নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার রামপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিমল চন্দ্র দাস এর উপর সন্ত্রাসী হামলা লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে। মিছিলটি রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুণরায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শেষে হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবী জানান অন্যথায় ক্লাস বর্জনের হুমকি দেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামপুর শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে মন্দিরের পক্ষ থেকে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে একই এলাকার মৃত: যোগেশ চন্দ্র দাসের ছেলে পুলিশের এসআই হরিদাস ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য উত্তম দাস ওরফে নেহারু এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে রামপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিমল চন্দ্র দাসকে কিল, ঘুষি মারতে থাকে। কিল ঘুষির এক পর্যায়ে হরিদাস স্কুল শিক্ষককে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এমন উদ্ভুদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য উপস্থিত এলাকাবাসী হামলাকারী ও সামাজিক অপরাধীদের বাঁধা প্রদান করলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, পুলিশের এসআই হরিদাস ও তারই সহোদর পুলিশের কনস্টেবল পিন্টু দাস খিদিরপুর ভূমি অফিসের সামনে সরকারি জমি জবর দখল করে রেখেছে। নেহারু চক্রটি এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রায়শই বিভিন্ন ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। পিন্টু দাস ও এসআই হরিদাস কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি-কোটি টাকার অবৈধ পাহাড় গড়েছে। পাশাপাশি হরিদাস হবিগঞ্জ, নরসিংদী সদর ও রামপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি ক্রয় করেছে। বর্তমানে কনস্টেবল পিন্টু দাস ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালক। এসআই হরিদাস গাজীপুর জেলার একটি ফাঁড়িতে রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও নিজ গ্রামে পুলিশ সদস্য পিন্টু দাস ও হরিদাস কোটি টাকার বাগান বাড়ি তৈরি করেছে। অভিযোগ রয়েছে পিন্টু দাস মাসের মধ্যে কম করেও ১২/১৪ দিন নিজ বাড়িতে অবস্থান করে। বাড়িতে অবস্থান করাকালীন সময়ে এলাকার সাধারণ মানুষ জনকে হুমকি ধমকি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এলাকার শালিসি বৈঠকে হস্তক্ষেপসহ সামাজিক অপরাধী ও একাধিক মামলার আসামীদের নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেছে উত্তম দাস ওরফে নেহারু। এছাড়াও পুলিশে লোকবল নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অল্প দিনের ব্যবধানে অবৈধ টাকার মালিক হবার দাপটে যে কোন সময় যে কারো উপর চক্রটি চড়াও হয়ে পড়ছে। এই তিন সহোদরের অত্যাচারে তটস্থ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে রামপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিমল চন্দ্র দাস জানান, সামাজিক অপরাধীচক্রের অপরাধকে সমর্থন না করে আমি বিগত সময়ে প্রতিবাদ করেছি। এ জন্যেই আমার উপর এ হামলা চালিয়েছে। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান জামিল জানান, হামলাকারীরা দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের উপর আমাদের নজর রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিমল চন্দ্র দাসের উপর যে হামলা চালিয়েছে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদ দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ঘটনার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আমি কথা বলছি। হামলাকারীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।