিদের পালাতে সহযোগিতা করেছিল।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলে নেয়ার পথে চট্টগ্রামের জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের কোপ ও গুলিতে নিহত হন মিতু। এ ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এদিকে বন্দুক যুদ্ধে নিহত রাশেদ শীর্ষ সন্ত্রাসী তার আপন মামা ন্যাটা জসিমের হাত ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করে বলে স্থানীয়রা জানায়। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বদিউজ্জামান তালুকদার বাড়ির আহমদ হোসেন প্রকাশ সোনা মিয়ার পুত্র রাশেদ ৫ ভাই ৩ বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার অপর এক ভাই জহিরও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত এবং আরেক ভাই খায়রুল ইসলাম রাজানগর রাণীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং জামায়াত ইসলামীর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয়রা জানান। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাসী রাশেদ মামা জসিমের হাত ধরে বেপরোয়া হয়ে উঠে। চাঁদাবাজি ও পাহাড়ের গাছ কেটে বন উজাড় করে রাশেদ। বিএনপির সন্ত্রাসী জসিম বাহিনীর ক্যাডার হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পায়। মাত্র তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করা রাশেদ ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনের পর মামার সাথে একে-৪৭ রাইফেলসহ আটক হয় পুলিশের হাতে। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে ২০১২ সালের ১১ আগস্ট গভীর রাতে রাশেদ ও তার সহযোগীরা কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ মিয়া চৌধুরীকে। ২০১২ সালের ২৭ আগস্ট রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কড়িয়ারঘোনা থেকে তাকে আটক করে জেলে পাঠায়। কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে আসে ঠা-া মাথার কিলার রাশেদ। ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে রাণীরহাট বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ মিয়া চৌধুরী ও ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি খুনি রাশেদ। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনেকটা আত্মগোপনে থাকা রাশেদ ভাড়াটে খুনি হিসেবে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অংশ নেয় বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। কয়েক বছর ধরে সন্ত্রাসী রাশেদ চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করছে পুলিশের সোর্স মুছা সিকদার ও মামা জসিমের শেল্টারে। নগরীর বহদ্দারহাট ও কালামিয়া বাজার এলাকায় এই সন্ত্রাসী চক্রের আস্তানা বলে পুলিশ জানায়। তারা ইয়াবা ও অস্ত্র চোরাচালানের ব্যবসার সাথেও জড়িত। প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়ার ভয়ে রাশেদ ও ওয়াসিমরা রাঙ্গুনিয়ায় প্রয়োজন ছাড়া পা বাড়ায় না। যদিও যায় অতি গোপনেই তারা কাজ সেড়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করলেও রাশেদরা এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি করে। শহরেই এসব চাঁদা পৌঁছে দেয় সতীর্থরা। মুছা সিকদারের মাধ্যমেই পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকান্ডে রাশেদ অংশ নেয় বলে ধারনা করা হচ্ছে। ২টি খুন, ১টি অস্ত্র ও ডাকাতিসহ তার বিরুদ্ধে অর্ধ ডজনের মতো মামলা বিচারাধীন আছে বলে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ জানায়।
অপরদিকে সন্ত্রাসী আবদুল নবী বিভিন্ন অপরাধ করে ঘটনার কোন প্রমাণ রাখে না বলে তার খ্যাতি আছে রাঙ্গুনিয়ার সন্ত্রাসী জগতে। এজন্য বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সাথে জড়িত থাকার পরও তাকে কেউ মামলার আসামি করতে পারেননি। ঘটনার পরই সে নাকি সাধারণ মানুষের মাঝে সহজে মিশে যেতে পারে। মূলত ভয়ংকর খুনি মো. ওয়াসিমের হাত ধরেই অপরাধ জগতে আবদুল নবীর যাত্রা। দুই জনের জন্ম ও বসবাস একই পাড়ায়। এলাকায় চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত আবদুল নবী। অহরহ অপরাধ করলেও তার বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা নেই। কখনো গ্রেপ্তারও হয়নি এই সন্ত্রাসী। তবে রাঙ্গুনিয়া থানার অপরাধীদের তালিকায় উঠতি সন্ত্রাসী হিসেবে নাম আছে তার। তার বিরুদ্ধে এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করার অভিযোগ আছে। বিয়ে করেছে দুইটি। বোয়ালখালী উপজেলার মিলিটারিপোল এলাকা থেকে করা প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স করেছে মৌখিকভাবে। তার সাথে এখন আর সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথেই তার বসবাস। রাঙ্গুনিযার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের পূর্ব গলাচিপা গ্রামের মুন্সি মিয়ার পুত্র আবদুল নবী বছরখানেক আগে একই এলাকার এক ট্যাক্সি চালককে গলায় ছুরিকাঘাত করে ট্যাক্সি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে এলাকার লোকজনের ধাওয়া খেয়ে ট্যাক্সি ফেলে পালিয়ে যায়। এঘটনার পর গুরুতর আহত ট্যাক্সি চালক শাহেদের ভাই মামলা করার চেষ্টা করেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে বিরত থাকেন। সন্ত্রাসী আবদুল নবীকে ধরতে এলাকার লোকজন মানববন্ধনও করেন। স্থানীয় লোকজন জানান, ট্যাক্সি ছিনতাই চেষ্টার পর চালক শাহেদের বাড়িতে গিয়ে আবদুল নবী, ওয়াসিম ও রাশেদসহ সন্ত্রাসীরা শাহেদের বাড়িতে গিয়ে কোন ধরণের মামলা না করার জন্য সশস্ত্র হুমকি দেয়। এরপর ভয়ে তারা মামলা করেননি। সন্ত্রাসী ওয়াসিমের মাধ্যমে অপরাধ জগতে পা রাখা আবদুল নবীর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে পুলিশের সোর্স মুছা সিকদারের সাথে। তার মাধ্যমেই আবদুল নবী পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশ নেয় বলে ধারনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন সন্ত্রাসী আবদুল নবীর বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা না থাকলেও উঠতি সন্ত্রাসী হিসেবে সে পুলিশের কড়া নজরে ছিল।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

বিশেষ অনুমতি ছাড়াই পাওয়া যাবে কুয়েতের ভিসা

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেপ্তার

কুয়েতে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

কুয়েতের কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত ৩০০ ডলার পর্যন্ত দিতে হচ্ছে

চুরি হওয়া টাকা'ই ঋণের জন্য ব্যবহার হয়

ক্রোধের স্রোত অত্যাচারীদের ধ্বংস করে- আহমেদ আল-জারাল্লাহ

কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশী তরুণ মকবুল হোসেনের সফলতার গল্প

কুয়েতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত এবং রাষ্ট্রদূত এর সঙ্গে প্রবাসীদের শুভেচ্ছা বিনিময়

কান্না দেখে কাঁদছে হৃদয়, আমি মোটেও হৃদয়হীন নয়

হাসনাতের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড় সোশ্যাল প্লাটফর্ম

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কুয়েতে বিজয় দিবস কাপ-২০২৫ এর সেমিফাইনালে উঠেছে নবজাগরণ স্পোর্টিং ক্লাব

» কুয়েত ফেরত প্রবাসী মো. সাদ মিয়া আর নেই

» বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

» ফিলিস্তিনের পক্ষে লন্ডনের রাজপথে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

» বিশেষ অনুমতি ছাড়াই পাওয়া যাবে কুয়েতের ভিসা

» চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেপ্তার

» আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের

» কুয়েতে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েতে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েতের কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত ৩০০ ডলার পর্যন্ত দিতে হচ্ছে

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

মিতু হত্যায় জড়িত রাশেদ ও নবী বন্দুক যুদ্ধে নিহত রাঙ্গুনিয়ায়

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যায় জড়িত রাশেদ ও নবী পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাত ৩ টায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি এলাকায় গুয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাথে বন্দুক যুদ্ধে তারা নিহত হয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে সুত্রে জানা গেছে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানায়, গোপনের সংবাদের ভিত্তিতে রাশেদ ও নবী রাঙ্গুনিয়ার ঠান্ডাছড়ি এলাকায় আছেন এমন সংবাদে ঐ এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশের একাটি দল। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আতœরক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে তারা দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গুনিয়া থানায় আনা হলে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়। রাশেদ ও নবী দুজনের বাড়িই রাঙ্গুনিয়ায়। আদালতের ২ আসামির দেয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, মিতু হত্যাকান্ডে রাশেদ ও নবী জড়িত থাকার কথা উঠে আসে। নবী সরাসরি ও রাশেদ ঘটনাস্থল থেকে খুনিদের পালাতে সহযোগিতা করেছিল।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলে নেয়ার পথে চট্টগ্রামের জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের কোপ ও গুলিতে নিহত হন মিতু। এ ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এদিকে বন্দুক যুদ্ধে নিহত রাশেদ শীর্ষ সন্ত্রাসী তার আপন মামা ন্যাটা জসিমের হাত ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করে বলে স্থানীয়রা জানায়। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বদিউজ্জামান তালুকদার বাড়ির আহমদ হোসেন প্রকাশ সোনা মিয়ার পুত্র রাশেদ ৫ ভাই ৩ বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার অপর এক ভাই জহিরও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত এবং আরেক ভাই খায়রুল ইসলাম রাজানগর রাণীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং জামায়াত ইসলামীর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয়রা জানান। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাসী রাশেদ মামা জসিমের হাত ধরে বেপরোয়া হয়ে উঠে। চাঁদাবাজি ও পাহাড়ের গাছ কেটে বন উজাড় করে রাশেদ। বিএনপির সন্ত্রাসী জসিম বাহিনীর ক্যাডার হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পায়। মাত্র তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করা রাশেদ ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনের পর মামার সাথে একে-৪৭ রাইফেলসহ আটক হয় পুলিশের হাতে। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে ২০১২ সালের ১১ আগস্ট গভীর রাতে রাশেদ ও তার সহযোগীরা কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ মিয়া চৌধুরীকে। ২০১২ সালের ২৭ আগস্ট রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কড়িয়ারঘোনা থেকে তাকে আটক করে জেলে পাঠায়। কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে আসে ঠা-া মাথার কিলার রাশেদ। ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে রাণীরহাট বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ মিয়া চৌধুরী ও ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি খুনি রাশেদ। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনেকটা আত্মগোপনে থাকা রাশেদ ভাড়াটে খুনি হিসেবে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অংশ নেয় বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। কয়েক বছর ধরে সন্ত্রাসী রাশেদ চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করছে পুলিশের সোর্স মুছা সিকদার ও মামা জসিমের শেল্টারে। নগরীর বহদ্দারহাট ও কালামিয়া বাজার এলাকায় এই সন্ত্রাসী চক্রের আস্তানা বলে পুলিশ জানায়। তারা ইয়াবা ও অস্ত্র চোরাচালানের ব্যবসার সাথেও জড়িত। প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়ার ভয়ে রাশেদ ও ওয়াসিমরা রাঙ্গুনিয়ায় প্রয়োজন ছাড়া পা বাড়ায় না। যদিও যায় অতি গোপনেই তারা কাজ সেড়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করলেও রাশেদরা এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি করে। শহরেই এসব চাঁদা পৌঁছে দেয় সতীর্থরা। মুছা সিকদারের মাধ্যমেই পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকান্ডে রাশেদ অংশ নেয় বলে ধারনা করা হচ্ছে। ২টি খুন, ১টি অস্ত্র ও ডাকাতিসহ তার বিরুদ্ধে অর্ধ ডজনের মতো মামলা বিচারাধীন আছে বলে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ জানায়।
অপরদিকে সন্ত্রাসী আবদুল নবী বিভিন্ন অপরাধ করে ঘটনার কোন প্রমাণ রাখে না বলে তার খ্যাতি আছে রাঙ্গুনিয়ার সন্ত্রাসী জগতে। এজন্য বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সাথে জড়িত থাকার পরও তাকে কেউ মামলার আসামি করতে পারেননি। ঘটনার পরই সে নাকি সাধারণ মানুষের মাঝে সহজে মিশে যেতে পারে। মূলত ভয়ংকর খুনি মো. ওয়াসিমের হাত ধরেই অপরাধ জগতে আবদুল নবীর যাত্রা। দুই জনের জন্ম ও বসবাস একই পাড়ায়। এলাকায় চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত আবদুল নবী। অহরহ অপরাধ করলেও তার বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা নেই। কখনো গ্রেপ্তারও হয়নি এই সন্ত্রাসী। তবে রাঙ্গুনিয়া থানার অপরাধীদের তালিকায় উঠতি সন্ত্রাসী হিসেবে নাম আছে তার। তার বিরুদ্ধে এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করার অভিযোগ আছে। বিয়ে করেছে দুইটি। বোয়ালখালী উপজেলার মিলিটারিপোল এলাকা থেকে করা প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স করেছে মৌখিকভাবে। তার সাথে এখন আর সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথেই তার বসবাস। রাঙ্গুনিযার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের পূর্ব গলাচিপা গ্রামের মুন্সি মিয়ার পুত্র আবদুল নবী বছরখানেক আগে একই এলাকার এক ট্যাক্সি চালককে গলায় ছুরিকাঘাত করে ট্যাক্সি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে এলাকার লোকজনের ধাওয়া খেয়ে ট্যাক্সি ফেলে পালিয়ে যায়। এঘটনার পর গুরুতর আহত ট্যাক্সি চালক শাহেদের ভাই মামলা করার চেষ্টা করেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে বিরত থাকেন। সন্ত্রাসী আবদুল নবীকে ধরতে এলাকার লোকজন মানববন্ধনও করেন। স্থানীয় লোকজন জানান, ট্যাক্সি ছিনতাই চেষ্টার পর চালক শাহেদের বাড়িতে গিয়ে আবদুল নবী, ওয়াসিম ও রাশেদসহ সন্ত্রাসীরা শাহেদের বাড়িতে গিয়ে কোন ধরণের মামলা না করার জন্য সশস্ত্র হুমকি দেয়। এরপর ভয়ে তারা মামলা করেননি। সন্ত্রাসী ওয়াসিমের মাধ্যমে অপরাধ জগতে পা রাখা আবদুল নবীর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে পুলিশের সোর্স মুছা সিকদারের সাথে। তার মাধ্যমেই আবদুল নবী পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশ নেয় বলে ধারনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন সন্ত্রাসী আবদুল নবীর বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা না থাকলেও উঠতি সন্ত্রাসী হিসেবে সে পুলিশের কড়া নজরে ছিল।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

বিশেষ অনুমতি ছাড়াই পাওয়া যাবে কুয়েতের ভিসা

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেপ্তার

কুয়েতে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

কুয়েতের কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত ৩০০ ডলার পর্যন্ত দিতে হচ্ছে

চুরি হওয়া টাকা'ই ঋণের জন্য ব্যবহার হয়

ক্রোধের স্রোত অত্যাচারীদের ধ্বংস করে- আহমেদ আল-জারাল্লাহ

কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশী তরুণ মকবুল হোসেনের সফলতার গল্প

কুয়েতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত এবং রাষ্ট্রদূত এর সঙ্গে প্রবাসীদের শুভেচ্ছা বিনিময়

কান্না দেখে কাঁদছে হৃদয়, আমি মোটেও হৃদয়হীন নয়

হাসনাতের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড় সোশ্যাল প্লাটফর্ম


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Sat, 24 May.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।