অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই সাংবাদিক পরিচয়টি হারালেন শওকত মাহমুদ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র ঢাউস কমিটির তিন ডজন ভাইস চেয়ারম্যানের একজন (মূলত ৩৫ জনের শেষতম জন) হয়ে পেশাদারি পরিচয় হারিয়ে রাজনীতিকের তালিকাভূক্ত হয়েছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী এই সাংবাদিক একসময়ে মেধাবী রিপোর্টার হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। দৈনিক সংবাদে এক সময়ে তার সাড়া জাগানো প্রতিবেদন নিয়মিত প্রকাশিত হতো। পরবর্তীতে দেশের প্রথম ট্যাবলয়েড সংবাদপত্রের নির্বাহী সম্পাদক, আরও পরে একাধিক পত্রিকার সম্পাদক, নিজের মালিকানায় পত্রিকা প্রকাশ করে সাংবাদিকতা তথা মিডিয়া জগতের গুরুত্বপূর্ণ একজন হয়েছিলেন শওকত মাহমুদ।
তবে এরই মধ্যে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত করেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সঙ্গে। বিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএনপি-জামায়াতপন্থি অংশে নেতৃত্বেও চলে আসেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের হয়ে এর শীর্ষ পদে ছিলেন একাধিকবার। জাতীয় প্রেসক্লাবেও তিনি ওই ফোরামের একজন হিসেবে প্রথমে সাধারণ সম্পাদক পরে সভাপতি হিসেবে বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করেন।
এভাবেই ধীরে ধীরে বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন শওকত মাহমুদ। তবে তা ছিলেন স্রেফ উপদেষ্টা হিসেবে। ফলে সাংবাদিক পরিচয়টিকে সামনে রেখেই শওকত মাহমুদ তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বজায় রেখে আসছিলেন।
পরের দিকে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়তে থাকে এবং বাজারে কথা চাউড় হয় যে, শওকত মাহমুদ কুমিল্লার বুড়িচংয়ে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে বিএনপি’র টিকিটে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে তাকে নিজ এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাজনীতিকের মতোই অংশ নিতেও দেখা যায়। তাকে স্থানীয় উপজেলা বিএনপি’র সভাপতিও করা হয়। তবে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত জোট বয়কট করলে সে নির্বাচনে তার প্রার্থী হওয়া হয়নি।
সাংবাদিকতার চেয়ে রাজনীতিতেই বেশি ঝুঁকে পড়া শওকত মাহমুদ দলীয় কাজে অনেক বেশি সম্পৃক্ত হতে থাকেন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের সময়ে তাকে মাস্টারমাইন্ডদের একজন হিসেবে ধারনা করে মামলায় জড়ায় পুলিশ। একাধিক ঘটনায় তাকে বিনাবিচারে কারাগারেও কাটাতে হয় বেশ কিছুদিন।
এসব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই সাংবাদিকতা পেশাকে গৌণ করে রাজনৈতিক পরিচয়কেই মুখ্য করে দেখতে থাকেন শওকত মাহমুদ। বাড়তে থাকে তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাও। দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন। আর তারই ধারাবাহিকতায় উপদেষ্টা পদ থেকে এবার সরাসরি নির্বাহী কমিটিতে স্থান পেলেন তিনি। শওকত মাহমুদ হলেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান। যার মধ্য দিয়ে তার সাংবাদিক পরিচয়ের ইতি ঘটলো।