মাওলানা আবদুর রশিদ
ইসলামে মানবসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে ইসলামী শরিয়তে। অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গিয়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের জন্য দোয়া করতেন- ‘আজবিহিল বাছা রাব্বান-নাসি, ওয়াশফি আনতাশ শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিয়ায়ুকা-শিফায়ুন লা ইউগাদিরু সাকামান।’
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু মুসলমান নয়, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী অসুস্থ মানুষের পাশেও হাজির হয়েছেন সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মনোভাব নিয়ে। হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ইহুদি ছেলে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেবা করত। একদিন সে অসুস্থ হয়ে পড়ল। তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন। তিনি তার মাথার কাছে বসলেন। তারপর তাকে বললেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ কর। সে তার পিতার দিকে তাকাল। তার পিতা তার কাছেই ছিল। তখন তার পিতা বলল, তুমি আবু কাসেমের আনুগত্য কর। তখন ছেলেটি ইসলাম গ্রহণ করল। অতঃপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই কথা বলতে বলতে সেখান থেকে বের হলেন, ‘সমস্ত প্রশংসা সেই সত্তার, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’-বুখারি
অসুস্থ অবস্থায় একে অপরকে সেবা করা মুসলমানদের জন্য কর্তব্য বলে বিবেচিত। যারা এ কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হবেন কিয়ামতের ময়দানে তাদের জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। আল্লাহ নিজেই অসুস্থ বান্দার পক্ষ নিয়ে ফরিয়াদি হয়ে জিজ্ঞেস করবেন, ‘হে আদম সন্তান আমি অসুস্থ ছিলাম তুমি পরিচর্যা করনি।’-মুসলিম।
অসুস্থ মুমিনের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসংখ্য হাদিসে। হযরত আবু আসমা (রা.) বর্ণিত হাদিসে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তার কোনো অসুস্থ ভাইকে দেখতে যায়, সে জান্নাতের ফলমূলের মাঝে অবস্থান করবে।’ আল আদাবুল মুফরাদ
হযরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় পরিবারের কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তার গায়ে হাত রেখে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রভু! রোগ দূর কর, রোগ মুক্তিদান কর। তুমিই রোগ-মুক্তি দানকারী। তোমার রোগ-মুক্তি ছাড়া কোনো রোগ মুক্তি নেই। এমন রোগ-মুক্তি কোনো রোগ বাকি রাখে না।- বোখারি।
লেখক : ইসলামী গবেষক।