‘অপপ্রচারের’ কারণে বাংলাদেশি নারী কর্মীরা সৌদি আরব যেতে চাচ্ছে না বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিদেশে কর্মী প্রেরণ নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় সৌদি আরব সরকারের সাথে নারী গৃহকর্মী পাঠানোর চুক্তি হলেও সেখানে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রণালয়।
কমিটির সভাপতি নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. ইসরাফিল আলম, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান, দিদারুল আলম এবং মো. আয়েন উদ্দিন অংশ নেন।
বৈঠক শেষে মো. আয়েন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, সৌদি আরবে নারী কর্মীদের নির্যাতন করা হয় এমন অপপ্রচারের কারণে বাংলাদেশি নারীরা যেতে চাচ্ছে না।
তিনি বলেন, কিছু লোক বিশেষ করে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ও মিডিয়া প্রচার করে সেখানে নারী নির্যাতন হচ্ছে। এজন্য তারা যেতে চাচ্ছে না।
এ বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ৮০০ রিয়াল (প্রায় ১৬ হাজার টাকা) বেতনে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২০ হাজার গৃহকর্মী নেওয়ার ব্যাপারে সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়।
সম্প্রতি সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি নারী শ্রমিক সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী নন। এর কারণ হিসেবে সৌদি গেজেট উল্লেখ করে, বাংলাদেশী নারী গৃহকর্মীরা সৌদি আরবের আচার, সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন না।
প্রতি মাসে ১০ হাজার নারী কর্মী সৌদি আরবে পাঠানোর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারী কর্মীদের নাম নিবন্ধনের জন্য গত ৫ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। পরে সময়সীমা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হলেও নিবন্ধন করেন মাত্র ২ হাজার ৫৭০ জন।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি ২০১৫ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে অনুমতি নিয়ে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮১২ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে গেছেন।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি-২০১৫ প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ওই নীতিতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর আচরণ বিধি এবং শ্রেণিকরণের বিষয়টিও পরীক্ষাধীন আছে।
বৈঠকে জানানো হয়, নীতিমালার মাধ্যমে এজেন্সিগুলোকে নজরদারির মধ্যে এনে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে মালয়েশিয়ায় জি টু জি প্রক্রিয়ায় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অভিবাসী কর্মী পাঠানো হচ্ছে না বলে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
এ ছাড়া বৈঠকে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলো থেকে কেউ যাতে ভুয়া সনদ নিতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়।