লন্ডন প্রতিনিধিঃ লন্ডনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে পূর্ব লন্ডনের পলনার ষ্ট্রীটর বার্ণার সেন্টারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় যুক্তরাজ্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক, ব্রিটেনে বাঙালি কমিউনিটির সদ্য প্রয়াত ছানু মিয়াকে ব্রিটেনে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ সৈনিক আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির প্রতি ছিলো তার প্রচণ্ড ঘৃণা।
আর এ কারণেই শহীদ জননী নির্মূল কমিটি গঠন করার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রিটেনে এর শাখা গঠন করে যুদ্ধাপরাধী নির্মূল আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন তিনি।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য ও ছানু মিয়ার ঘনিষ্ট বন্ধু আনসার আহমেদ উল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনাস পাশা’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোক সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-প্রবীণ রাজনীতিক, মু্ক্তিযুদ্ধের শীর্ষ প্রবাসী সংগঠক সুলতান শরীফ।
এতে বক্তব্য রাখেন-সাংবাদিক আবু মুসা হাসান, যুক্তরাজ্য ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল মালিক খোকন, সঙ্গীত শিল্পী সঞ্জয় দে, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক মেয়র দরছ উল্লাহ, সাবেক ডেপুটি লিডার রাজন উদ্দিন জালাল, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস শুকুর, সাবেক কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন বেলাল, সাবেক কাউন্সিলার ফানু মিয়া, যুক্তরাজ্য নির্মূল কমিটির জামাল খান, সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী, রুবী হক, শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল, পুষ্পিতা গুপ্ত, স্মৃতি আজাদ, আহাদ চৌধুরী বাবু, জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের সেক্রেটারি আঙ্গুর আলী, নাট্যকার আশরাফ মাহমুদ নেছওয়ার, ফজলুল হক, কমিউনিটি নেতা শেখ নূর, যুক্তরাজ্য জাসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক মনি, লোকমান উদ্দিন, যুক্তরাজ্য মহিলা আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট নারী নেত্রী হুসনে আরা মতিন, সংস্কৃতি কর্মী মিঠু আজাদ, গণী মিয়া, খালিক মিয়া, মজুমদার মিয়া, আশিক মিয়া, হাবিব আলী, মিহির আলী, মাখন মিয়া, আব্দুল বাছির, মুজি আলী, তুরন মিয়া ও খয়রাত মিয়া প্রমুখ।
সভার শুরুতে প্রয়াত ছানু মিয়ার আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রয়াতের বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করেন শেডওয়েল মসজিদের ঈমাম মৌলানা খায়রুল ইসলাম।
বক্তারা ছানু মিয়াকে প্রগতির পক্ষের একজন সক্রিয় রাজপথ কর্মী আখ্যায়িত করে বলেন, সমাজের যেখানেই বৈষম্য ও অসংগতি দেখেছেন সেখানেই তিনি তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন ছানু মিয়া, ছিলেন পদ নির্লোভ একজন রাজনৈতিক কর্মী, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নিরবে কাজ করে গেছেন তিনি।
বক্তারা আরো বলেন, ছানু মিয়া শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনই নয়, একজন ক্রীড়া সংগঠক ও ব্রিটেনে বাংলা সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন। শাপলা ইয়ুথ ফোর্সের ব্যানারে বৃটেনে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনেও তার সক্রিয়তার ইতিহাস রয়েছে। ব্রিটেন ও বাংলাদেশের হাই প্রোফাইল মানুষের সঙ্গে ছানু মিয়ার ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো এমন মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, কিন্তু এই সম্পর্কের কোন অপব্যবহার কখনও করেননি তিনি।
গত ২২ নভেম্বর ঢাকায় আকষ্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ব্রিটেন ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরিচিত মূখ ছানু মিয়া। তার অকাল মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশের মন্ত্রী, এমপি এবং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শোক প্রকাশ করেন।