সাতটি প্রধান মুসলিম দেশের অভিবাসী ও ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার ওপর আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির বিচার বিভাগের মাধ্যমে ট্রাম্প এ আপিল করেন।
স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিলকারীদের মধ্যে ট্রাম্প ছাড়াও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী জন কেলি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রয়েছেন।
সাতটি প্রধান মুসলিম দেশের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্প যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, দেশটির আদালত সেটি স্থগিত করেন। এই আপিলের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রায় পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে সাতটি দেশের অভিবাসী ও ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ট্রাম্পের দেওয়া নির্বাহী আদেশ সাময়িক স্থগিত করেছেন কেন্দ্রীয় আদালত। এছাড়া দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগও ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে।
গত ২৭ জানুয়ারি পেন্টাগনে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী, অভিবাসী ও ভ্রমণকারী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এক নির্বাহী আদেশে সই করেন। ‘যুক্তরাষ্ট্রকে গোঁড়া ইসলামি সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রক্ষা করতে’ ট্রাম্প এই আদেশে সই করেছেন বলে জানান তিনি।
এই আদেশের আওতায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে সিরিয়ার শরণার্থী ও অভিবাসী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে যে কোনো ধরনের শরণার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে আগামী ৪ মাস। আর মুসলিম প্রধান সাতটি দেশের ভিজিটর বা দর্শনার্থী প্রবেশ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ৩ মাসের জন্য।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়- যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী প্রবেশ কর্মসূচি ৪ মাসের জন্য স্থগিত, বড় ধরনের পরিবর্তন ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিরিয়ার শরণার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ, ‘উদ্বেগজনক এলাকা’ সিরিয়া ও ইরাকের পাশাপাশি ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের কোনো ভ্রমণকারী প্রবেশে ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এমন নিষেধাজ্ঞায় খোদ আমেরিকানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জরালো প্রতিবাদ জানান। তবে ট্রাম্পের পক্ষেও কেউ কেউ সাফাই গেয়েছেন।
পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিষেধাজ্ঞার একদিন পরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আদালত। একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালত স্থানীয় সময় গত ২৮ জানুয়ারি রাতে এ স্থগিতাদেশ দেন।
প্রথমে আদালতের স্থগিতাদেশ তোয়াক্কা করেননি ট্রাম্প। পরে দেশি-বিদেশি চাপ ও তীব্র সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত তার দেওয়া নির্বাহী আদেশের পক্ষে আদালতে আপিল করলেন।