কুয়েতে বিভক্তি, কোন্দল ও গ্রুপিং মুক্ত আওয়ামীলীগ দেখার বহু আকাংখিত সপ্ন বলা চলে অনেকটা ভেঙ্গে গেলো। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং রোজ মঙ্গলবার কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস,এম,আবুল কালাম কুয়েত আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যকার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও কোন্দল সমাধানের লক্ষ্যে ঘোষিত কাউন্সিল পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন।
চট্রগ্রাম আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বয়োজ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ এস,এম,আবুল কালাম কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার তিন মাসের মাথায় কঠিন এক দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কুয়েত শাখা তিনটি ভাগে বিভক্ত, প্রথম গ্রুপের সভাপতি ফয়েজ কামাল, দ্বিতীয় গ্রুপের সভাপতি সাদেক হুসেন ও তৃতীয় গ্রুপের সভাপতি আব্দুর রউফ মাওলা।
আওয়ামীলীগের অন্যতম নেতা এস,এম,আবুল কালাম কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত হয়ে আসায়, কুয়েত আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা এবার ধরেই নিয়েছিলেন, হয়তো সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের একটি সুষ্ঠু সমাধান হবে।
একসময় কুয়েত আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এস,এম, আবুল কালামের শরণাপন্ন হলেন। তখন নেতৃবৃন্দরা রাষ্ট্রদূতকে জানালেন নেতৃবৃন্দের মধ্যকার কোন্দলের কথা, এসময় অনুরোধ করে বিবদমান সমস্যা সমাধানে একজন আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা হিসেবে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে বলেন নেতৃবৃন্দরা।
মনে প্রাণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামীলীগের প্রবীণ এই নেতা রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব ক্ষণিকের জন্য ভুলে গিয়ে মাত্র ৩ মাস যখন কুয়েতস্থ দূতাবাসে দায়িত্ব কাল; ঠিক তখন কুয়েত আওয়ামীলীগের দ্বন্দ্ব, কোন্দল লাঘবের লক্ষ্যে পূর্বের কুয়েত শাখা আওয়ামীলীগের সকল কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন, এবং একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও কোন্দল মুক্ত একটি আওয়ামীলীগের সপ্ন দেখতে লাগেন।
কিন্ত এই সল্প পরিসরে এমন একটি পদক্ষেপ ও কঠিন দায়িত্বভার নেয়া যে, খুবেকটা সমীচীন ছিলনা ,ইতিমধ্যে অনেকের ধারণা রাষ্ট্রদূত সেটি পুরোপুরিভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার কুয়েত আওয়ামীলীগের তিন গ্রুপের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদেরকে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত তলব করেছিলেন।
কুয়েত আওয়ামীলীগ একাংশের সভাপতি আব্দুর রউফ মাওলা অগ্রদৃষ্টিকে জানান, এসময় দূতাবাসে উপস্থিত ছিলেন, শাহ্ নেওয়াজ নজরুল, আব্দুর রউফ মাওলা, মোহাম্মদ বাহার উদ্দিন,মোরশেদ আলম বাদল ও নজরুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দদেরকে রাষ্ট্রদূত এস,এম,আবুল কালাম বলেন, কুয়েত আওয়ামীলীগে একটি কাউন্সিল পরিচালনা করতে আমি অপারগতা প্রকাশ করছি। তবে এর কারণ হিসেবে আপনারা আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারবেন না।
কুয়েতে রাজনৈতিক যেকোনো ধরনের কর্মকাণ্ডে আমার উপস্থিতি থাকবে না, সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যদি আমি মনে করি ভালো; তাহলে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করবো।
এবং কাউন্সিলে সদস্য হতে গিয়ে যারা ৫দিনার প্রদান করেছেন, সকল সদস্যের টাকা ফেরত দেয়া হবে।
এদিকে কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির প্রধান রবিউল আলম রবিকে টেলিফোনে কুয়েত আওয়ামীলীগের কাউন্সিল না হওয়া সম্পর্কে কিছু জানতে চাওয়া হলে, তিনি অনেকটা অসহ্য ও রাগাম্বিত ভাষায় বলেন, এসম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারবো না।
পরে কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মঈন উদ্দিনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, এব্যাপারে আমরা সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছি। আশা করি তখন বিস্তারিত জানতে পারবেন।
কুয়েত আওয়ামীলীগে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কোন্দল আর হয়তো দীর্ঘস্থায়ী হবেনা, এবার হয়তো কুয়েত আওয়ামীলীগে সুবাতাস বইবে, এমন সপ্ন যখন সকল আওয়ামীলীগের শান্তিকামী নেতা-কর্মীরা দেখছিল। ঠিক তখন অজ্ঞাত কারণে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো, এবার শতভাগ নিশ্চিত কুয়েতে আওয়ামীলীগের কাউন্সিল হচ্ছেনা।
ফলে সকল শান্তিকামী আওয়ামীলীগ নেতা- কর্মীরা ছাড়াও সকল শ্রেণী পেশার মানুষদেরও একটি কথা, কুয়েত আওয়ামীলীগের সেই চিরাচরিত পুরনো চেহারা’ই এখন আগের মতো দেখা যাবে।
অনেকে এও বলছেন যে, এবার হয়তো কুয়েত আওয়ামীলীগে গ্রুপিং কমানোর বদলে আরেকটি নতুন গ্রুপের প্রকাশ ঘটতে পারে।