জাকির সিকদারঃ সারা দেশে গড়ে উঠছে অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই নেই কোনো অনুমোদন। ঢাকার বাইরেও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গড়ে উঠছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অনভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান ও কথিত ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের দিয়ে চালানো হচ্ছে এসব সেন্টার। ভুল রিপোর্টের ফলে রোগীরা প্রতারিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুর্নীতি নিয়ে আনজাম খালেকের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ চতুর্থ পর্ব।
রাজধানীর গ্রীণ রোডের সেন্ট্রাল হসপিটালে সম্প্রতি একজন চিকিৎসক তার অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রী’র কয়েকটি পরীক্ষা করান। সেখানে রক্তের একটি রিপোর্ট ভুল আসে। যা অনুসরণ করলে ওই দম্পতি আর কখনো সন্তান গ্রহণ করতে পারতেন না। ভুল রিপোর্টের বিষয়ে একাধিকবার তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
গেলো বছর গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে একটি চিঠি আসে জেলা প্রশাসনে। চিঠিতে জেলার মোট দু’শো ৯৪টি ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে একশো ৬৪টি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি জেলা প্রশাসন। অনুমোদনহীন এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্ট না থাকা, দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নোংরা, দুর্গন্ধময় পরিবেশ, আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব, মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে।
শুধুমাত্র গাজীপুর নয়, ঢাকার বাইরে প্রায় সবক’টি জেলায় একই অবস্থা। অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে ওঠা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে, সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসনকে যৌথভাবে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের। দেশে অনুমোদনহীন প্রায় ১২ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার তদারকির আওতায় আনলে স্বাস্থ্যখাতের অনেক উন্নতি হবে বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।