রাকিব হাসনাতঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে হতাহতের ঘটনার দুদিন পরও প্রকল্প এলাকার এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে কয়েকটি সংগঠন বুধবার সেখানে হরতাল ডাকলেও এলাকায় তাদের তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।
তবে কয়েকটি মামলায় কয়েক হাজার মানুষকে আসামী করায় ভয়ে এলাকা ছেড়েছেন অনেকেই।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিরোধীরা শোকমিছিল করে শুক্রবারের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। তবে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বলছে আন্দোলন যারা করছে তাদের জায়গা জমি প্রকল্প এলাকায় পড়েনি, তাই নির্মাণ কাজ বন্ধের কোন সম্ভাবনা নেই।
কয়লা ভিত্তিক একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে পাল্টা পাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সোমবার বাঁশখালির গন্ডামারা গ্রামে চার জনের নিহত হওয়ার প্রতিবাদে আজ বুধবার সেখানে হরতালের কর্মসূচি দিয়েছিলো কয়েকটি সংগঠন।
স্থানীয় সাংবাদিক কল্যাণ বড়ুয়া বলছেন হরতালের পক্ষে কোন তৎপরতা তারা দেখতে পান নি তবে ঘটনার পর কয়েকটি মামলা হওয়ায় ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলাগুলোতে আসামী করা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে।
স্থানীয় অধিবাসী জালাল উদ্দিন বলছেন নতুন করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও এখন পুলিশী অভিযান নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন সবাই।
আরেকজন অধিবাসী আবু আহমেদ বলছেন আতঙ্কের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে ভিটেমাটি হারাবেন এমন উদ্বেগও রয়েছে।
বিদ্যুত কেন্দ্র বিরোধী বসতভিটা ও গোরস্থান রক্ষা কমিটির আহবায়ক লিয়াকত আলী বলছেন আজ শোক মিছিল সহ কিছু কর্মসূচি তারা পালন করেছেন নিহতদের স্মরণে।
আর শুক্রবারের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে আরও কর্মসূচি তারা দেবেন বলে জানান তিনি।
তবে বিদ্যুত কেন্দ্রটির নির্মাতা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস এস পাওয়ার লিমিটেডের বাঁশখালীর এই প্রকল্পের সহকারী সমন্বয়ক বাহাদুর আলম হিরণ বলছেন আন্দোলন হচ্ছে রাজনৈতিক ও ব্যক্তি স্বার্থে।
তার দাবি আন্দোলনকারীদের জায়গা জমি প্রকল্প এলাকায় নেই আর তাই প্রকল্পটি বন্ধ করার কোন সুযোগও নেই বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি এসএস পাওয়ার লিমিটেড ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো।
তখন জানানো হয়েছিলো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য গণ্ডামারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমি কেনা হয়েছে। তারপরেও কেন এ নিয়ে সংঘর্ষ হলো তা অবশ্য জানা যাবে সংঘর্ষের ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পর।