প্রখ্যাত কলামিস্ট আহমেদ আল-জারাল্লাহর একটি নিবন্ধ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জীবন ও সম্পদের নশ্বরতা নিয়ে লেখা এই নিবন্ধে তিনি এক চীনা বিলিয়নেয়ারের মৃত্যুর পরবর্তী এক অবাক করা ঘটনা তুলে ধরেছেন।
ঘটনাটি এমন—চীনের এক ব্যবসায়ী ১.৯ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বিশাল সম্পদ রেখে মারা যান। তার মৃত্যুর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার স্ত্রী ওই ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত গাড়িচালককে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সেই ড্রাইভার এক বিষ্ফোরক কিন্তু গভীর সত্য কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমি এতদিন ভাবতাম আমি আমার মালিকের জন্য কাজ করছি। কিন্তু এখন দেখছি, আমার মালিকই আসলে সারাজীবন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে আমার জন্য সম্পদ জমিয়ে গেছেন!”
এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে লেখক জীবনের এক চরম বাস্তবতাকে সামনে এনেছেন। তিনি বলেন, আমরা জীবনের বেশিরভাগ সময় এমন সব সম্পদ জমা করতে গিয়ে ব্যয় করি, যা শেষ পর্যন্ত আমাদের কোনো কাজে লাগে না। ব্যাংকের সংখ্যাগুলো কেবল কাগজে-কলমেই থাকে, কিন্তু মানুষ যখন মারা যায়, সেই সম্পদের সুবিধাভোগী হয় অন্য কেউ।
লেখক আরও উল্লেখ করেন, আমরা আমাদের দামী স্মার্টফোনের ৭০ শতাংশ ফিচার ব্যবহার করি না, দামী গাড়ির গতির ৭০ শতাংশ ট্রাফিক জ্যামে নষ্ট হয় এবং আলমারির ৭০ শতাংশ কাপড় পড়ে থাকে অব্যবহৃত। অথচ এই অপ্রয়োজনীয় জিনিসের পেছনে ছুটতে গিয়ে আমরা আমাদের স্বাস্থ্য ও প্রিয়জনদের সময় দিতে ভুলে যাই।
প্রতিবেদনের শেষে লেখক পাঠকদের সতর্ক করে বলেন, মৃত্যুর পর মানুষের নামটিও মুছে গিয়ে সে কেবল ‘লাশ’ বা ‘মৃতদেহ’ হিসেবে পরিচিত হয়। তাই সম্পদ কেবল জমিয়ে না রেখে তা নিজের আনন্দ, স্বাস্থ্য এবং আর্তমানবতার সেবায় ব্যয় করাই জীবনের আসল সার্থকতা।
আরব টাইমসের প্রধান সম্পাদক, আহমেদ আল-জারাল্লাহ এর সম্পাদকীয় থেকে সংগ্রহ।
আ হ জুবেদ – সম্পাদক, অগ্রদৃষ্টি











