বিশেষ প্রতিনিধিঃ মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত। যে আরব ভূমি বহু প্রবাসীর ভাগ্য বদলে দিয়েছে, সেখানেই এবার সফলতার নতুন স্বাক্ষর রাখলেন দুই সহোদর— তারমিম আলম ও তামিম আলম। চার বছরের বয়সের তফাৎ নিয়েও কর্মক্ষেত্রে দুজনেই দেখিয়েছেন সমান দক্ষতা ও পারদর্শিতা। তাদের কঠোর পরিশ্রম, অদম্য প্রচেষ্টা এবং সততাই প্রমাণ করেছে যে, প্রবাসের মাটিও সফলতার উর্বর ক্ষেত্র হতে পারে।
এই দুই আপন ভাইয়ের কুয়েত প্রবাস জীবনের শুরুটা ছিল আর দশজন সাধারণ কর্মীর মতোই। কিন্তু তারা নিজেদের স্বপ্নকে সাধারণ গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখেননি। দ্রুতই তারা ব্যবসায়িক দক্ষতা অর্জন করেন এবং নিজেদের সততার গুণে কুয়েতের সফল ব্যবসায়ীর তালিকায় নাম লেখান।
বর্তমানে কুয়েতের প্রাণকেন্দ্র ফারওয়ানিয়া এলাকায় তাদের যৌথ মালিকানাধীন গ্রোসারি শপ ও ‘জাবাল আল নুর’ রেস্তোরাঁর ব্যবসা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।
বড় ভাই তারমিম আলম, প্রায় দেড় যুগের প্রবাসী। তিনি তার উত্থানের গল্প বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন, “হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েও উঠে দাঁড়ানোর ধৈর্যটাই” তাকে আজকের অবস্থানে এনে দিয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি স্পনসর বা কফিলের অধীনে কাজ করার পর, অবশেষে নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। তারমিম মনে করেন, তরুণ প্রবাসীদের মধ্যে যারা ব্যবসার স্বপ্ন দেখেন, তাদের জন্য নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে থাকা এবং সততাকে পুঁজি করাই হলো সফলতার মূল চাবিকাঠি।

জাবাল আল নুর রেস্টুরেন্ট
তারমিম-তামিমদের এই ব্যবসায়িক উত্থান কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে অনুপ্রেরণার এক নতুন উৎস। প্রবাসী ব্যবসায়ী তারমিমের সহপাঠী মনিরও দুই ভাইয়ের এই সফলতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কুয়েত প্রবাসীদের মতে, তারমিম-তামিমদের এই অভাবনীয় ব্যবসায়িক সফলতার গল্প শুনে অনেকেই ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী হবেন। তবে এই আগ্রহ তখনই সফল হবে, যখন সব নিয়ম-কানুন ও শৃঙ্খলা মেনেই কেউ তাদের ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু করবেন।
ভবিষ্যৎ নিয়ে তারমিম ও তামিম আলম স্বপ্ন দেখেন আরও বড় কিছুর। তাদের পরিকল্পনা হলো, বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পরিধিকে আরও বাড়িয়ে বৃহত্তর পরিসরে নিজেদের সফলতার ছাপ রাখা এবং কুয়েতের মাটিতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা। মধ্যপ্রাচ্যের বুকে এই দুই সহোদর যেন প্রমাণ করলেন— ইচ্ছা আর সততা থাকলে প্রবাসের প্রতিকূলতাও সাফল্যের সোপান হতে পারে।
তারমিম ও তামিম সহোদর দুই ভাই এর দেশের বাড়ি সিলেট এর ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়।
দুজনেই কুয়েতে আছেন দীর্ঘদিন ধরে।